হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে প্রতিযোগিতা আনতে নতুন প্রবিধানমালা জারি করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। আর নতুন এই নীতিমালার কারণে বিপাকে পড়বে দেশের শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন। গত ১৯ নভেম্বর প্রকাশিত বিটিআরসির নতুন প্রবিধানমালায় বলা হয়েছে, কোনো মোবাইল অপারেটরের গ্রাহক সংখ্যা, রাজস্ব অথবা তরঙ্গের দিক দিয়ে ৪০ শতাংশের বেশি বাজার হিস্যা থাকলে তাকে তাৎপর্যপূর্ণ বাজার ক্ষমতাধারী বা সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার (এসএমপি) হিসেবে ঘোষণা করা যাবে। এমন কোনো অপারেটরের ক্ষেত্রে করণীয় ও বর্জনীয় ঠিক করে দিতে পারবে বিটিআরসি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে বিপাকে পড়বে দেশের শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন।
গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গ্রাহক সংখ্যায় গ্রামীণফোনের বাজার হিস্যা এখন ৪৬ শতাংশ। ফলে গ্রামীণফোনের আরও বড় হওয়ার ক্ষেত্রে নানা বিধি-নিষেধ আরোপ করার ক্ষমতা পেল বিটিআরসি।
জানা গেছে, দেশের চারটি মোবাইল ফোন অপারেটরের মোট গ্রাহক ১৫ কোটি ৫৮ লাখ। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের গ্রাহক ৭ কোটি ১৪ লাখ, যা মোট গ্রাহকের প্রায় ৪৬ শতাংশ।
অন্যদিকে, দ্বিতীয় শীর্ষ অপারেটর রবি আজিয়াটার গ্রাহক বাজারের প্রায় ৩০ শতাংশ। বাংলালিংকের বাজার প্রায় ২২ শতাংশ।
অবশ্য কী কী বিধি-নিষেধ আরোপ করা যাবে, তা বিটিআরসির প্রবিধানমালায় নেই। এটা কমিশনের ওপর নির্ভর করবে বলে জানা গেছে।
নীতিমালায় একক বাজার হিস্যা, জোট করে বাজার নিয়ন্ত্রণ, তাৎপর্যপূর্ণ বাজার ক্ষমতা, ষড়যন্ত্রমূলক যোগসাজশ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে।
‘তাৎপর্যপূর্ণ বাজার ক্ষমতা প্রবিধানমালা-২০১৮’ শীর্ষক নতুন বিধিতে তাৎপর্যপূর্ণ বাজার ক্ষমতা বলতে এমন একক বা যৌথ ক্ষমতাকে বোঝানো হয়েছে, যার মাধ্যমে প্রতিযোগীর আচরণ আমলে না নিয়ে এমন কাজ করা যায়, যা প্রতিযোগীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এ বিষয়ে বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক বলেন, ‘বাজারের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির জন্য, গ্রাহকের সুবিধার জন্য আমরা যেটা আইনে আছে, সেটাই করব।’
গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন সৈয়দ তালাত কামাল এ বিষয়ে সাংবাদিককে বলেন, নতুন প্রবিধানমালার বিষয়ে এখনো নির্দেশনা পাইনি। ৪০ শতাংশের বেশি বাজার হিস্যা হওয়ায় এসএমপি অনুযায়ী বিটিআরসি আমাদের ব্যাপারে কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে, সে ব্যাপারে এখনো আমরা স্পষ্ট নই।
তিনি বলেন, আমাদের ওপর নতুন গ্রাহকের ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা দিবে না কি কল রেট বাড়াবে সেটা আমরা কিছুই জানি না। আমরা বিটিআরসির সাথে আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধানের চেষ্টা করব।
তবে তালাত কামাল বলেন, এ ধরনের জটিল ও সুদূরপ্রসারী প্রবিধানের ক্ষেত্রে আগে অপারেটরদের সঙ্গে আলোচনা করা দরকার ছিল।