ঢাকা ০১:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাইলস প্রতিরোধে যে কাজগুলো করবেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৬:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
  • ৪ বার

গতকাল ২০ নভেম্বর ছিল বিশ্ব পাইলস দিবস। প্রতিবছরের মতো দিনটি আমাদের দেশেও নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পালন করা হয়। এ রোগ সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোই দিবসটির মূল লক্ষ্য।

মানুষের মলদ্বারের দৈর্ঘ্য ২-৩ ইঞ্চি। এর ওপরের অংশের নাম রেক্টাম। এটির নিচের অংশ তথা মলদ্বারের আশপাশে কিছু রক্তনালি থাকে। একসঙ্গে এসবকে বলে রেক্টাল ভেইন। এই রেক্টাল ভেইন যদি কোনো কারণে ফুলে যায় বা প্রদাহ হয়, তা হলে মলত্যাগের সময় তা থেকে রক্তপাত হতে পারে। এ অবস্থার নামই পাইলস বা হেমোরয়েড।

প্রকারভেদ : পাইলস বা হেমরয়েড দুধরনের- এক্সটারনাল হেমোরয়েড (মলদ্বারের বাইরের রক্তনালিতে প্রদাহ হয় এবং মলত্যাগের সময় ব্যথা হয়, রক্তমিশ্রিত পায়খানা হয়। অন্য সময় পায়খানার রাস্তার আশপাশে চুলকানি থাকে। পায়খানার রাস্তার আশপাশ ফুলে যায়) এবং আরেকটি হলো ইন্টারনাল হেমরয়েড (মলদ্বারের অভ্যন্তরীণ রক্তনালিতে প্রদাহ হয়ে তা ফুলে যায়। পায়খানার সঙ্গে তাজা রক্ত যায়। মলদ্বার দিয়ে মাংস পিণ্ডের মতো কিছু একটা বেরিয়ে আসে, মলদ্বারে চুলকানি থাকে ইত্যাদি)। রোগের জটিলতা বিবেচনায় ইন্টার্নাল হেমরয়েডের আরও চারটি স্তর রয়েছে।

পাইলস যে কারণে হয় : কোষ্ঠকাঠিন্য বা অনিয়মিতভাবে মলত্যাগ অথবা ডায়রিয়ায় রেক্টাল ভেইনগুলোয় অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং তাতে ইরিটেট হয়ে বসে প্রদাহ হয়। পরবর্তীকালে পাইলস হয়। অন্তঃসত্ত্বা নারীরও পাইলস হতে পারে ওবেসিটি তথা অতিরিক্ত শারীরিক ওজন হলে। দীর্ঘদিনের কাশি থাকলেও পাইলস হতে পারে।

পাইলসের উপসর্গ : পায়খানার সময় রক্ত যায়। পায়ুপথের আশপাশে চুলকানি হয়। পায়খানার সময় ব্যথা হতে পারে। মলদ্বার দিয়ে মাংসপিণ্ড বেরিয়ে আসতে পারে। অনিয়মিত পায়খানা হতে পারে

পরীক্ষা-নিরীক্ষা : রোগের ইতিহাস শুনেই পাইলস কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে।

প্রতিরোধে করণীয় : গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মোটামুটি ৭০ শতাংশ পাইলসের জন্য দায়ী হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্যতা। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দূরে থাকলে পাইলস থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। কোষ্ঠকাঠিন্যের মূল কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত গরুর মাংস, তেলে ভাজা খাবার খাওয়া। যারা ফলমূল, শাকসবজি কম খান, তাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হয় এবং তা থেকে একসময় পাইলস দেখা দেয়। তাই পাইলস প্রতিরোধে নিয়মিত শাকসবজি খাবেন। দৈনিক ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করবেন। গরুর মাংস কম খাবেন। তেলে ভাজা কিংবা চর্বিজাতীয় খাবার কম খাবেন।

চিকিৎসা : পাইলস যাদের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে অর্থাৎ পায়খানার সময় যাদের হালকা ব্যথা হয় কিংবা রক্ত যায়, মলদ্বারের আশপাশে চুলকানি আছে, তারা প্রতিদিন ৪ চামচ ইসুপগুলের ভুসি দিয়ে দৈনিক ২ বেলায় শরবত করে খাবেন (২ মাস)। প্রতিদিন ২-৩ টা আপেল খাবেন (১ মাস)। ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করবেন প্রতিদিন। যেসব খাবার খেলে শক্ত পায়খানা হয়, তা পরিহার করে চলবেন। কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়েরিয়া থাকলে রোগগুলোর চিকিৎসা করবেন। অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। এক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাও কার্যকর।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

পাইলস প্রতিরোধে যে কাজগুলো করবেন

আপডেট টাইম : ১০:৪৬:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

গতকাল ২০ নভেম্বর ছিল বিশ্ব পাইলস দিবস। প্রতিবছরের মতো দিনটি আমাদের দেশেও নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পালন করা হয়। এ রোগ সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোই দিবসটির মূল লক্ষ্য।

মানুষের মলদ্বারের দৈর্ঘ্য ২-৩ ইঞ্চি। এর ওপরের অংশের নাম রেক্টাম। এটির নিচের অংশ তথা মলদ্বারের আশপাশে কিছু রক্তনালি থাকে। একসঙ্গে এসবকে বলে রেক্টাল ভেইন। এই রেক্টাল ভেইন যদি কোনো কারণে ফুলে যায় বা প্রদাহ হয়, তা হলে মলত্যাগের সময় তা থেকে রক্তপাত হতে পারে। এ অবস্থার নামই পাইলস বা হেমোরয়েড।

প্রকারভেদ : পাইলস বা হেমরয়েড দুধরনের- এক্সটারনাল হেমোরয়েড (মলদ্বারের বাইরের রক্তনালিতে প্রদাহ হয় এবং মলত্যাগের সময় ব্যথা হয়, রক্তমিশ্রিত পায়খানা হয়। অন্য সময় পায়খানার রাস্তার আশপাশে চুলকানি থাকে। পায়খানার রাস্তার আশপাশ ফুলে যায়) এবং আরেকটি হলো ইন্টারনাল হেমরয়েড (মলদ্বারের অভ্যন্তরীণ রক্তনালিতে প্রদাহ হয়ে তা ফুলে যায়। পায়খানার সঙ্গে তাজা রক্ত যায়। মলদ্বার দিয়ে মাংস পিণ্ডের মতো কিছু একটা বেরিয়ে আসে, মলদ্বারে চুলকানি থাকে ইত্যাদি)। রোগের জটিলতা বিবেচনায় ইন্টার্নাল হেমরয়েডের আরও চারটি স্তর রয়েছে।

পাইলস যে কারণে হয় : কোষ্ঠকাঠিন্য বা অনিয়মিতভাবে মলত্যাগ অথবা ডায়রিয়ায় রেক্টাল ভেইনগুলোয় অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং তাতে ইরিটেট হয়ে বসে প্রদাহ হয়। পরবর্তীকালে পাইলস হয়। অন্তঃসত্ত্বা নারীরও পাইলস হতে পারে ওবেসিটি তথা অতিরিক্ত শারীরিক ওজন হলে। দীর্ঘদিনের কাশি থাকলেও পাইলস হতে পারে।

পাইলসের উপসর্গ : পায়খানার সময় রক্ত যায়। পায়ুপথের আশপাশে চুলকানি হয়। পায়খানার সময় ব্যথা হতে পারে। মলদ্বার দিয়ে মাংসপিণ্ড বেরিয়ে আসতে পারে। অনিয়মিত পায়খানা হতে পারে

পরীক্ষা-নিরীক্ষা : রোগের ইতিহাস শুনেই পাইলস কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে।

প্রতিরোধে করণীয় : গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মোটামুটি ৭০ শতাংশ পাইলসের জন্য দায়ী হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্যতা। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দূরে থাকলে পাইলস থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। কোষ্ঠকাঠিন্যের মূল কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত গরুর মাংস, তেলে ভাজা খাবার খাওয়া। যারা ফলমূল, শাকসবজি কম খান, তাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হয় এবং তা থেকে একসময় পাইলস দেখা দেয়। তাই পাইলস প্রতিরোধে নিয়মিত শাকসবজি খাবেন। দৈনিক ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করবেন। গরুর মাংস কম খাবেন। তেলে ভাজা কিংবা চর্বিজাতীয় খাবার কম খাবেন।

চিকিৎসা : পাইলস যাদের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে অর্থাৎ পায়খানার সময় যাদের হালকা ব্যথা হয় কিংবা রক্ত যায়, মলদ্বারের আশপাশে চুলকানি আছে, তারা প্রতিদিন ৪ চামচ ইসুপগুলের ভুসি দিয়ে দৈনিক ২ বেলায় শরবত করে খাবেন (২ মাস)। প্রতিদিন ২-৩ টা আপেল খাবেন (১ মাস)। ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করবেন প্রতিদিন। যেসব খাবার খেলে শক্ত পায়খানা হয়, তা পরিহার করে চলবেন। কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়েরিয়া থাকলে রোগগুলোর চিকিৎসা করবেন। অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। এক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাও কার্যকর।