হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অভিযোগ করেছে ভারত। মঙ্গলবার ও বুধবার দুই দেশের হামলা পাল্টা হামলার সময় এ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে যৌথ সংবাদ ব্রিফিংয়ে ভারত এ অভিযোগ করে। দেশটির সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে।
ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তান সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এ সময় তারা পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানে ব্যবহৃত একটি ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ হাজির করে। এগুলো ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে বলে তাদের দাবি। এ ভাঙা অংশ ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজোরিতে পড়েছিল।
যে ক্ষেপণাস্ত্রের প্রমাণ তারা হাজির করে তা মূলত অ্যাডভান্সড মিডিয়াম-রেঞ্জ এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল বা অ্যামর্যাম নামে পরিচিত। এ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো শুধু জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে এমন শর্তে তা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পেয়েছিল পাকিস্তান। এ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ভারতের মিগ-২১ বিসন যুদ্ধজাহাজটিকে ভূপাতিত করেছে তারা। এ ঘটনায় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়েন ভারতের যুদ্ধবিমানের পাইলট অভিনন্দন।
এয়ার ভাইস মার্শাল আরজিকে কাপুর দাবি করেন, মানুষের উপস্থিতি আছে- এমন স্থাপনায় তারা হামলা করেনি বলে যে বক্তব্য দিয়েছে, তা মিথ্যা। এফ-১৬ ব্যবহার করা হয়নি- এমন দাবিও তারা করেছে। কিন্তু তাদের এ দাবির বিরুদ্ধে শক্ত প্রমাণ আছে। পাকিস্তানের আর কোনো বিমানে অ্যামর্যাম ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করা যায়। এফ-১৬ এর ইলেকট্রনিক নমুনা দেখে তা ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়।
আরজিকে কাপুর বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণরেখায় (লাইন অব কন্ট্রোল) পড়ে যাওয়ার পর পাকিস্তানের হেফাজতে থাকা ভারতের উইং কমান্ডার পাইলট অভিনন্দনকে ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণায় আমরা খুশি। আমরা তাঁকে ফিরে পাব জেনে অত্যন্ত খুশি। আমরা এটাকে শুধু জেনেভা কনভেনশনের চুক্তি বাস্তবায়ন হিসেবেই দেখছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যা করতে চেয়েছিলাম, তা করেছি। দেখানোর জন্য আমাদের কাছে প্রমাণও আছে। এসব দেখানোর সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর নির্ভরশীল।’
এর আগে ভারতীয় পাইলটকে শুক্রবার মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে যৌথ সেশনে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে যৌথ অধিবেশন আহ্বান করা হয়। সে অধিবেশনেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আটক ভারতীয় পাইলটকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দিলেন।