হাওর বার্তা ডেস্কঃ আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ একটা সম্পর্ক ছিল। সালমান শাহ আমাকে পিচ্চি বলে ডাকত। সালমানের মা-বাবাও আমাকে খুবই আদর করতেন। সালমানের বউ সামিরাও কিন্তু আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সালমানকে প্রথম দেখি এফডিসিতে। মৌসুমী আপুর সঙ্গে শুটিং করছিল। আসা-যাওয়ার মধ্যেও দেখা হতো। তবে খুব একটা কথা হতো না। তখন শুনেছি, ফিল্মে সালমান শাহ নামে নতুন একজন হিরো এসেছে।
আনুষ্ঠানিক পরিচয় ‘তুমি আমার’ ছবিতে অভিনয় করার সময়। তখন কাজের কারণে বন্ধুত্ব হয়। আমাদের দুজনের বোঝাপড়াটা ছিল চমৎকার। সালমান নাচ একটু কম পারত। সে তুলনায় আমি নাচে বেশি পারদর্শী ছিলাম। সালমান আমাকে প্রায়ই বলত, আমাকে একটু নাচ দেখিয়ে দে তো। আমিও আগ্রহ নিয়ে কাজটা করতাম। বলতে পারেন, একে অন্যের চোখের ইশারা বুঝতে পারতাম। শুটিংয়ে সব সময় সালমানের বউ সামিরা সঙ্গে থাকত। সামিরা, আমি ও সালমান খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলাম। অনেকে অনেক কথা বলছে, কিন্তু সামিরা সত্যিকার অর্থেই আমার ভালো বন্ধু ছিল।
আমরা একসঙ্গে কত অসাধারণ সময় কাটিয়েছি, তার কোনো হিসাব নেই। এমনো সময় গেছে, শুটিংয়ের সময় সামিরা আমাকে চুড়ি পরিয়ে দিয়েছে। কোন পোশাকে আমাকে মানাবে, সেটাও প্রায় সে বলে দিত। কানের দুলগুলো ম্যাচিং করে পরিয়ে দিত। আমাদের মধ্যে কোনোদিন কোনো ধরনের মনোমালিন্য হয়নি। কলকাতার উত্তম কুমার আর সুচিত্রা সেনের জুটিটা যেমন জনপ্রিয়তা পেয়েছিল, আমাদের দুজনকেও সবাই সেভাবেই গ্রহণ করত। সালমান বেঁচে থাকলে বাংলা চলচ্চিত্রের অবস্থা এখনকার মতো হতো না। সালমান অনেক বড় মনের মানুষ। বয়সে বয়সে সবাইকে সে যথেষ্ট সম্মান করত। কোনো অহংকার তার মধ্যে ছিল না। অনেক বেশি ভালো ছিল। সহশিল্পীদের সবার প্রতি খুব আন্তরিক আর কাজপাগল একটা ছেলে ছিল।