হাওর বার্তা ডেস্কঃ ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন মেয়াদে কাজ শুরু করলেন। আজ আগারগাঁওস্থ আইসিটি টাওয়ারে নিজ নিজ দপ্তরে কাজ শুরু করেছেন তারা। সকালে কার্যালয়ে এলে আইসিটি বিভাগের সচিব ও এর আওতাধীন সংস্থা/দপ্তরের প্রধানরা ফুল দিয়ে তাদেরকে বরণ করে নেন। এরপর বিভাগের কনফারেন্স রুমে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সকলে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
আইসিটি বিভাগের সচিব জুয়েনা আজিজ এর সভাপতিত্বে আয়োজিত সংবর্ধনা ও শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘সরকারের এই মেয়াদে আমাদের সকল লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। অন্য সব মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের মন্ত্রণালয়ের অনেক কাজ সংশ্লিষ্ট রয়েছে। পুরো দেশ এবং সরকারকে ডিজিটাল বানানোর দায়িত্ব আমাদেরই।’
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি বলেন, ‘জনগণ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের ওপর যে আস্থা রেখেছেন, তার প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিটি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আমাদেরকে কাঁধে কাঁধ রেখে কাজ করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সচিব জুয়েনা আজিজ বলেন, ‘আমরা সৌভাগ্যবান যে আগের দুজন মন্ত্রীকেই আমাদের মাঝে পেয়েছি। এতে করে আমাদের কাজ আরো সহজ হয়ে গেলো। আজ প্রচণ্ড জ্যাম উপেক্ষা করে প্রতিমন্ত্রী যে বাইকে চড়ে অফিসে এসেছেন, তা থেকেই কী গতিতে আমাদেরকে কাজ করতে হবে তা বোঝা যায়।’ অনুষ্ঠানে আইসিটি বিভাগের চারটি সংস্থা ও দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গতকাল সোমবার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে পুনরায় শপথ নিয়েছেন মোস্তাফা জব্বার; একই সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী হিসেবেও জুনাইদ আহমেদ পলক বহাল আছেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গভবনের দরবার হলে তাদেরকে শপথবাক্য পাঠ করান।
মোস্তাফা জব্বার টেকনোক্র্যাট কোটায় দ্বিতীয় দফায় একই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হলেন। আর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের গতবারের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তৃতীয়বারের মতো নাটোর-৩ (সিংড়া) আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও ব্যবসায় সংগঠন নেতা, ‘বিজয় বাংলা’র রূপকার মোস্তাফা জব্বার ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে মন্ত্রিসভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। ছাত্রজীবনে তিনি রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ, সাহিত্য চর্চা, সাংবাদিকতা, নাট্য আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তার লেখা বাংলাদেশের প্রথম গণনাট্য ‘এক নদী রক্ত’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিক্ষক কেন্দ্রে মঞ্চস্থ হয়। স্বাধীনতার আগে তিনি সাপ্তাহিক জনতা পত্রিকায় লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৮৮ সালে বাংলা কিবোর্ড ‘বিজয়’ প্রকাশ করে তিনি ডিজিটাল দুনিয়ায় নন্দিত পুরুষ হয়ে রয়েছেন।
অন্যদিকে ব্যক্তিজীবনে পলক একজন আইনজীবী এবং রাজনীতিবিদ। তিনি ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলা থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচিত বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য। ২০১৬ সালের মার্চে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম জুনাইদ আহ্মেদ পলক-কে ‘ইয়াং গ্লোবাল লিডার’ হিসেবে মনোনীত করে। ডিজিটাল গভর্নমেন্টে বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের মধ্যে পলক একজন।
তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে উদ্ভাবন ও অবকাঠামো উন্নয়ন, তরুণ নেতা তৈরি এবং এ খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় ওয়ার্ল্ড এইচআরডি কংগ্রেসের ‘আইসিটি লিডার অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার পান জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বিদায়ী মন্ত্রীপরিষদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনে মহাজোট প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। তিনি ভোট পেয়েছেন ২ লাখ ৩০ হাজার ২৯৬ ভোট, আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীকে দাউদ রহমান পান ৮ হাজার ৫৯৪ ভোট।