হাওর বার্তা ডেস্কঃ জাম বিভিন্ন ধরণের পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ এবং স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক উপকারী। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, আকারে ছোট হলেও জামের ভেতরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় পুষ্টিকর উপাদান। সেই সঙ্গে রয়েছে উপকারি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ব্রেন পাওয়ার বাড়ানোর পাশাপাশি ক্যান্সারের মতো রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
সুস্বাদু ফলটিকে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখলে আরও অনেক শারীরিক উপকার পাওয়া যায়। জীবনধারা বিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই জানিয়েছে সেই উপকারিতাগুলো।
১. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়
এই ফলটিতে উপস্থিত অ্যান্থোসায়ানিন এবং ভিটামিন সি একদিকে যেমন ডি এন এ-এর যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে। তেমনি ত্বকের ভেতরে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে ত্বকের বয়স কমতে শুরু করে। আর এমনটা যখন হয়, তখন বলিরেখা তো অদৃশ্য হয়ে যায়ই, সেই সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায়।
২. রোগমুক্ত রাখে
শরীরের ভেতরে সৃষ্টি হওয়া ব্যথাজনিত রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত, ক্রনিক ইনফ্লেমেশনের কারণে শরীরে একে একে নানা রোগ বাসা বাঁধতে শুরু করে। যেমন ধরুন, ক্যান্সার, হার্টের রোগ, ডিপ্রেশন প্রভৃতি। এক্ষেত্রে জাম নিয়মিত খেলে শরীরে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
৩. অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি দূর হয়
সারা দিন ধরে বিভিন্নভাবে নানা ক্ষতিকর টক্সিন আমাদের শরীরে প্রবেশ করে থাকে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ঠিক সময়ে এসব টক্সিক উপাদানদের যদি শরীর থেকে বের করে দেওয়া না যায়, তাহলে একদিকে শরীরের ভেতরে ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ক্ষতি হয়। এই কারণেই তো নিয়মিত জাম খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। কারণ এই ফলটির অন্দরে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, টক্সিক উপাদানদের খুঁজে খুঁজে শরীর থেকে বের করে দেয়। ফলে জটিল কোনও রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
৪. হাড় মজবুত করে
জামের ভেতরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং ভিটামিন কে। এই সবকটি উপাদানই হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৫. ওজন কমায়
যারা ওজন কমাতে বদ্ধপরিকর, তারা আজ থেকেই এক বাটি করে জাম খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন অতিরিক্ত ওজন কমতে একেবারেই সময় লাগবে না। কারণ এই ফলে রয়েছে প্রায় তিন দশমিক ছয় গ্রাম ফাইবার, যা অনেকক্ষণ ধরে পেটকে ভরিয়ে রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বারবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। আর খাবার কম খেলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি প্রবেশের আশঙ্কাও হ্রাস পায়। ফলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা একেবারে কমে যায়।
৬. হজম ক্ষমতার বাড়ায়
প্রতিদিন জাম খেলে শরীরের ভেতরে ফাইবারের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। যা হজম শক্তির বাড়ানোর পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগের চিকিৎসাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৭. মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়
জীবনে সফল হতে গেলে বুদ্ধির তেজ বাড়ানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। এই কারণেও কিন্তু প্রতিদিন জাম খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। ২০১৬ সালে ইউরোপিয়ান জার্নাল অব নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত এক গবেষণা পত্র অনুসারে জামে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, টক্সিক উপাদান যা ব্রেনকে রক্ষা করে। ফলে বয়স বাড়লেও তার ছাপ পরে না মস্তিষ্কের উপর। সেই সঙ্গে কগনেটিভ পাওয়ার বেড়ে যাওয়ার কারণে বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তিও বাড়তে শুরু করে। এই কারণেই জামকে চিকিৎসকেরা ‘ব্রেন ফুড’ বলেন।
৮. হার্ট ভালো রাখে
এই ফলটিতে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান একদিকে যেমন রক্ত চাপকে স্বাভাবিক রাখে, তেমনি রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমায়।