চার দিন পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চার দিন পর অনশন ভাঙলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ডাকসু নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত করা হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেওয়ার পর শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তারা অনশন ভাঙেন।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ লাচ্ছি ও পানি পান করিয়ে তাদের অনশন ভাঙান। এ সময় তিনি স্বীকার করেন, ডাকসু নির্বাচনে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল।

জানা গেছে, উপ-উপাচার্য রাজু ভাস্কর্যের সামনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের কাছে রাত ১১টার দিকে উপস্থিত হন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল, ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুর, জিএস গোলাম রাব্বানী, এজিএস সাদ্দাম হোসাইন প্রমুখ।

ডাকসু নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে অনশনে বসেন। এরপর তাদের সঙ্গে যোগ দেন আরও দুই শিক্ষার্থী। পরের দিন বুধবার তাদের সঙ্গে যোগ দেন আরও একজন। চার দিন ধরে অনশনে বসলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কেউ সেখানে না যাওয়ায় ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছিল।

অনশনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে অধ্যাপক সামাদ বলেন, প্রশাসন থেকে আমাকে পাঠানো হয়েছে। উপাচার্য আমাকে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছেন তোমাদের কথা শোনার জন্য। আমি চাইলেই তো আসতে পারি না। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে আমাকে আসতে হয়েছে। ডাকসু নির্বাচন ২৮ বছর পর হয়েছে। ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে। তবুও একটা শুভসূচনা হোক।

তিনি বলেন, তোমরা লিখিতভাবে অভিযোগ দাও। তোমরা তো আমাদের ছেলেমেয়ের মতো। তোমরা লিখিতভাবে সবকিছু জানাও। আমাদের সঙ্গে বসো। আমরা তোমাদের সব অভিযোগ শুনব।’ এ সময় আগামী ১৮ মার্চ সকাল ১০টায় সবাই আলোচনায় বসবেন বলে তিনি ঘোষণা দেন।

চার দিন ধরে শিক্ষার্থীরা অনশন করলেও প্রশাসনের কেউ কেন তাদের দেখতে এলো না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক সামাদ বলেন, শুনেছি প্রক্টর এসেছিলেন।

প্রক্টর আসেননি জানালে তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যথিত, দুঃখিত। সমস্যা তো হয়েছে, আমরা তদন্ত করছি। ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন হয়েছে। ছাত্ররা ভোট দিতে অভ্যস্ত না, শিক্ষকরা দায়িত্ব পালনে অভ্যস্ত না। কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল।

অধ্যাপক মাকসুদ কামাল আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষার্থীদের কথা শোনার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, তোমাদের সকল কথা আমরা শুনেছি। এ বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের সকলের। তোমরা আসো। একসঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলি। আমরা তোমাদের কথা শুনব। তোমাদের সঙ্গে আছি। সবকিছুর তদন্ত রিপোর্ট হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যত ধরনের সহযোগিতা করা দরকার আমরা করব। আমরা চাই না বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হোক।

ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, এ নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে, যা সবাই জানি। এজন্য কুয়েত মৈত্রী হলে হলের প্রাধ্যক্ষকে অপসারণ করা হয়েছে আর রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষকে অপসারণ করার দাবির ব্যাপারে আমিও একমত। আমি আপনাদের সঙ্গে আছি এবং আগামীতে থাকব। স্যাররা সমস্যাগুলো শুনেছেন। দেখেন তারা কোনো পদক্ষেপ নেন কি না।

এজিএস সাদ্দাম হোসেন বলেন, নির্বাচনে এমন কিছু হয়নি যাতে ফলাফল পাল্টে গেছে। তিনি বলেন, সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। আমরা চাই ডাকসু একটি ক্যালেন্ডার ইভেন্টে পরিণত হোক।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর