ধানের বাজার মূল্য কম হওয়ায় উৎপাদন খরচও ঘরে তুলতে না পেরে দেশের কৃষকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেও এখনো বন্ধ হচ্ছে না চাল আমদানি। ভারত, মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিকৃত নিন্মামানের চাল অপেক্ষাকৃত কমমূল্যে বাজারে বিক্রি হওয়ায় কম আয়ের ক্রেতারা দেশীয় চালের দিকে ঝুঁকছেন না। ফলে ধানের মূল্য আর বাড়ছে না।
জাতীয় সংসদ ভবনে রোববার অনুষ্ঠিত কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কমিটির সদস্যরা। তারা মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করে অতিদ্রুত কৃষকদের সমস্যা সমাধানে তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য প্রদান এবং কৃষি পণ্য উৎপাদনের জন্য প্রণোদনা প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন। একইসঙ্গে চাল আমদানীতে শুল্ক আরোপ করারও প্রস্তাব দিয়েছেন তারা।
কমিটির সভাপতি মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, মো. আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল মান্নান, মো. নজরুল ইসলাম বাবু, মো. মামুনুর রশিদ কিরন, এ,কে,এম, রেজাউল করিম তানসেন, মো. নুরুল ইসলাম ওমর এবং অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি অংশ নেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
কমিটি সূত্র জানায়, বৈঠকে কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) বিদ্যমান জনবল কাঠামো অনুযায়ী শূন্যপদে নিয়োগ, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বিগত ১০ বছরের কার্যক্রম এবং সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দূর্যোগের (ঘূর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টি) কারণে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও সরকারের নেয়া ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা হয়। এসময় মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে বৈঠকে জানানো হয়, সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দূর্যোগগত (ঘূর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টি) কারণে ২২টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব জেলায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ ২০ হাজার ৩৪৮ হেক্টর এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ২ লাখ ১৩ হাজার ৫১৬ জন। এরমধ্যে ২ লাখ ১০ হাজার জন কৃষককে প্রণোদনার জন্য সরকার ৩০ কোটি ২১ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে।
কমিটি কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) বিদ্যমান জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার বিষয় কমিটি সুপারিশ করে। একইসঙ্গে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে একজন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন চেয়ারম্যান ও নির্বাহী পরিচালক নিয়োগ এবং প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে পরিচালনার জন্য জনবল নিয়োগসহ কর্মরত জনবলকে স্থায়ী কাঠামোর আওতায় আনার বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়।
এছাড়া বৈঠকে খাদ্য এবং ত্রাণ ও দূর্যোগ মন্ত্রণালয়ের টিআর ও কাবিখার বিদ্যমান যে দর আছে বর্তমান বাজার দরের সঙ্গে তা সমন্বয় করা এবং ধান ও গমের উৎপাদনের বিষয়ে সঠিক তথ্য কমিটির পরবর্তী বৈঠকে উস্থাপনের বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়।