ঝালকাঠিতে সাপে উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের দুই গ্রামে গত ১৭ দিনে ২৯ জনকে সাপে কেটেছে। এর মধ্যে চার জন মারা গেছে। সাপ আতঙ্কে দিন কাটাছে দুই গ্রামের মানুষ। প্রতি রাতে দুই থেকে তিন জনকে সাপে কাটছে। বুধবার রাতেও ছয় জনকে সাপে কেটেছে। এদিকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসার কোন ব্যাবস্থা না থাকায় ঝাড় ফুক দিয়ে নামানো হচ্ছে সাপের বিষ।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, দক্ষিন কিস্তাকঠি গ্রামের রুবেল হোসেন ঢাকায় চাকুরি করতো। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসে সাপের কামড়ে মারা যায়। এরপরে রিক্সা চালক আলতাফ হোসেনকে সাপে কাটে। এর পরে মারা যায় তিনিও। গত ১৭ দিনে কমপক্ষে ২৯ জনে সাপে কেটেছে। এরকম করে তিন জন সাপের কামড়ে মারা গেছে। সাপ আতঙ্কে না ঘুমিয়ে রাত কাটাচ্ছে অনেকে। আবার কেউ কেউ পালাক্রমে পাহাড়াও দিচ্ছে। কেউ আবার রাত হলে অন্য স্থানে চলে যাচ্ছে। স্থানীয় ভাবে বালি পড়া ও গর্ত খুঁচে সাপ বের করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে গ্রামবাসী।
এদিকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসার ব্যাবস্থা না থাকায় স্থানীয় ভাবে ঝাড় ফুক দিয়েই চলছে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসা। আর এতে ভাল না হলে বরিশাল নিয়ে দেয়া হয় চিকিৎসা। বরিশাল যেতে যেতে অনেকে বেশী অসুস্থ হয়ে পরে এর মধ্যে মারা যায় কেউ কেউ। নদীতিরবর্তী দক্ষিন কিস্তাকাঠি ও সাচিলাপুর, আইলাকাঠি, বাদুরতলার গ্রামের মানুষের মধ্যে সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে। সাপে কাটা রোগী পিয়ারা বেগম (৪০) বলেন, আমি ভাত রান্না করছিলাম। চুলায় জ্বালানি কাঠ দেয়ার সময় আমাকে সাপে কাটে। পরে গারুলী (ওঝা ) এসে ঝাড় দিয়ে বিষ নামায়। আমরা এখন সাপের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মনির হোসেন বলেন, ঝালকাঠিতে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার ব্যাবস্থা করার পাশাপাশি এলাকার সাপ নিধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণের দাবী জানান তিনি। ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. আবদুর রহিম বলেন, ‘সাপে কামড়ের ভ্যাকসিন সদর হাসপাতালে রয়েছে তবে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ না থাকায় সাপে কাটা রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। আমাদের এখানে এক জন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ দরকার।’