ঢাকা ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
সাদপন্থীদের নিষিদ্ধ ও বিচারের দাবিতে মদনে আবারও বিক্ষোভ মিছিল পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বর্ডারে দুর্নীতির কারণে ঠেকানো যাচ্ছে না ‘রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ আব্রাম না থাকলে তাকে আমার যোগ্য বলেও মনে করতাম না ওমরাহ শেষে গ্রামে ফিরে খেজুর-জমজমের পানি বিতরণ করল শিশু রিফাত বিদেশে প্রশিক্ষণে ঘুরে-ফিরে একই ব্যক্তি নয়, জুনিয়রদের অগ্রাধিকার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে সড়ক ছাড়লেন চিকিৎসকরা রেমিট্যান্সে জোয়ার, ২১ দিনে এলো ২ বিলিয়ন ডলার গণমাধ্যমের পাঠক-দর্শক-শ্রোতার মতামত জরিপ জানুয়ারিতে বুয়েট শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩ আসামি রিমান্ডে বিয়ের আগে পরস্পরকে যে প্রশ্নগুলো করা জরুরি

একাদশ জাতীয় নির্বাচনে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকবে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১১:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৮
  • ২৫৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশে নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর উপরে সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে নির্বাচন কমিশন। তারা বলছেন, দরকার হলে মোবাইল নেটওয়ার্কও বন্ধ করে দেয়া হবে। বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশন বলছে, গুজব ও অপপ্রচারের মাধ্যমে কেউ যদি কোথাও নির্বাচন বানচালের উস্কানি দেয়, তবে তা ঠেকাতে দরকারে এমনকি সেই এলাকার মোবাইল নেটওয়ার্কও বন্ধ করে দেয়া হবে।

কমিশনের সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ বলেন, সোশ্যাল মিডিয়াতে কিন্তু অসংখ্য আছে ফেক আইডি। যাদেরকে আমরা চিনতে পারছি না। তারা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা ঐসব পোষ্ট বন্ধ করে দিতে পারি।

তিনি আরো বলেন, ‘অথবা, যদি এমন হয় যে ঐ সোশাল মিডিয়ার কারণে এলাকার আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি হতে পারে সেক্ষেত্রে আমরা নেটওয়ার্ক শাটডাউনও করতে পারি।’ নির্বাচন কমিশন বলছে, নির্বাচনকেন্দ্রিক গুজব ও অপপ্রচার ঠেকাতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর উপরে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হবে। এ জন্য টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে শুরু করে ইন্টারনেট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ফোন কোম্পানি ও পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

কিন্তু কোন ধরনের মন্তব্য, ছবি, পোষ্ট, গুজব বা অপপ্রচারের আওতায় পড়বে?

এ প্রশ্নের জবাবে হেলালুদ্দিন আহমদ বলছেন, ‘যেমন দেলোয়ার হোসেইন সাইদীকে চাঁদে দেখা গেছে সেই গুজবকে ভিত্তি করে হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনত করেছে। অথবা নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় একটা প্রোপাগান্ডা হয়েছে। সেটাই আমরা মাথায় রেখে নির্বাচনকে ঘিরে যাতে প্রচার করে মানুষকে উস্কানি দিতে না পারে-তা আমরা মনিটরিং করবো।’

বাংলাদেশে এবারের নির্বাচন এমন একটা সময়ে হচ্ছে যখন এর আগের যে কোনো নির্বাচনের তুলনায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার হচ্ছে অনেক বেশি।

এর আগের কোন সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি নিয়ে এতটা ভাবতে হয়নি। বিষয়টি এক ধরনের উদ্বেগ যে তৈরি করছে সেটি বোঝা যাচ্ছে।

হেলালুদ্দিন আহমদ বলছেন, গুজব বা অপপ্রচার পাওয়া গেলে তারা চলমান আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন।

তিনি বলছেন, নির্বাচন কমিশন নিজে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নজরদারির একটি সেল তৈরি করেছে। তথ্য মন্ত্রণালয় আগে থেকেই কাজটি করছিলো। পুলিশ বাহিনীর সবগুলি ইউনিটে সাইবার মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় পর্যায়ে তৈরি করেছে একটি সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং অ্যান্ড সাইবার ক্রাইম প্রিভেনশন কমিটি।

নির্বাচন কমিশনের ভাষায় ঝুঁকিপূর্ণ কোন পোষ্ট, ফেক আইডি, ভুয়া খবর-এগুলো যাচাই করার ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো বড় ভূমিকা পালন করবে।

পুলিশের গণমাধ্যমের দায়িত্বে থাকা এআইজি মোঃ: সোহেল রানা বলছেন, ‘নির্বাচনকেন্দ্রিক কিছু ট্রেন্ড এবং টেন্ডেন্সি আমাদের আছে, গুজব ছড়ানো এবং গুজব সৃষ্টির।’

তারা কীভাবে নির্ধারণ করছেন কোনটি গুজব বা অপপ্রচার?

এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলছেন, ‘আমাদের সেলগুলো নিয়মিত সাইবার পেট্রোলিং-এর কাজগুলো করে। আমাদের যে সোশাল মিডিয়া মনিটরিং অ্যান্ড সাইবার ক্রাইম প্রিভেনশন কমিটি আছে তাদের দৃষ্টিতে বিষয়গুলো আনা হয়। আসলেই এগুলো গুজব কিনা কমিটি তা যাচাই বাছাই করে এবং এই সিদ্ধান্ত দেয়। তারপর এটি নিয়ে কাজ করা হয়।’

কিন্তু এই প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুমিন ফারহানা।

রুমিন ফারহানা মনে করছেন, নজরদারির কারণে তারা সাইবার জগতেও চাপে রয়েছেন।

তিনি বলছেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে যে কথাটি বারবার উঠে আসছে যে সরকার এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টা করছে, নজরদারির মধ্যে রাখা হচ্ছে। এমনকি আমার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট দু’বার হ্যাক হয়েছে, স্টপ করে রাখছে সরকার। আমাদের কর্মী ও নেতাদের সঙ্গেও একই কাণ্ড হয়েছে। এরকম একটি অবস্থায় দাঁড়িয়ে আমাদের মনে হচ্ছে, আমরা সাইবার জগতেও চাপের মধ্যে আছ। আমাদের আইনের মাধ্যমে কোণঠাসা করে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

কিন্তু সামাজিক যোগাযোগের যেসব ওয়েবসাইট রয়েছে সেগুলোর উপরে কোন নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের সরকারি সংস্থাগুলোর নেই।

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বিটিআরসি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলছেন, ‘অনেক সময় ফেসবুকে যে প্রোপাগান্ডা হয় সেটা বন্ধ করতে বলে। আসলে বিটিআরসি বন্ধ করতে সক্ষম না। বিটিআরসি ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করতে পারে। অনুরোধ করলে কখনো কখনো তারা কনসিডার করে। তারা কিন্তু তা করতে বাধ্য না।’

সূত্র: বিবিসি বাংলা

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সাদপন্থীদের নিষিদ্ধ ও বিচারের দাবিতে মদনে আবারও বিক্ষোভ মিছিল

একাদশ জাতীয় নির্বাচনে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকবে

আপডেট টাইম : ১২:১১:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশে নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর উপরে সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে নির্বাচন কমিশন। তারা বলছেন, দরকার হলে মোবাইল নেটওয়ার্কও বন্ধ করে দেয়া হবে। বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশন বলছে, গুজব ও অপপ্রচারের মাধ্যমে কেউ যদি কোথাও নির্বাচন বানচালের উস্কানি দেয়, তবে তা ঠেকাতে দরকারে এমনকি সেই এলাকার মোবাইল নেটওয়ার্কও বন্ধ করে দেয়া হবে।

কমিশনের সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ বলেন, সোশ্যাল মিডিয়াতে কিন্তু অসংখ্য আছে ফেক আইডি। যাদেরকে আমরা চিনতে পারছি না। তারা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা ঐসব পোষ্ট বন্ধ করে দিতে পারি।

তিনি আরো বলেন, ‘অথবা, যদি এমন হয় যে ঐ সোশাল মিডিয়ার কারণে এলাকার আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি হতে পারে সেক্ষেত্রে আমরা নেটওয়ার্ক শাটডাউনও করতে পারি।’ নির্বাচন কমিশন বলছে, নির্বাচনকেন্দ্রিক গুজব ও অপপ্রচার ঠেকাতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর উপরে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হবে। এ জন্য টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে শুরু করে ইন্টারনেট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ফোন কোম্পানি ও পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

কিন্তু কোন ধরনের মন্তব্য, ছবি, পোষ্ট, গুজব বা অপপ্রচারের আওতায় পড়বে?

এ প্রশ্নের জবাবে হেলালুদ্দিন আহমদ বলছেন, ‘যেমন দেলোয়ার হোসেইন সাইদীকে চাঁদে দেখা গেছে সেই গুজবকে ভিত্তি করে হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনত করেছে। অথবা নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় একটা প্রোপাগান্ডা হয়েছে। সেটাই আমরা মাথায় রেখে নির্বাচনকে ঘিরে যাতে প্রচার করে মানুষকে উস্কানি দিতে না পারে-তা আমরা মনিটরিং করবো।’

বাংলাদেশে এবারের নির্বাচন এমন একটা সময়ে হচ্ছে যখন এর আগের যে কোনো নির্বাচনের তুলনায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার হচ্ছে অনেক বেশি।

এর আগের কোন সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি নিয়ে এতটা ভাবতে হয়নি। বিষয়টি এক ধরনের উদ্বেগ যে তৈরি করছে সেটি বোঝা যাচ্ছে।

হেলালুদ্দিন আহমদ বলছেন, গুজব বা অপপ্রচার পাওয়া গেলে তারা চলমান আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন।

তিনি বলছেন, নির্বাচন কমিশন নিজে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নজরদারির একটি সেল তৈরি করেছে। তথ্য মন্ত্রণালয় আগে থেকেই কাজটি করছিলো। পুলিশ বাহিনীর সবগুলি ইউনিটে সাইবার মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় পর্যায়ে তৈরি করেছে একটি সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং অ্যান্ড সাইবার ক্রাইম প্রিভেনশন কমিটি।

নির্বাচন কমিশনের ভাষায় ঝুঁকিপূর্ণ কোন পোষ্ট, ফেক আইডি, ভুয়া খবর-এগুলো যাচাই করার ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো বড় ভূমিকা পালন করবে।

পুলিশের গণমাধ্যমের দায়িত্বে থাকা এআইজি মোঃ: সোহেল রানা বলছেন, ‘নির্বাচনকেন্দ্রিক কিছু ট্রেন্ড এবং টেন্ডেন্সি আমাদের আছে, গুজব ছড়ানো এবং গুজব সৃষ্টির।’

তারা কীভাবে নির্ধারণ করছেন কোনটি গুজব বা অপপ্রচার?

এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলছেন, ‘আমাদের সেলগুলো নিয়মিত সাইবার পেট্রোলিং-এর কাজগুলো করে। আমাদের যে সোশাল মিডিয়া মনিটরিং অ্যান্ড সাইবার ক্রাইম প্রিভেনশন কমিটি আছে তাদের দৃষ্টিতে বিষয়গুলো আনা হয়। আসলেই এগুলো গুজব কিনা কমিটি তা যাচাই বাছাই করে এবং এই সিদ্ধান্ত দেয়। তারপর এটি নিয়ে কাজ করা হয়।’

কিন্তু এই প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুমিন ফারহানা।

রুমিন ফারহানা মনে করছেন, নজরদারির কারণে তারা সাইবার জগতেও চাপে রয়েছেন।

তিনি বলছেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে যে কথাটি বারবার উঠে আসছে যে সরকার এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টা করছে, নজরদারির মধ্যে রাখা হচ্ছে। এমনকি আমার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট দু’বার হ্যাক হয়েছে, স্টপ করে রাখছে সরকার। আমাদের কর্মী ও নেতাদের সঙ্গেও একই কাণ্ড হয়েছে। এরকম একটি অবস্থায় দাঁড়িয়ে আমাদের মনে হচ্ছে, আমরা সাইবার জগতেও চাপের মধ্যে আছ। আমাদের আইনের মাধ্যমে কোণঠাসা করে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

কিন্তু সামাজিক যোগাযোগের যেসব ওয়েবসাইট রয়েছে সেগুলোর উপরে কোন নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের সরকারি সংস্থাগুলোর নেই।

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বিটিআরসি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলছেন, ‘অনেক সময় ফেসবুকে যে প্রোপাগান্ডা হয় সেটা বন্ধ করতে বলে। আসলে বিটিআরসি বন্ধ করতে সক্ষম না। বিটিআরসি ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করতে পারে। অনুরোধ করলে কখনো কখনো তারা কনসিডার করে। তারা কিন্তু তা করতে বাধ্য না।’

সূত্র: বিবিসি বাংলা