হাওর বার্তা ডেস্কঃ আফ্রিকার দক্ষিণ-পূর্বঞ্চলীয় দেশ মালাবিতে রয়েছে নানা রকমের অদ্ভূত সব প্রথা। তবে সবচে অদ্ভূত প্রথাটি দেখা যায় মালাবির দক্ষিণাঞ্চলীয় গ্রামগুলোতে। বয়ঃসন্ধিক্ষণে পা রাখলেই এখানকার মেয়েদের একজন পুরুষের সঙ্গে যৌনমিলনে আবদ্ধ হতে হয়। বিনিময়ে আবার সেই পুরুষকে পরিশোধ করতে হয় নির্দিষ্ট অর্থ। ধর্ষণ তো নয়ই, এটা এখানকার গ্রামগুলোর এক ধরনের ঐতিহ্য, ধর্মীয় রেওয়াজ। তবে যেকোনো পুরুষের সঙ্গে নয়, এজন্য নির্দিষ্ট করা লোক আছে। স্থানীয় ভাষায় এদের বলা হয়, ‘হায়েনা’।
এসব হায়েনার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে যৌনতাবাহিত নানা রোগও। মালাবির দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা নাসানজে গিয়ে দেখা গেল এমনই একজন হায়েনা। তিন কক্ষবিশিষ্ট একটি বাড়ির উঠোনে বসে আছেন এরিক আনিভা। এই গ্রামের বিশিষ্ট হায়েনা তিনি। এলাকার কোনো মেয়ের প্রথমবার ঋতুস্রাব হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার সঙ্গে যৌনমিলনের জন্য ভাড়া করে নেয়া হয় তাকে। কোনো নারীর স্বামী মারা গেলেও মৃতদেহ সমাধিস্থ করার আগে ওই নারীকে একবার যৌনমিলন করতে হয় আনিভার সঙ্গে। এমনকি যৌনমিলনে ওই নারী গর্ভবতী হলেও।
সবচে আশ্চর্যজনক হচ্ছে, কোনো মেয়ের প্রথমবার মাসিক হওয়ার পর শিশু থেকে তার নারীত্বে উত্তরণের প্রমাণ হিসেবে পর পর তিনদিন যৌনমিলন করতে হয় হায়েনাদের সঙ্গে। কোনো মেয়ে এতে অস্বীকার করলে ধরে নেয়া হয়, ওই মেয়ের পরিবার বা গ্রামের জন্য বড় ধরনের কোনো রোগ অথবা বিপজ্জনক কিছু অপেক্ষা করছে।
তিনি জানান, তাদের এলাকায় তার মতো মোট ১০ জন হায়েনা আছে। প্রতিবার যৌনমিলনের জন্য তাদের চার থেকে সাত ডলারের মধ্যে প্রদান করা হয়। তবে শুধু যৌনমিলনটাই পুরো প্রক্রিয়া নয়। এটা একটা প্রক্রিয়ার শেষ ধাপ। প্রথমে মাঝবয়সী কিছু নারী সদ্য বয়োঃসন্ধি পেরোনো মেয়েদের একটি ক্যাম্পে নিয়ে যান।
তবে একজন হায়েনাকে অবশ্যই এইচআইভি’র মতো রোগ থেকে মুক্ত হতে হবে। তবে এ সত্ত্বেও মালাবির ওই এলাকাটি এইডসের মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। জাতিসংঘের হিসেব মতে, দেশটির প্রতি ১০ জনে একজন এইডসের জীবাণু বহন করছে। সবচেয়ে আশঙ্কার কথা হচ্ছে, আনিভা নিজেও একজন এইডস রোগী। সুতরাং তিনি এ পর্যন্ত যে ১০৪ জন নারীর সঙ্গে যৌনমিলন করেছেন তাদেরও এইডস ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপক শঙ্কা রয়েছে। আনিভাকে অবশ্য গত জুনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মালাবির প্রেসিডেন্ট পিটার মুথারিকার নির্দেশে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিবিসিতে তাকে নিয়ে একটি ফিচার প্রকাশিত হওয়ার পরই গ্রেপ্তার হন আনিভা।
প্রেসিডেন্টের নির্দেশে তখনই আনিভার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। বিবিসি জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহেই ওই মামলার রায় দেয়া হবে। আনিভা আদালতে স্বীকার করেছেন যে তিনি ১০৪ জন নারীর সঙ্গে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করেছেন।