অন্যের জীবন বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যুর মুখে পড়েন সোহেল

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুর্মিটোলা ফায়ার স্টেশনের ফায়ারম্যান সোহেল রানা। সুউচ্চ মইয়ের মাধ্যমে বনানীর এফআর টাওয়ারের আগুন নেভাতে ও আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু একপর্যায়ে তিনি ডান পায়ে আঘাত পান। এতে পায়ের হাড় কয়েক টুকরো হয়ে যায়। পা শরীরের সঙ্গে কোনো রকমে আটকে ছিল। পেটে চাপ লেগে নাড়িভুঁড়িও থেঁতলে যায়। তিনি এখন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন।

কুর্মিটোলা ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা জানান, গত বৃহস্পতিবার বনানীর এফআর টাওয়ারের আগুন নেভানোর কাজে রাজধানীর বিভিন্ন ফায়ার ইউনিটের কর্মীরা যোগ দেন। তাঁদের মধ্যে সোহেল রানাও ছিলেন। সুউচ্চ মই (লেডার) দিয়ে আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারকাজের একপর্যায়ে তাঁর শরীরে লাগানো নিরাপত্তা হুকটি মইয়ের সঙ্গে আটকে যায়। এতে গুরুতর আহত হন।

সোহেল আহত হওয়ার সময় এই প্রতিবেদক ঘটনাস্থলেই ছিলেন। দেখা যায়, মইয়ের সঙ্গে আটকে গিয়ে সোহেল বিপজ্জনকভাবে ঝুলছিলেন। একপর্যায়ে তিনি কোনোমতে এক পায়ে ভর দিয়ে মই থেকে নেমে আসেন। তখন তাঁর পা শরীর থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিল, প্রচুর রক্ত ঝরছিল। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয়।

সিএমএইচে সোহেলের শরীরে দুটি অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ সাংবাদিককে বলেন, সোহেল নিবিড় পরিচর্যায় আছেন। তাঁর অবস্থা উন্নতির দিকে।

সোহেল রানার বাড়ি কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলায়। বাবা নুরুল ইসলাম, মা হালিমা খাতুন। চার ভাই এক বোনের মধ্যে সোহেল দ্বিতীয়। তিনি ফায়ার সার্ভিসের ফায়ারম্যান পদে ২০১৫ সালে যোগ দেন। অবিবাহিত সোহেল থাকতেন কুর্মিটোলা ফায়ার স্টেশনেই।

সোহেলের ভগ্নিপতি জসীমউদ্দিন গতকাল শনিবার সাংবাদিককে বলেন, অন্যের জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিজেই মৃত্যুর মুখে পড়েন সোহেল। বিভিন্ন তলায় আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধার করতে গিয়েছিলেন। হাসপাতালের আইসিইউর সামনে সোহেলের মা–ভাইয়েরা তাঁর চোখ খুলে তাকানোর অপেক্ষায়। সোহেলের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন জসীমউদ্দিন।

সূত্র- প্রথম আলো

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর