হাওর বার্তা ডেস্কঃ আবারো অশান্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। গত ৪ জানুয়ারি আরাকান আর্মি’র হামলায় ১৩ পুলিশ সদস্য নিহতের পর সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তা ঘাঁটি ও বাঙ্কার বসিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে বাড়ানো হয়েছে সেনা সংখ্যাও। এসব অভিযোগ করেছেন আরাকান আর্মির নেতা মেজর জেনারেল টান মিয়াত নেইং।
এদিকে আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূন্য রেখার ১৫০ গজের মধ্যে তমব্রু খালে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছে মিয়ানমার। ফলে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
আরকান আর্মির নেতা টান মিয়াত নেইংয়ের বরাত দিয়ে মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাওয়াদী’র খবরে বলা হয়েছে, সরকারি সেনারা আকাশ ও সড়ক পথে রাখাইনে আসছে। উত্তর রাখাইনে সেনারা বেসামরিক নাগরিকদের গণহারে গ্রেফতার করছে এবং গ্রামগুলোতে মর্টার ছুঁড়ছে। একইসঙ্গে সেনারা যুদ্ধক্ষেত্রে গ্রামবাসীদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। বিদ্রোহীদের ওপর হামলায় মিয়ানমার সেনারা হেলিকপ্টার ব্যবহার করেছে। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী ‘ফোর কাটস’ নীতি অবলম্বন করছে।
এদিকে রাখাইনে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের বিষয়ে সরকারের মুখপাত্র বলেছেন, প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে হামলার এলাকায় মোতায়েনকৃত সেনাদের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রয়োজনে সামরিক হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে। সেনাবাহিনী এ সব নির্দেশ পালন করছে এবং আরাকান আর্মির বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে।
রাখাইনে সশস্ত্র বৌদ্ধ সংগঠন আরাকান আর্মি’র সঙ্গে সরকারি বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে আটকে থাকা হাজার হাজার রোহিঙ্গা। দুই পক্ষের সংঘর্ষে আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূন্য রেখার ১৫০ গজের মধ্যে তমব্রু খালে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছে মিয়ানমার। ফলে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। বিশেষ করে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে আটকা পড়া কয়েক হাজার রোহিঙ্গা। ফলে নতুন করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও’কে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট মহাপরিচালক মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেন। সেখানে রাষ্ট্রদূত উ লুইনের কাছে সীমান্তে শূন্য রেখার কাছে মিয়ানমারের স্থাপনা নির্মাণের কারণ জানতে চাওয়া হয়। একইসঙ্গে নেপিদোর কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা চেয়ে ঢাকা একটি কূটনৈতিক চিঠি দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।