ঢাকা ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘুরে আসুন মরিচখালি হাওরে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:১৭:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মে ২০১৮
  • ৪৯৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশাল জলরাশির বুকে বিচ্ছিন্ন ছোট ছোট গ্রাম। একেকটাকে যেন ছোট ছোট দ্বীপ। হাওরজুড়ে গলা ডুবিয়ে থাকা হিজল গাছের সারি বা পানির নিচ থেকে জেগে ওঠা করচের বন কিংবা শুশুকের লাফ-ঝাঁপ মুহূর্তেই আপনার মন ভালো করে দেবে। মরিচখালি হাওরটা এমনই।

মরিচখালির প্রধান সৌন্দর্য এখানে খুঁজে পাওয়া যায় পুরোপুরি গ্রামীণ পরিবেশ, স্বকীয়তা। আর শহুরে জীবনে বেড়ে উঠা তরুণ বন্ধুদের কাছে জানা-অজানার মধ্যে লুকিয়ে থাকা এমন সব জায়গাই সবচেয়ে আকর্ষণীয়।

বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা নিচু জেলা কিশোরগঞ্জে এর অবস্থান।

কিশোরগঞ্জের ইটনা, অষ্টগ্রাম, নিকলি এ সকল জায়গার নাম অন্তত হাওর বিলাসী কোনো মানুষেরই অজানা নয়। কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার গুণধর ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত গ্রাম মরিচখালি। প্রতি বর্ষায় হাওর যেখানে নতুন করে যৌবনপ্রাপ্ত হয়। কিন্তু না আছে সেখানে সৌন্দর্যমণ্ডিত বাঁধ, না চমকপ্রদ ঘাট। তবু মন কাড়ে দর্শনার্থীদের।

নৌকা চলতে শুরু করা মাত্রই হারিয়ে যেতে হয় জলরাশির রাজ্যে। দূর থেকে আরো যত দূরে চোখ যাবে  স্নিগ্ধ গ্রামের মতোই শান্ত অথৈ পানি প্রাণ জুড়িয়ে দেবে। জলের সীমানা শেষ হতেই যেন বিস্তৃত আকাশ। তারই মাঝখানে কিছু ঘরবাড়ি। নৌকার চালকদের ই বসবাস এখানে। মাছ ধরার সাথেও জড়িত এ অঞ্চল।

মরিচখালি হাওর এর মাছ বিক্রি হয় প্রতিদিন শহরের বাজারে। কিন্ত তাদের মূল পেশা কৃষি। নৌকার মাঝির সাথে কথা বলে জানা যায়, শুকনো মৌসুমে হাওর পরিণত হয় উর্বর মাঠে। নানা ধরনের সবজি চাষ হয় তখন পুরো সময় জুড়ে।বেশিরভাগ গ্রামের মতোই শিক্ষার হার এখানেও কম। অথচ নৌকায় ঘুরতে ঘুরতে শোনা যাবে মরিচখালি গ্রামের শিশুদের মিষ্টি কণ্ঠে ভাটিয়ালি গান।

জেলেদের নৌকো, শিশুদের সাঁতার কাটা আর হাওর এর মাঝখানে ছোট বড় গাছ প্রায় বিলীন হওয়া বাংলার গ্রামের সৌন্দর্য কে চোখের সামনে ফুটিয়ে তুলবে। দিনশেষে হয়তো ফিরতে হবে আবারো শহুরে জীবনে।কিন্তু প্রতি বর্ষায় এই মরিচখালি গ্রাম হাওর বিলাসীদের মনে তৈরি করতে থাকবে আকাঙ্ক্ষা।

যেভাবে যাবেন –কিশোরগঞ্জ শহর থেকে মরিচখালি যাতায়াত ও খুব সহজ। কিশোরগঞ্জ শহরস্থ একরামপুর এলাকা থেকে সিএনজি অটো বা মোটরসাইকেলে করে যেতে হয় মরিচখালি। ভাড়া মাত্র ৩০-৪০ টাকা। যাত্রাপথের সময়ও কম। এক বা দেড় ঘণ্টার মাঝেই পৌঁছে যাওয়া যায় মরিচখালি ব্রিজে। মরিচখালি ব্রিজ পার হয়ে ওপারে গেলেই পাওয়া যায় ছোট বড় অসংখ্য নৌকা। ঘণ্টায় দুশো টাকা করে পছন্দসই নৌকা ভাড়া করা যায় হাওর বিলাসের জন্য।

যেখানে থাকবেন-কিশোরগঞ্জের বাইরে থেকে আসা অতিথিদের ভ্রমণ শেষে শহরে সার্কিট হাউস বা কোনো হোটেলে উঠতে হবে। তাই ফেরার জন্য পর্যাপ্ত সময় রাখতে ভুলবেন না। তবে করিমগঞ্জ বাজারের উপজেলা ডাক বাংলোতেও থাকতে পারবেন।

সতর্কতা  

* খাবারের সুবব্যবস্থা না থাকায় শুকনো খাবার সঙ্গে নেয়া ভালো।
* কোনো অপচনশীল দ্রব্য ফেলে আসবেন না।
* লাইফজ্যাকেট নিবেন।

সূত্র: আরটিভি অনলাইন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

ঘুরে আসুন মরিচখালি হাওরে

আপডেট টাইম : ০৫:১৭:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশাল জলরাশির বুকে বিচ্ছিন্ন ছোট ছোট গ্রাম। একেকটাকে যেন ছোট ছোট দ্বীপ। হাওরজুড়ে গলা ডুবিয়ে থাকা হিজল গাছের সারি বা পানির নিচ থেকে জেগে ওঠা করচের বন কিংবা শুশুকের লাফ-ঝাঁপ মুহূর্তেই আপনার মন ভালো করে দেবে। মরিচখালি হাওরটা এমনই।

মরিচখালির প্রধান সৌন্দর্য এখানে খুঁজে পাওয়া যায় পুরোপুরি গ্রামীণ পরিবেশ, স্বকীয়তা। আর শহুরে জীবনে বেড়ে উঠা তরুণ বন্ধুদের কাছে জানা-অজানার মধ্যে লুকিয়ে থাকা এমন সব জায়গাই সবচেয়ে আকর্ষণীয়।

বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা নিচু জেলা কিশোরগঞ্জে এর অবস্থান।

কিশোরগঞ্জের ইটনা, অষ্টগ্রাম, নিকলি এ সকল জায়গার নাম অন্তত হাওর বিলাসী কোনো মানুষেরই অজানা নয়। কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার গুণধর ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত গ্রাম মরিচখালি। প্রতি বর্ষায় হাওর যেখানে নতুন করে যৌবনপ্রাপ্ত হয়। কিন্তু না আছে সেখানে সৌন্দর্যমণ্ডিত বাঁধ, না চমকপ্রদ ঘাট। তবু মন কাড়ে দর্শনার্থীদের।

নৌকা চলতে শুরু করা মাত্রই হারিয়ে যেতে হয় জলরাশির রাজ্যে। দূর থেকে আরো যত দূরে চোখ যাবে  স্নিগ্ধ গ্রামের মতোই শান্ত অথৈ পানি প্রাণ জুড়িয়ে দেবে। জলের সীমানা শেষ হতেই যেন বিস্তৃত আকাশ। তারই মাঝখানে কিছু ঘরবাড়ি। নৌকার চালকদের ই বসবাস এখানে। মাছ ধরার সাথেও জড়িত এ অঞ্চল।

মরিচখালি হাওর এর মাছ বিক্রি হয় প্রতিদিন শহরের বাজারে। কিন্ত তাদের মূল পেশা কৃষি। নৌকার মাঝির সাথে কথা বলে জানা যায়, শুকনো মৌসুমে হাওর পরিণত হয় উর্বর মাঠে। নানা ধরনের সবজি চাষ হয় তখন পুরো সময় জুড়ে।বেশিরভাগ গ্রামের মতোই শিক্ষার হার এখানেও কম। অথচ নৌকায় ঘুরতে ঘুরতে শোনা যাবে মরিচখালি গ্রামের শিশুদের মিষ্টি কণ্ঠে ভাটিয়ালি গান।

জেলেদের নৌকো, শিশুদের সাঁতার কাটা আর হাওর এর মাঝখানে ছোট বড় গাছ প্রায় বিলীন হওয়া বাংলার গ্রামের সৌন্দর্য কে চোখের সামনে ফুটিয়ে তুলবে। দিনশেষে হয়তো ফিরতে হবে আবারো শহুরে জীবনে।কিন্তু প্রতি বর্ষায় এই মরিচখালি গ্রাম হাওর বিলাসীদের মনে তৈরি করতে থাকবে আকাঙ্ক্ষা।

যেভাবে যাবেন –কিশোরগঞ্জ শহর থেকে মরিচখালি যাতায়াত ও খুব সহজ। কিশোরগঞ্জ শহরস্থ একরামপুর এলাকা থেকে সিএনজি অটো বা মোটরসাইকেলে করে যেতে হয় মরিচখালি। ভাড়া মাত্র ৩০-৪০ টাকা। যাত্রাপথের সময়ও কম। এক বা দেড় ঘণ্টার মাঝেই পৌঁছে যাওয়া যায় মরিচখালি ব্রিজে। মরিচখালি ব্রিজ পার হয়ে ওপারে গেলেই পাওয়া যায় ছোট বড় অসংখ্য নৌকা। ঘণ্টায় দুশো টাকা করে পছন্দসই নৌকা ভাড়া করা যায় হাওর বিলাসের জন্য।

যেখানে থাকবেন-কিশোরগঞ্জের বাইরে থেকে আসা অতিথিদের ভ্রমণ শেষে শহরে সার্কিট হাউস বা কোনো হোটেলে উঠতে হবে। তাই ফেরার জন্য পর্যাপ্ত সময় রাখতে ভুলবেন না। তবে করিমগঞ্জ বাজারের উপজেলা ডাক বাংলোতেও থাকতে পারবেন।

সতর্কতা  

* খাবারের সুবব্যবস্থা না থাকায় শুকনো খাবার সঙ্গে নেয়া ভালো।
* কোনো অপচনশীল দ্রব্য ফেলে আসবেন না।
* লাইফজ্যাকেট নিবেন।

সূত্র: আরটিভি অনলাইন