আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়ের ‘বিজয় উৎসব’ আজ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়ের ‘বিজয় উৎসব’ আজ। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ দুপুর আড়াইটায় শুরু হওয়া এ বিজয় সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজই তার হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে ‘বিশেষ স্মারক’। সেই সঙ্গে তাকে নতুন উপাধিতেও ভূষিত করতে পারেন দলের নেতাকর্মীরা।

এদিকে ক্ষমতাসীন দলটির এই উৎসব ঘিরে ঢাকার কয়েকটি সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। পাশাপাশি ওই কর্মসূচিতে যোগ দিতে ইচ্ছুক নেতাকর্মীদের জন্যও অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথ ঠিক করে দিয়েছেন তারা।

ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আজকের বিজয় উৎসব চলার সময় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের কয়েকটি সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবন পর্যন্ত সড়কে লোকজনের চলাচল বন্ধ থাকবে। উদ্যানের চার পাশের সড়কে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এছাড়া ভোর থেকে অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাংলামটর, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, শাহবাগ, কাঁটাবন, নীলক্ষেত, পলাশী, বকশীবাজার, চাঁনখারপুল, গোলাপ শাহ মাজার, জিরো পয়েন্ট, পল্টন, কাকরাইল চার্চ, অফিসার্স ক্লাব, মিন্টো রোড ক্রসিং থেকে গাড়ি বিকল্প পথে (ডাইভারশন) পাঠানোর প্রয়োজন পড়তে পারে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

অনুষ্ঠানে আগতদের কোনো ধরনের হাতব্যাগ, ট্রলিব্যাগ, দাহ্য পদার্থ বা ধারালো কোনো বস্তু কাছে না রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। তাদের কয়েকটি রুট মেনে অনুষ্ঠানে আসার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা বলছেন, একাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর নেতাকর্মীদের আনন্দ মিছিলসহ কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি না করার আহ্বান জানানো হয়েছিল দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে। এবার বিজয় সমাবেশ করে সেই বিজয় উদযাপন করবে এক দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা দলটি।

বিজয় সমাবেশকে সফল করতে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বর্ধিত সভাও হয়েছে। ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোতেও বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঢাকা জেলা ও পার্শ্ববর্তী গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, দলীয় সংসদ সদস্য, সিটি মেয়র, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা, থানা ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রদের নিয়েও যৌথসভা করেছে দলটি।

এছাড়া দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা এবং ঢাকা ও এর আশপাশের জেলার নেতা এবং দলীয় এমপিদের যৌথ সভা হয়েছে। ঢাকার ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটিগুলোও কর্মিসভা করে নিয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডের নেতারাও কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পেয়ে গেছেন। নিজেরাও প্রস্তুতি নিচ্ছে বিজয় সমাবেশকে উৎসবমুখর করার।

ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলু বলেন, বিজয় সমাবেশ সফল করতে আমরা প্রস্তুত। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পৌঁছে গেছে আমাদের কাছে। আমাদের নেতাকর্মীরা বাদ্যযন্ত্র সহকারে আনন্দঘন পরিবেশে মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। আমাদের লক্ষ্য বিজয় সমাবেশকে জনসমুদ্রে পরিণত করা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, আশুলিয়া ও মুন্সীগঞ্জের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীকে বিজয় সমাবেশে নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে আওয়ামী লীগের। বাস, ট্রাক ও রেলপথে নেতাকর্মী ঢাকায় এসে বর্ণিল মিছিল সহকারে সোহরাওয়ার্দী ময়দানে সমবেত হবেন। ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের দলীয় এমপিরা মিছিল সহকারে মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণকারী সব শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চান ক্ষমতাসীনরা।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, আমরা সবাইকে নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে বিজয় সমাবেশ সফল করব।

জনসমাবেশকে ঘিরে কিছুটা জনভোগান্তির সৃষ্টি হতে পারে জানিয়ে আগাম দুঃখ প্রকাশ করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, উৎসবমুখরভাবে সমাবেশে উপস্থিত হবেন। এক সাইড ফাঁকা রাখবেন। রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে মহাবিজয়ের মহাদাপট দেখাচ্ছেন এমন যেন না হয়। সহিষ্ণু হতে হবে। বড় বিজয়ের সঙ্গে এটাও বড় দায়িত্ব।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর