ঢাকা ০৫:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অপেক্ষমান ১৫,০১৯ জন পুল শিক্ষকদের স্থায়ী নিয়োগের দাবি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২৩:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ অক্টোবর ২০১৫
  • ৫৫০ বার

মানবেতর জীবন-যাপনকারী পুল শিক্ষকদের স্থায়ী নিয়োগের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজ। আজ ২৬ অক্টোবর ২০১৫ সমাজের পুল শাখার এক সভায় পুরানা পল্টনস্থ মুক্তি ভবনে মৈত্রী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ত্ব করেন শামীম রেজা। সভায় অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহীনুর আল-আমিন ও সাধারণ সম্পাদক মো. হালিমুজ্জামান। সভায় পুল শাখা নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোস্তাফিজুর রহমান (মুক্তা), মুনিরুজ্জামান, শাহ আলম, জোবায়দা কামাল (সুমি), সেলিনা খাতুন, রোকসানা আক্তার, মনির হোসেন, তাসিন আব্দুল্লাহ, শাফি আজাদ, শফিউল ইসলাম, সুলতানা নাসরিন ও বনানী আক্তার মামুন প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন পুল শিক্ষকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শূন্য পদে গত ০৪/০৮/২০১১ ইং তারিখে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে সহকারী শিক্ষক পদে আবেদন করে। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় চুড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয় মোট ২৭,৭২০ জন। এর মধ্যে ১৫,০১৯ জনকে অপেক্ষমান রেখে ১২,৭০১ জনকে সরাসরি নিয়োগ দেয়া হয়। উক্ত অপেক্ষমান শিক্ষকদেরকে সরকার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক স্বল্পতার জন্য যে সাময়িক শূন্য পদ সৃষ্টি হয়, যেমন- মাতৃত্বকালীন ছুটি, প্রশিক্ষণজনিত ছুটি, শিক্ষা লাভজনিত ছুটি ও অন্যান্য ছুটির বিপরীতে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রায় ২ বছর অপেক্ষায় রাখে। এরপর সরকার মনগড়াভাবে এক আজব নীতিমালা তৈরি করে। যার নাম দেন পুল শিক্ষক। আর এই পুল নামক যন্ত্রণাদায়ক নিয়োগ নীতিমালায় ১৫,০১৯জন শিক্ষক আজ ভুক্তভোগী।

নেতৃবৃন্দ বলেন পুল শিক্ষকরা অন্যান্য সহকারী শিক্ষকদের মত সমান দায়িত্ব পালন করলেও এই উচ্চ শিক্ষিতদের পুল শিক্ষক নাম দিয়ে একজন ৮ম শ্রেণি পাস দপ্তরী কাম প্রহরীর বেতন তো নয় বেতনের চাইতেও মাসিক সম্মানীও অনেক কম পান পুল শিক্ষকরা, যা সত্যিই অমানবিক এবং কষ্টের। বর্তমানে পুল শিক্ষকদের অনেকের চাকুরির বয়সও শেষ হয়ে গেছে। স্থায়ী নিয়োগ না হওয়ায় ১৫,০১৯ জন শিক্ষক আজ অত্যন্ত বেদনাহত ও মানসিক যন্ত্রনায় মানবেতর দিনাতিপাত করছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে পুল নামে কোনো কিছু উল্লেখ ছিল না। তারা সরাসরি শূন্য পদের বিপরীতে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় পাস করেছেন এবং এরকম একটা অপমানজনিত শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত থাকার কথা নয়।

নেতৃবৃন্দ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা সচিব এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিয়োজিত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সকলের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি যে অবিলম্বে এই সকল পুল শিক্ষকদের তারা যে শূন্য পদের জন্য আবেদন করেছিলো তাদের সেই শূন্য পদের বিপরীতে স্থায়ী নিয়োগ দেওয়ার জন্য। পুল শিক্ষকদের চাকুরি স্থায়ী করে ১৫,০১৯ টি পরিবারকে বাঁচানোর দাবি জানাই।
পুল শিক্ষকদের জন্য জারিকৃত নীতিমালার কয়েকটি শর্ত নিম্নে উল্লেখ্য করা হল :
১। পুল শিক্ষকদের মাসিক সম্মানী হবে সর্বসাকুল্যে ৬,০০০ টাকা।
২। সরকারী ছুটি ব্যতিত অন্য কোনো প্রকার ছুটি দাবি করতে পারবেন না পুল শিক্ষকগণ।
৩। কর্তব্যস্থলে অনুপস্থিত থাকিলে প্রতিদিনের জন্য ২০০ টাকা হারে কর্তন হবে।
৪। অসুস্থতা বা দুর্ঘটনাজনিত কারণে সর্বোচ্চ ৭ দিনের বিনা বেতনে/ সম্মানীতে / পারিশ্রমিকে ছুটি নিতে পারবেন।
৫। প্রতিবার নিয়োগের সময় ১৫০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে প্রণীত মুচলেকায় স্বাক্ষর দিয়ে যোগদান করতে হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

অপেক্ষমান ১৫,০১৯ জন পুল শিক্ষকদের স্থায়ী নিয়োগের দাবি

আপডেট টাইম : ১০:২৩:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ অক্টোবর ২০১৫

মানবেতর জীবন-যাপনকারী পুল শিক্ষকদের স্থায়ী নিয়োগের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজ। আজ ২৬ অক্টোবর ২০১৫ সমাজের পুল শাখার এক সভায় পুরানা পল্টনস্থ মুক্তি ভবনে মৈত্রী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ত্ব করেন শামীম রেজা। সভায় অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহীনুর আল-আমিন ও সাধারণ সম্পাদক মো. হালিমুজ্জামান। সভায় পুল শাখা নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোস্তাফিজুর রহমান (মুক্তা), মুনিরুজ্জামান, শাহ আলম, জোবায়দা কামাল (সুমি), সেলিনা খাতুন, রোকসানা আক্তার, মনির হোসেন, তাসিন আব্দুল্লাহ, শাফি আজাদ, শফিউল ইসলাম, সুলতানা নাসরিন ও বনানী আক্তার মামুন প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন পুল শিক্ষকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শূন্য পদে গত ০৪/০৮/২০১১ ইং তারিখে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে সহকারী শিক্ষক পদে আবেদন করে। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় চুড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয় মোট ২৭,৭২০ জন। এর মধ্যে ১৫,০১৯ জনকে অপেক্ষমান রেখে ১২,৭০১ জনকে সরাসরি নিয়োগ দেয়া হয়। উক্ত অপেক্ষমান শিক্ষকদেরকে সরকার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক স্বল্পতার জন্য যে সাময়িক শূন্য পদ সৃষ্টি হয়, যেমন- মাতৃত্বকালীন ছুটি, প্রশিক্ষণজনিত ছুটি, শিক্ষা লাভজনিত ছুটি ও অন্যান্য ছুটির বিপরীতে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রায় ২ বছর অপেক্ষায় রাখে। এরপর সরকার মনগড়াভাবে এক আজব নীতিমালা তৈরি করে। যার নাম দেন পুল শিক্ষক। আর এই পুল নামক যন্ত্রণাদায়ক নিয়োগ নীতিমালায় ১৫,০১৯জন শিক্ষক আজ ভুক্তভোগী।

নেতৃবৃন্দ বলেন পুল শিক্ষকরা অন্যান্য সহকারী শিক্ষকদের মত সমান দায়িত্ব পালন করলেও এই উচ্চ শিক্ষিতদের পুল শিক্ষক নাম দিয়ে একজন ৮ম শ্রেণি পাস দপ্তরী কাম প্রহরীর বেতন তো নয় বেতনের চাইতেও মাসিক সম্মানীও অনেক কম পান পুল শিক্ষকরা, যা সত্যিই অমানবিক এবং কষ্টের। বর্তমানে পুল শিক্ষকদের অনেকের চাকুরির বয়সও শেষ হয়ে গেছে। স্থায়ী নিয়োগ না হওয়ায় ১৫,০১৯ জন শিক্ষক আজ অত্যন্ত বেদনাহত ও মানসিক যন্ত্রনায় মানবেতর দিনাতিপাত করছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে পুল নামে কোনো কিছু উল্লেখ ছিল না। তারা সরাসরি শূন্য পদের বিপরীতে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় পাস করেছেন এবং এরকম একটা অপমানজনিত শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত থাকার কথা নয়।

নেতৃবৃন্দ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা সচিব এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিয়োজিত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সকলের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি যে অবিলম্বে এই সকল পুল শিক্ষকদের তারা যে শূন্য পদের জন্য আবেদন করেছিলো তাদের সেই শূন্য পদের বিপরীতে স্থায়ী নিয়োগ দেওয়ার জন্য। পুল শিক্ষকদের চাকুরি স্থায়ী করে ১৫,০১৯ টি পরিবারকে বাঁচানোর দাবি জানাই।
পুল শিক্ষকদের জন্য জারিকৃত নীতিমালার কয়েকটি শর্ত নিম্নে উল্লেখ্য করা হল :
১। পুল শিক্ষকদের মাসিক সম্মানী হবে সর্বসাকুল্যে ৬,০০০ টাকা।
২। সরকারী ছুটি ব্যতিত অন্য কোনো প্রকার ছুটি দাবি করতে পারবেন না পুল শিক্ষকগণ।
৩। কর্তব্যস্থলে অনুপস্থিত থাকিলে প্রতিদিনের জন্য ২০০ টাকা হারে কর্তন হবে।
৪। অসুস্থতা বা দুর্ঘটনাজনিত কারণে সর্বোচ্চ ৭ দিনের বিনা বেতনে/ সম্মানীতে / পারিশ্রমিকে ছুটি নিতে পারবেন।
৫। প্রতিবার নিয়োগের সময় ১৫০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে প্রণীত মুচলেকায় স্বাক্ষর দিয়ে যোগদান করতে হয়।