ঢাকা ১০:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শীতের সকালে আদা ও তুলসী পাতা খেলে কী হয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৪৫:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
  • ১৫ বার

শীতের সকালে শরীর ও মন থেকে অলসতা ঝেড়ে ফেলাই বড় চ্যালেঞ্জি হয়ে দাঁড়ায়। বিছানার উষ্ণতা ছেড়ে কার উঠতে মনে চায়! এরপর আবার এসময় তার সঙ্গে যোগ হয় সর্দি, কাশি এবং বদহজমের মতো মৌসুমী স্বাস্থ্য সমস্যাও। যে কারণে শীতের সময়টা মোকাবিলা করার জন্য পর্যাপ্ত রসদ আমাদের কাছে থাকা চাই। শীতের সকালে স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সমস্যা দূর করার জন্য এক চা চামচ আদার রস, তুলসী এবং গুড় দারুণ কাজ করতে পারে। কীভাবে? চলুন জেনে নেওয়া যাক-

১. মৌসুমি রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা

আদার রস অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি যৌগ সমৃদ্ধ, অন্যদিকে তুলসি তার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। এই দুই উপদান একসঙ্গে শীতকালীন অসুস্থতা যেমন সর্দি এবং ফ্লুর বিরুদ্ধে শক্তিশালী ঢাল তৈরি করে। ২০২০ সালে নিউট্রিয়েন্টস জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য আদা একটি ভেষজ ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

২. হজমে সাহায্য করে

শীতকালীন খাবার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভারী হয়, যা হজমকে ধীর করে দিতে পারে। আদার রস হজমের এনজাইমগুলোকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে, হজম সহজ করে এবং পেট ফাঁপা প্রতিরোধ করে। তুলসীর প্রশান্তিদায়ক বৈশিষ্ট্য অ্যাসিড রিফ্লাক্স এবং গ্যাস কমাতে আরও সহায়তা করে। ২০১৭ সালে হিন্দাউই জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, তুলসি একটি নিরাপদ ভেষজ যা গ্লুকোজ, রক্তচাপ এবং লিপিড প্রোফাইল স্বাভাবিক করতে কাজ করে। এটি মনস্তাত্ত্বিক ও ইমিউনোলজিক্যাল স্ট্রেস মোকাবিলায় সহায়তা করতে পারে। গুড় একটি মৃদু রেচক হিসেবে কাজ করে, মসৃণ হজমশক্তি বাড়ায় এবং খাবারের পরে অস্বস্তি এড়াতে সাহায্য করে।

৩. উষ্ণ এবং উজ্জীবিত রাখে

আদা থার্মোজেনিক, যার অর্থ এটি শরীরে তাপ উৎপন্ন করে, ঠান্ডার মাসগুলোতে উষ্ণ রাখে। তুলসি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এর পরিপূরক। গুড় তাপ উৎপাদন করে এবং মানবদেহে তাত্ক্ষণিক শক্তি দেয় বলে পরিচিত। গুড় তার প্রাকৃতিক চিনির উপাদানের কারণে শক্তি বৃদ্ধি করে।

৪. শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে

এই সংমিশ্রণ শ্বাসযন্ত্রের অস্বস্তি প্রশমিত করার জন্য বিশেষভাবে কার্যকর। আদার রস শ্লেষ্মা পরিষ্কার করে, তুলসি শ্বাসনালীতে প্রদাহ কমায় এবং গুড় দূষণকারী পদার্থকে বের করে দিতে সাহায্য করে ফুসফুসকে ডিটক্সিফাই করে। এটি নিয়মিত পান করলে ক্রমাগত কাশি, নাক বন্ধ এবং গলা জ্বালা, শীতকালে সাধারণভাবে উপশম করতে পারে।

৫. ডিটক্সিফিকেশন সাহায্য করে

আদা এবং গুড় উভয়ই তাদের ডিটক্সিফাইং প্রভাবের জন্য পরিচিত। আদা লিভার ফাংশনকে উদ্দীপিত করে, টক্সিন নির্মূলে সহায়তা করে। ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রনের মতো খনিজ সমৃদ্ধ গুড়, লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং সামগ্রিক ডিটক্সিফিকেশন বজায় রাখে। তুলসি রক্ত পরিষ্কার করে এবং ফ্রি র‌্যাডিক্যালগুলোকে সরিয়ে দেয়।

কীভাবে তৈরি করবেন

আদার রস, কুচি করে কাটা তুলসী পাতা এবং গুড় গরম পানিতে মিশিয়ে নিন। সকালে খালি পেটে এটি পান করলে এর উপকারিতা সর্বাধিক হতে পারে। সেরা ফলাফলের জন্য উপাদানগুলো তাজা এবং স্বাস্থ্যকর যেন হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

শীতের সকালে আদা ও তুলসী পাতা খেলে কী হয়

আপডেট টাইম : ০৬:৪৫:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

শীতের সকালে শরীর ও মন থেকে অলসতা ঝেড়ে ফেলাই বড় চ্যালেঞ্জি হয়ে দাঁড়ায়। বিছানার উষ্ণতা ছেড়ে কার উঠতে মনে চায়! এরপর আবার এসময় তার সঙ্গে যোগ হয় সর্দি, কাশি এবং বদহজমের মতো মৌসুমী স্বাস্থ্য সমস্যাও। যে কারণে শীতের সময়টা মোকাবিলা করার জন্য পর্যাপ্ত রসদ আমাদের কাছে থাকা চাই। শীতের সকালে স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সমস্যা দূর করার জন্য এক চা চামচ আদার রস, তুলসী এবং গুড় দারুণ কাজ করতে পারে। কীভাবে? চলুন জেনে নেওয়া যাক-

১. মৌসুমি রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা

আদার রস অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি যৌগ সমৃদ্ধ, অন্যদিকে তুলসি তার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। এই দুই উপদান একসঙ্গে শীতকালীন অসুস্থতা যেমন সর্দি এবং ফ্লুর বিরুদ্ধে শক্তিশালী ঢাল তৈরি করে। ২০২০ সালে নিউট্রিয়েন্টস জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য আদা একটি ভেষজ ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

২. হজমে সাহায্য করে

শীতকালীন খাবার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভারী হয়, যা হজমকে ধীর করে দিতে পারে। আদার রস হজমের এনজাইমগুলোকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে, হজম সহজ করে এবং পেট ফাঁপা প্রতিরোধ করে। তুলসীর প্রশান্তিদায়ক বৈশিষ্ট্য অ্যাসিড রিফ্লাক্স এবং গ্যাস কমাতে আরও সহায়তা করে। ২০১৭ সালে হিন্দাউই জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, তুলসি একটি নিরাপদ ভেষজ যা গ্লুকোজ, রক্তচাপ এবং লিপিড প্রোফাইল স্বাভাবিক করতে কাজ করে। এটি মনস্তাত্ত্বিক ও ইমিউনোলজিক্যাল স্ট্রেস মোকাবিলায় সহায়তা করতে পারে। গুড় একটি মৃদু রেচক হিসেবে কাজ করে, মসৃণ হজমশক্তি বাড়ায় এবং খাবারের পরে অস্বস্তি এড়াতে সাহায্য করে।

৩. উষ্ণ এবং উজ্জীবিত রাখে

আদা থার্মোজেনিক, যার অর্থ এটি শরীরে তাপ উৎপন্ন করে, ঠান্ডার মাসগুলোতে উষ্ণ রাখে। তুলসি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এর পরিপূরক। গুড় তাপ উৎপাদন করে এবং মানবদেহে তাত্ক্ষণিক শক্তি দেয় বলে পরিচিত। গুড় তার প্রাকৃতিক চিনির উপাদানের কারণে শক্তি বৃদ্ধি করে।

৪. শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে

এই সংমিশ্রণ শ্বাসযন্ত্রের অস্বস্তি প্রশমিত করার জন্য বিশেষভাবে কার্যকর। আদার রস শ্লেষ্মা পরিষ্কার করে, তুলসি শ্বাসনালীতে প্রদাহ কমায় এবং গুড় দূষণকারী পদার্থকে বের করে দিতে সাহায্য করে ফুসফুসকে ডিটক্সিফাই করে। এটি নিয়মিত পান করলে ক্রমাগত কাশি, নাক বন্ধ এবং গলা জ্বালা, শীতকালে সাধারণভাবে উপশম করতে পারে।

৫. ডিটক্সিফিকেশন সাহায্য করে

আদা এবং গুড় উভয়ই তাদের ডিটক্সিফাইং প্রভাবের জন্য পরিচিত। আদা লিভার ফাংশনকে উদ্দীপিত করে, টক্সিন নির্মূলে সহায়তা করে। ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রনের মতো খনিজ সমৃদ্ধ গুড়, লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং সামগ্রিক ডিটক্সিফিকেশন বজায় রাখে। তুলসি রক্ত পরিষ্কার করে এবং ফ্রি র‌্যাডিক্যালগুলোকে সরিয়ে দেয়।

কীভাবে তৈরি করবেন

আদার রস, কুচি করে কাটা তুলসী পাতা এবং গুড় গরম পানিতে মিশিয়ে নিন। সকালে খালি পেটে এটি পান করলে এর উপকারিতা সর্বাধিক হতে পারে। সেরা ফলাফলের জন্য উপাদানগুলো তাজা এবং স্বাস্থ্যকর যেন হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন