হাওর বার্তা ডেস্কঃ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) শোকজের জবাব দিয়েছেন ৬ রিটার্নিং কর্মকর্তা। সোমবার তারা নির্বাচন কমিশনে (ইসি) লিখিত জবাব দেন। এতে যথাসময়ে প্রার্থীদের উপস্থিত না হওয়া এবং যথাযথভাবে মনোনয়ননপত্র দাখিল না করার কথা উল্লেখ করেছেন।
এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে আগ্রহী সাত প্রার্থী ইসিতে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তাদের মনোনয়নপত্র জমা না নেয়ার অভিযোগ করেন। পরে ইসি এসব কর্মকর্তাকে শোকজ করে এবং সোমবারের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলে।
এই ছয় রিটার্নিং কর্মকর্তা হলেন, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী, রংপুর, সাতক্ষীরা ও টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক (ডিসি)।
জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন মোহাম্মদ কাজী জাহাঙ্গীর। তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার কাছে অভিযোগ করেন, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন গত ২৮ নভেম্বর বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলেও তার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হয়নি।
ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দিতে বলে ইসি। জবাবে যথাযথভাবে মনোনয়ন দাখিল হয়নি বলে তিনি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন।
ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের বিরুদ্ধে ঢাকা-৯ আসনের মির্জা আব্বাস ও ঢাকা-১৬ আসনের সাদাকাত খাঁন ফাক্কু তাদের মনোনয়নপত্র জমা না নেয়ার অভিযোগ করেন।
এ ঘটনায় কমিশনের চাওয়া প্রতিবেদনের জবাবে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কমকর্তা জানান, বিকেল ৫টা পর্যন্ত সবার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। এরপরে যারা এসেছেন, তাদেরটি গ্রহণ করা হয়নি।
নংরসিংদীর রিটার্নিং কর্মকতার বিরুদ্ধে নরসিংদী-৩ আসনে মনোনয়নপত্র গ্রহণে অনীহা প্রকাশের অভিযোগ করেন মো. আব্দুল লতিফ।
একইভাবে রংপুর-৫ আসনের প্রার্থী গোলাম রব্বানী রংপুর জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে, সাতক্ষীরা-৩ আসনের প্রার্থী হতে ইচ্ছুক আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহ সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে এবং টাঙ্গাইল-৮ আসনের মো. রেজাউল করিম টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র গ্রহণে অনীহার বিষয়টি তুলে ধরে ইসিতে অভিযোগ করেন।
সংশ্লিষ্ট এসব রিটার্নিং কর্মকর্তারাও আগ্রহী প্রার্থীরা যথাসময়ে উপস্থিত হননি এবং যথাযথভাবে মনোনয়ন দাখিল না করার বিষয়টি তুলে ধরে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিব মো. আব্দুল হালিম খান সাংবাদিককে বলেন, ‘অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিবেদন চাওয়া হয়। তারা জবাবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সঠিক সময়ে প্রার্থীদের উপস্থিত না হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। আজকে কমিশনের বৈঠকে তাদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে।’
গত ২৮ নভেম্বর শেষ দিনে সারা দেশে ৩ হাজার ৬৫টি মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়। এরপর ২ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাইয়ে ২ হাজার ২৭৯টি মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ৭৮৬টি মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। প্রতি চারজনে একজনের মনোনয়ন বাতিল হয়, যেটি রীতিমতো রেকর্ড।
বাতিল হওয়া প্রার্থীরা বুধবার পর্যন্ত আপিল করতে পারবেন। আগামী ৬, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর শুনানি করে আপিল নিষ্পত্তি করবে নির্বাচন কমিশন।
তফসিল অনুসারে আগামী ৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। আর ৩০ ডিসেম্বর ভোট হবে।