ঢাকা ০৬:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হয়নি শঙ্কিত কৃষকরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:০৯:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
  • ৩৩১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরের বাঁধের কাজ শেষের মেয়াদ আর মাত্র ৮ দিন বাকি। কিন্তু অধিকাংশ ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পের ক্লোজারের মাটি ভরাটের কাজ এখনও শেষ না হওয়ায় হাওর পাড়ের কৃষকদের মধ্যে শংকা দেখা দিয়েছে। অথচ পাউবোর নীতিমালা অনুযায়ী হাওরের বোরো ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ সময় ২৮শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। পানি উন্নয়ন বোর্ড এ পর্যন্ত ৬০ ভাগ বাঁধের কাজ হয়েছে বলে দাবি করলেও হাওর পাড়ের কৃষকরা বলেছেন, কাজ হয়েছে মাত্র ৪০ ভাগ। এইদিকে শনিবার সকাল থেকে বৈরী আবহাওয়া ও রাতে ব্যাপক শিলা বৃষ্টি হয়েছে।

বৃষ্টিপাত শুরু হলে ক্লোজারগুলোর কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। একইসাথে নির্মাণাধীন বাঁধের মাটি কমপেকশন (দুরমুজ) না দেয়ায় বাঁধগুলো যে কোন সময়ে ধসে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা। শনিবার হাওরে গিয়ে দেখা যায়, তাহিরপুরে বৃহৎ তিনটি হাওরের ৯টি ক্লোজার বাঁধ সহ ছোট বড় অনেক বাঁধেই এখনও প্যালাসাইটিংয়ের কাজ শেষ হয়নি। দু-একটি ক্লোজার বাঁধে নাম মাত্র বস্তা-বাঁশ দিয়ে কাজ শুরু হলেও বাঁধে জিওটেক্সটাইল ব্যবহার না করায় হাওরের গুরুত্বপূর্ণ বাঁধগুলো ঝুঁকিতেই রয়েছে বলে মনে করেন কৃষকরা। জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলায় ছোট বড় ২৩টি বোর ফসলি হাওর রয়েছে। এর মধ্যে শনি, মাটিয়ান ও মহালিয়া বৃহৎ বোর ফসলি হাওর।

উপজেলার ২৩টি হাওরে ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বোর ধান চাষাবাদ হলেও এ তিন হাওরে বোর ধান চাষাবাদ হয় প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর। আর এ তিনটি হাওরে ৯টি গুরুত্বপূর্ণ ক্লোজার বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে শনির হাওরে রয়েছে সাহেব নগর। মাটিয়ান হাওরে রয়েছে মেশিন বাড়ি, আলম খালী, বনুয়া, পাঁচনালিয়া, জালহাটি, কাউকান্দি বাজার সংলগ্ন ক্লোজার বাঁধ সহ ৫টি ক্লোজার বাঁধ। অপরদিকে মহালিয়া হাওরে রয়েছে কালিবাড়ি ও গুরমা ক্লোজার বাঁধসহ ২ টি ক্লোজার বাঁধ। এসব বাঁধে কোনটির প্রকল্প কর্মকতারা বাঁধে সামান্য বাঁশ-বস্তা দিয়ে প্যালাসাইটিং এর কাজ শুরু করেছেন।

এখনও কোন একটি বাঁধের কাজ পরিপূর্ণ ভাবে শেষ করতে পারেননি কোন পিআইসিরা। এভাবে ধীর গতিতে বাঁধের কাজ করলে আগামী ১১ দিনের মধ্যে প্রকল্প পিআইসিরা বাঁধে কাজ শেষ করতে পারবে কিনা এই নিয়ে কৃষকদের মধ্যে শংকা দেখা দিয়েছে। হাওর পাড়ের লোকজন বলেছেন, ইতিমধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে, দ্রুত বাঁধের কাজ শেষ না করতে পারলে বাধঁগুলো ঠিকানো যাবে না। মাটিয়ান হাওর উপ-প্রকল্পের বনুয়া (চিলান তাহিরপুর) ক্লোজার বাঁধ প্রকল্প কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, প্যালাসাইটিং এর কাজ এখনও শেষ করতে পারিনি, আরও কয়েক দিন লাগবে।

মাটিয়ান হাওর উপ-প্রকল্প মেশিন বাড়ির ক্লোজার বাঁধ ৬৩নং প্রকল্প কমিটির সদস্য সচিব সাঞ্জব উস্তার বলেন, আমরা বাঁশ-বস্তা দিয়ে কাজ শুরু করেছি। আমাদের বাঁধে জিওটেক্সটাইল ধরা আছে। আপাতত প্যালাসাইটিং এর কাজ করছি। পানি উন্ন্‌য়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলীর সাথে আলাপ করে জিওটেক্সটাইল স্থাপন করবো।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পওর শাখা -১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ও বাঁধ নির্মাণ বাস্তবায়ন ও মনিটরিং জেলা কমিটির সদস্য সচিব আবু বকর সিদ্দিক ভূঁইয়া জানান, রোববার পর্যন্ত জেলার সার্বিক ভাবে ৬০ ভাগ কাজ হয়েছে। বাঁধ ও ক্লোজারের কাজ চলমান রয়েছে। সকল পিআইসিদের দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য তাগিদ দেয়া হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হয়নি শঙ্কিত কৃষকরা

আপডেট টাইম : ০৬:০৯:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরের বাঁধের কাজ শেষের মেয়াদ আর মাত্র ৮ দিন বাকি। কিন্তু অধিকাংশ ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পের ক্লোজারের মাটি ভরাটের কাজ এখনও শেষ না হওয়ায় হাওর পাড়ের কৃষকদের মধ্যে শংকা দেখা দিয়েছে। অথচ পাউবোর নীতিমালা অনুযায়ী হাওরের বোরো ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ সময় ২৮শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। পানি উন্নয়ন বোর্ড এ পর্যন্ত ৬০ ভাগ বাঁধের কাজ হয়েছে বলে দাবি করলেও হাওর পাড়ের কৃষকরা বলেছেন, কাজ হয়েছে মাত্র ৪০ ভাগ। এইদিকে শনিবার সকাল থেকে বৈরী আবহাওয়া ও রাতে ব্যাপক শিলা বৃষ্টি হয়েছে।

বৃষ্টিপাত শুরু হলে ক্লোজারগুলোর কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। একইসাথে নির্মাণাধীন বাঁধের মাটি কমপেকশন (দুরমুজ) না দেয়ায় বাঁধগুলো যে কোন সময়ে ধসে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা। শনিবার হাওরে গিয়ে দেখা যায়, তাহিরপুরে বৃহৎ তিনটি হাওরের ৯টি ক্লোজার বাঁধ সহ ছোট বড় অনেক বাঁধেই এখনও প্যালাসাইটিংয়ের কাজ শেষ হয়নি। দু-একটি ক্লোজার বাঁধে নাম মাত্র বস্তা-বাঁশ দিয়ে কাজ শুরু হলেও বাঁধে জিওটেক্সটাইল ব্যবহার না করায় হাওরের গুরুত্বপূর্ণ বাঁধগুলো ঝুঁকিতেই রয়েছে বলে মনে করেন কৃষকরা। জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলায় ছোট বড় ২৩টি বোর ফসলি হাওর রয়েছে। এর মধ্যে শনি, মাটিয়ান ও মহালিয়া বৃহৎ বোর ফসলি হাওর।

উপজেলার ২৩টি হাওরে ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বোর ধান চাষাবাদ হলেও এ তিন হাওরে বোর ধান চাষাবাদ হয় প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর। আর এ তিনটি হাওরে ৯টি গুরুত্বপূর্ণ ক্লোজার বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে শনির হাওরে রয়েছে সাহেব নগর। মাটিয়ান হাওরে রয়েছে মেশিন বাড়ি, আলম খালী, বনুয়া, পাঁচনালিয়া, জালহাটি, কাউকান্দি বাজার সংলগ্ন ক্লোজার বাঁধ সহ ৫টি ক্লোজার বাঁধ। অপরদিকে মহালিয়া হাওরে রয়েছে কালিবাড়ি ও গুরমা ক্লোজার বাঁধসহ ২ টি ক্লোজার বাঁধ। এসব বাঁধে কোনটির প্রকল্প কর্মকতারা বাঁধে সামান্য বাঁশ-বস্তা দিয়ে প্যালাসাইটিং এর কাজ শুরু করেছেন।

এখনও কোন একটি বাঁধের কাজ পরিপূর্ণ ভাবে শেষ করতে পারেননি কোন পিআইসিরা। এভাবে ধীর গতিতে বাঁধের কাজ করলে আগামী ১১ দিনের মধ্যে প্রকল্প পিআইসিরা বাঁধে কাজ শেষ করতে পারবে কিনা এই নিয়ে কৃষকদের মধ্যে শংকা দেখা দিয়েছে। হাওর পাড়ের লোকজন বলেছেন, ইতিমধ্যে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে, দ্রুত বাঁধের কাজ শেষ না করতে পারলে বাধঁগুলো ঠিকানো যাবে না। মাটিয়ান হাওর উপ-প্রকল্পের বনুয়া (চিলান তাহিরপুর) ক্লোজার বাঁধ প্রকল্প কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, প্যালাসাইটিং এর কাজ এখনও শেষ করতে পারিনি, আরও কয়েক দিন লাগবে।

মাটিয়ান হাওর উপ-প্রকল্প মেশিন বাড়ির ক্লোজার বাঁধ ৬৩নং প্রকল্প কমিটির সদস্য সচিব সাঞ্জব উস্তার বলেন, আমরা বাঁশ-বস্তা দিয়ে কাজ শুরু করেছি। আমাদের বাঁধে জিওটেক্সটাইল ধরা আছে। আপাতত প্যালাসাইটিং এর কাজ করছি। পানি উন্ন্‌য়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলীর সাথে আলাপ করে জিওটেক্সটাইল স্থাপন করবো।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পওর শাখা -১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ও বাঁধ নির্মাণ বাস্তবায়ন ও মনিটরিং জেলা কমিটির সদস্য সচিব আবু বকর সিদ্দিক ভূঁইয়া জানান, রোববার পর্যন্ত জেলার সার্বিক ভাবে ৬০ ভাগ কাজ হয়েছে। বাঁধ ও ক্লোজারের কাজ চলমান রয়েছে। সকল পিআইসিদের দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য তাগিদ দেয়া হয়েছে।