ঢাকা শহরের বর্তমান অবস্থাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থাকা রোগীর সঙ্গে তুলনা করেছেন ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক।
রোববার রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে ‘যানজট থেকে উত্তরণের উপায়’ গোলটেবিল আলোচনায় এ তুলনা করেন।
মেয়র আনিসুল হক বলেন, হাসপাতালের আইসিইউতে থাকা ঢাকার ডাক্তার হচ্ছেন মেয়র, যিনি কখনো ডাক্তারি পড়েননি। কিন্তু রোগীকে বাঁচাতে হবে। রোগী মরে যাচ্ছে আর আমরা শুধু গবেষণা করছি। গবেষণা করলে হবে না। আগে রোগীকে বাঁচাতে হবে।
তিনি বলেন, ঢাকাকে বাঁচাতে জরুরি কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। সমস্যার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমাতে হবে। সবাই বলেন, ফুটপাত থেকে হকার তুলে দেন, রাস্তা দখলমুক্ত করুন। কিন্তু এটা অত সহজ নয়। তারা টাকা দিয়ে বসেছেন। তাদের পেছনে শক্ত শক্ত হাত আছে। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি।
মেয়র আনিসুল হক বলেন, সরকার উন্নয়নমূলক কাজ করেছে। কিন্তু যানজট সমালোচনার মুখে ফেলেছে। আমার দায়িত্ব হলো খুব দ্রুত কিছু করতে হবে। অন্তত ৬ মাসে বা এক বছরে এর যেন সমাধান দিতে পারি।
মাত্র দেড় কিলোমিটার করে রাস্তা সব জায়গায় আলাদা করে দিতে সেতুমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করেন মেয়র। বাস মালিকদের কাছে আহবান, নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া বাস কোথাও থামবে না- এটা নিশ্চিত করে দিন।
মেয়র আনিসুল হক বলেন, ভুল করতেও রাজি আছি, কিন্তু কিছু করতে চাই। ভুল ইচ্ছাকৃত হবে না।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মো. মশিউর রহমান রাঙ্গা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মেয়র আনিসুল হককে উদ্দেশ করে বলেন, এক ঝুড়িতে এত ডিম রাখলে হবে না। আগে ছোট পরিকল্পনা নিন, বাস্তবায়ন করুন। রাস্তা দখলমুক্ত করুন। সবাই কিন্তু ভালো ভালো কথা বলে, কিন্তু অ্যাকশন নেই।
দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ঢাকার প্রধান দুটি সমস্যা- যানজট আর জলজট। আলোচনা আমরা প্রায়ই করি। এখন অ্যাকশন দেখতে চাই। যানজট নিরসনের দায়িত্ব ডিএমপির হলেও সিটি করপোরেশন নেতৃত্ব দিতে চায়, ভূমিকা রাখতে চায়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার গোলাম ফারুখ বলেন, অপরিকল্পিত রাস্তা নির্মাণ, রাস্তা ভাঙা, উন্নয়নকাজে রাস্তা বন্ধ থাকা, বিপরীত থেকে আসা গাড়ির কারণে যানজট কমছে না।
বৈঠকে বিভিন্ন স্টেক-হোল্ডার, অন্যান্য বিশেষজ্ঞ ও গবেষক, সুশীল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে মেয়র আনিসুল হক, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট, ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ, বাংলাদেশ প্ল্যানার্স ইনস্টিটিউট।