উচ্চতা ২৯ ইঞ্চি, স্বভাবে ছেলেমানুষ! কিন্তু এক জায়গায় হারিয়ে দেন ‘বড়দের

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  সব কাহিনির ধার ধারেন না বাশোরি লাল। মধ্যপ্রদেশের এক গ্রামের বাসিন্দা বাশোরিকে পিছন থেকে দেখলে কেউ ‘শিশু’ বলে মনে করতেই পারেন। কিন্তু সামনে থেকে দেখলে তাঁর পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সকে স্বীকার করতেই হয়।

আন্তর্জাতিক ও জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে এই মুহূর্তে বাশোরি সেলিব্রিটি। কারণ, বাশোরির উচ্চতা ২৯ ইঞ্চি, স্বভাবে ছেলেমানুষ। দাদা গোপী লালের সাক্ষ্য থেকে জানা যাচ্ছে, ৫ বছর বয়স পর্যন্ত বাশোরির বৃদ্ধি স্বাভাবিকই ছিল। তার পরে কোনও অচেনা অসুখে তাঁর বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়।

শ্রমজীবী এক গ্রামীণ পরিবারের পক্ষে কোনও চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি সেই সময়ে। ছোটবেলায় তাঁর চেহারার কারণে সমবয়সিরা খুবই
পিছনে লাগত বাশোরির। কিন্তু আজ খেলাটা একেবারেই ঘুরে গিয়েছে। বাশোরি তাঁর গ্রামের এক সম্মানিত সদস্য।

দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন তাঁকে দেখতে, তাঁর ছবি তুলতে। শুধু শারীরিক গঠন নয়, বাশোরির হাবভাব অনেকটাই শিশুসুলভ। গোপী লালের স্ত্রী, অর্থাৎ বাশোরির বউদি সতিয়া প্রায় সন্তানের মতো যত্ন করেন দেওরের। স্নান করানো থেকে শুরু করে কোলে করে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া— সবই বউদির জিম্মায়।

এই ‘অ-স্বাভাবিক’ ভাইটিকে নিয়ে গর্বিত গোপী লালও। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ দেখতে আসেন তাঁর ভাইকে। এটা তো কম কথা নয়! সতিয়াও জানিয়েছেন, বাশোরি অত্যন্ত খুশি মনের মানুষ। আর বাশোরি স্বয়ং? না, নিজেকে নিয়ে, নিজের চেহারা নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই তাঁর।

তথাকথিত স্বাভাবিক মানুষ যেখানে সারাদিন নিজেকে নিয়ে, নিজের দুর্বলতা নিয়েই নিজের মনে খুঁত খুঁত, ঘ্যান ঘ্যান করে চলে, বাশোরি সেখানে পরিতৃপ্ত তাঁর ২৯ ইঞ্চি উচ্চতা নিয়ে। নিজের চারপাশে ভাল সঙ্গ পেলে আর দিনে এক গ্লাস হুইস্কি পেলে আর কিছুই তাঁর লাগে না।

হুইস্কি বাশোরি প্রতি রাতেই খান। তাঁর মতে, এটা জীবনের প্রতি তাঁর সেলিব্রেশন আর এই জায়গাতেই হারিয়ে দেন ‘বড়দের’। অতৃপ্ত, অসন্তুষ্ট বিশ্বে একজন মানুষ তাঁর সামান্য উচ্চতা নিয়েও যে এমন তৃপ্তি আর আনন্দ নিয়ে বেঁচে থাকতে পারেন, তার প্রমাণ বাশোরি প্রতিদিনই দিয়ে চলেছেন তাঁর যাপন দিয়ে, তাঁর কথা এবং নীরবতা দিয়েও।-এবেলা

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর