ঢাকা ০৭:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ভারতে ১৩ বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার কবরের পাশে দিন-রাত বসে থাকি, ছেলে ফিরে আসে না সংস্কার না করলে শহীদদের রক্তের সঙ্গে অন্যায় করা হবে : উপদেষ্টা সাখাওয়াত কাকে ‘ননসেন্স’ বললেন বুবলী ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়সসীমা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আপত্তি বিএনপি মহাসচিবের সচিবালয়ে প্রবেশে অস্থায়ী পাসের ব্যাপারে বিশেষ সেল গঠন জর্জিনাকে ‘স্ত্রী’ সম্বোধন, তবে কি বিয়েটা সেরেই ফেলেছেন রোনালদো ৩১ ডিসেম্বর আসছে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা মহাখালীতে আবাসিক ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২ ইউনিট ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়সসীমা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আপত্তি বিএনপি মহাসচিবের

ও ধান ভানোরে ঢেঁকিতে পাড় দিয়া…

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫২:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অক্টোবর ২০১৫
  • ৭৯৪ বার

এক সময় সকালে ঘুম ভাঙ্গত যে ঢেঁকির ধুমধাম শব্দে, তা আজ আর শোনা যায় না। গ্রামবাংলার বধুরা এক সময় ঢেঁকি পারের তালে তালে গান গাইতো। আর তা শুনে মনের দুঃখ-কষ্ট দুর করতো বাড়িতে খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষ। ঢেঁকি পারের শব্দে মনের ক্লান্তি দুর করে আবার কাজে মন দিত কৃষক।

গ্রামবাংলার ঐহিত্যবাহী ঢেঁকি নিয়ে অনেক কবি লেখক কবিতা আর গান লিখেছেন। যেমন- ঢেঁকির তালে হেলে দুলে ধান যে ভানতে পারে তেমনি বউ চাই গ্রামের সাধারণ কৃষকের। কিন্তু সেই ঢেঁকির আজ আর কোনো কদন নেই। আজ মানুষ যান্ত্রিক যন্ত্রপাতির দিকে ঝুঁকে পড়ে আগের দিনের গ্রামের ঐতিহ্যকে একেবারেই ভুলে যেতে বসেছে।

গ্রামের বধুরা এক সময় ঢেঁকির তালে তালে ভাটিয়ালী, ভাওয়াইয়া, ঘেটু গানের সুর তুলতো। তারা মনের আনন্দে ‘ও ধান ভানোরে ঢেঁকিতে পাড় দিয়া/আমি নাচি ঢেঁকি নাচে হেলিয়া-দুলিয়া, ও ধান ভানোরে’ গানটি গাইতেন।

বিয়ের কনেকে গাঁয়ে গলুদ মাখাতে পাড়ার মহিলারা একত্রে হয়ে বিয়ের গীত গাইতো। সেই দিনের সেই সময়গুলো আজ শুধুই স্বপ্ন। কার্তিক অগ্রহায়ণ মাসে বাড়ির উঠানে নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে যখন সারাদেশে মাতোয়ারা ঠিক তখন গ্রামের মহিলারা নতুন ধানে পিঠা তৈরিতে মনোনিবেশ করতো। আর পিঠা তৈরির জন্য চাউলের গুড়া করতে ঢেঁকির কোনো বিকল্প ছিল না।

ঢেঁকি ছাটা চাউলের ভাত গ্রামের কৃষকের প্রাণের চাওয়া ছিল। আর আজ দেশে যান্ত্রিক মেশিনে ছাটা চাউল আগের দিনের মতো হয় না। ঢেঁকিতে করা চাউলের গুড়া দিয়ে তৈরি হয়েছে মন মাতানো সব পিঠা। যার মধ্যে পুলি, ভাপাপুলি, চিতাই, পাটিসাপটা, কুশলি, ভাজাপিঠাসহ নানা ধরনের সুস্বাদু খাবার।

এখন গ্রাম থেকে সেই ঢেঁকি উঠে গেছে। এলাকার দু‘একটি বাড়িতে ঢেঁকি দেখা গেলেও তার প্রচলন আর আগের মতো নেই। বলা চলে, ঢেঁকি শিল্পটি প্রায়ই বিলুপ্তির পথে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভারতে ১৩ বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার

ও ধান ভানোরে ঢেঁকিতে পাড় দিয়া…

আপডেট টাইম : ১০:৫২:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অক্টোবর ২০১৫

এক সময় সকালে ঘুম ভাঙ্গত যে ঢেঁকির ধুমধাম শব্দে, তা আজ আর শোনা যায় না। গ্রামবাংলার বধুরা এক সময় ঢেঁকি পারের তালে তালে গান গাইতো। আর তা শুনে মনের দুঃখ-কষ্ট দুর করতো বাড়িতে খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষ। ঢেঁকি পারের শব্দে মনের ক্লান্তি দুর করে আবার কাজে মন দিত কৃষক।

গ্রামবাংলার ঐহিত্যবাহী ঢেঁকি নিয়ে অনেক কবি লেখক কবিতা আর গান লিখেছেন। যেমন- ঢেঁকির তালে হেলে দুলে ধান যে ভানতে পারে তেমনি বউ চাই গ্রামের সাধারণ কৃষকের। কিন্তু সেই ঢেঁকির আজ আর কোনো কদন নেই। আজ মানুষ যান্ত্রিক যন্ত্রপাতির দিকে ঝুঁকে পড়ে আগের দিনের গ্রামের ঐতিহ্যকে একেবারেই ভুলে যেতে বসেছে।

গ্রামের বধুরা এক সময় ঢেঁকির তালে তালে ভাটিয়ালী, ভাওয়াইয়া, ঘেটু গানের সুর তুলতো। তারা মনের আনন্দে ‘ও ধান ভানোরে ঢেঁকিতে পাড় দিয়া/আমি নাচি ঢেঁকি নাচে হেলিয়া-দুলিয়া, ও ধান ভানোরে’ গানটি গাইতেন।

বিয়ের কনেকে গাঁয়ে গলুদ মাখাতে পাড়ার মহিলারা একত্রে হয়ে বিয়ের গীত গাইতো। সেই দিনের সেই সময়গুলো আজ শুধুই স্বপ্ন। কার্তিক অগ্রহায়ণ মাসে বাড়ির উঠানে নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে যখন সারাদেশে মাতোয়ারা ঠিক তখন গ্রামের মহিলারা নতুন ধানে পিঠা তৈরিতে মনোনিবেশ করতো। আর পিঠা তৈরির জন্য চাউলের গুড়া করতে ঢেঁকির কোনো বিকল্প ছিল না।

ঢেঁকি ছাটা চাউলের ভাত গ্রামের কৃষকের প্রাণের চাওয়া ছিল। আর আজ দেশে যান্ত্রিক মেশিনে ছাটা চাউল আগের দিনের মতো হয় না। ঢেঁকিতে করা চাউলের গুড়া দিয়ে তৈরি হয়েছে মন মাতানো সব পিঠা। যার মধ্যে পুলি, ভাপাপুলি, চিতাই, পাটিসাপটা, কুশলি, ভাজাপিঠাসহ নানা ধরনের সুস্বাদু খাবার।

এখন গ্রাম থেকে সেই ঢেঁকি উঠে গেছে। এলাকার দু‘একটি বাড়িতে ঢেঁকি দেখা গেলেও তার প্রচলন আর আগের মতো নেই। বলা চলে, ঢেঁকি শিল্পটি প্রায়ই বিলুপ্তির পথে।