ঢাকা ০১:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাহারি রঙের লাললেজ মৌটুসি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:০২:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ মে ২০১৮
  • ৪৩৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আবাসিক পাখি। যত্রতত্র দেখা না গেলেও সিলেট-চট্টগ্রাম অঞ্চলে নজর পড়ে। মনোহরণকারী রূপ। কণ্ঠস্বরও সুমধুর। প্রথম দর্শনেই যে কেউ মুগ্ধ হবেন। তবে সেটি অবশ্যই পুরুষ পাখির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কারণ স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারায় রয়েছে বিস্তর তফাৎ। পুরুষের তুলনায় স্ত্রী পাখি অনেকটাই নিষ্প্রভ। এরা অস্থিরমতি ও ফুর্তিবাজ পাখি। সারাদিন নেচে-গেয়ে ব্যস্ত সময় পার করে। কোথাও একদণ্ড বসার জো নেই। পুরুষ পাখির চঞ্চলতায় মুগ্ধ হবেন যে কেউ-ই।

লাফালাফি বা নাচতে গেলে ওদের লম্বা লেজটা সোজা দাঁড়িয়ে যায়। সেই দৃশ্য মনে রাখার মতোই। স্ত্রী পাখির লেজ খাটো হওয়ায় সেরকম কসরত দেখাতে পারে না। প্রজনন মৌসুমে জোড়ায় জোড়ায় দেখা মেলে। প্রজননের বাইরে একাকী দেখা যায়। মূলত এরা নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের বাসিন্দা। দেখা মেলে ক্রান্তীয় আর্দ্র পার্বত্য অরণ্যে। ভূপৃষ্ট থেকে ৪০০০ মিটার উচ্চতায়ও দেখা যাওয়ার নজির রয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়া বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও তিব্বত পর্যন্ত। এ ছাড়া হিমালয় অঞ্চলে দেখা যায়।

পাখির বাংলা নাম: ‘লাললেজ মৌটুসি’, ইংরেজি নাম: ‘ফায়ার-টেইলড সানবার্ড’ (Fire-tailed Sunbird), বৈজ্ঞানিক নাম: Aethopyga ignicauda। এরা ‘আগুন-রঙের বৃহত্তম মৌটুসি’ নামেও পরিচিত।

প্রজাতির পুরুষ পাখি দৈর্ঘ্যে ১৫-২০ সেন্টিমিটার। স্ত্রী পাখি ৭-৮ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারা সম্পূর্ণ ভিন্ন। পুরুষ পাখির মাথা নীলাভ। ঘাড় রক্ত লাল। পিঠ ও লেজ কমলা-লাল। ডানায় জলপাই রঙের সঙ্গে নীলটান। গলা নীলাভ কালচে। বুক হলুদের ওপর কমলা-হলুদ রঙের ডিম্বাকৃতি। বুকের নিচ থেকে লেজতল পর্যন্ত জলপাই হলুদ। শরীরের তুলনায় লেজ বেশ লম্বা। অপরদিকে স্ত্রী পাখির মাথা ধূসর জলপাই। পিঠ গাঢ় জলপাই। ডানায় নীলচে কালো পালক। লেজ খাটো বাদামি। উভয়ের ঠোঁট নীলচে কালো, লম্বা, কাস্তের মতো বাঁকানো। চোখ ও পা কালো।
প্রধান খাবার: ফুলের মধু, ছোট পোকামাকড়, মাকড়সা ইত্যাদি।

প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুন। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। মোচাকৃতির বাসা বাঁধে। গাছের তন্তু, শ্যাওলা, মাকড়সার জাল দিয়ে বাসা বানায়। ডিম পাড়ে ২টি। ফুটতে সময় লাগে ১৫-১৭ দিন।

সূত্রঃ মানবকণ্ঠ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

বাহারি রঙের লাললেজ মৌটুসি

আপডেট টাইম : ০৫:০২:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আবাসিক পাখি। যত্রতত্র দেখা না গেলেও সিলেট-চট্টগ্রাম অঞ্চলে নজর পড়ে। মনোহরণকারী রূপ। কণ্ঠস্বরও সুমধুর। প্রথম দর্শনেই যে কেউ মুগ্ধ হবেন। তবে সেটি অবশ্যই পুরুষ পাখির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কারণ স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারায় রয়েছে বিস্তর তফাৎ। পুরুষের তুলনায় স্ত্রী পাখি অনেকটাই নিষ্প্রভ। এরা অস্থিরমতি ও ফুর্তিবাজ পাখি। সারাদিন নেচে-গেয়ে ব্যস্ত সময় পার করে। কোথাও একদণ্ড বসার জো নেই। পুরুষ পাখির চঞ্চলতায় মুগ্ধ হবেন যে কেউ-ই।

লাফালাফি বা নাচতে গেলে ওদের লম্বা লেজটা সোজা দাঁড়িয়ে যায়। সেই দৃশ্য মনে রাখার মতোই। স্ত্রী পাখির লেজ খাটো হওয়ায় সেরকম কসরত দেখাতে পারে না। প্রজনন মৌসুমে জোড়ায় জোড়ায় দেখা মেলে। প্রজননের বাইরে একাকী দেখা যায়। মূলত এরা নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের বাসিন্দা। দেখা মেলে ক্রান্তীয় আর্দ্র পার্বত্য অরণ্যে। ভূপৃষ্ট থেকে ৪০০০ মিটার উচ্চতায়ও দেখা যাওয়ার নজির রয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়া বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও তিব্বত পর্যন্ত। এ ছাড়া হিমালয় অঞ্চলে দেখা যায়।

পাখির বাংলা নাম: ‘লাললেজ মৌটুসি’, ইংরেজি নাম: ‘ফায়ার-টেইলড সানবার্ড’ (Fire-tailed Sunbird), বৈজ্ঞানিক নাম: Aethopyga ignicauda। এরা ‘আগুন-রঙের বৃহত্তম মৌটুসি’ নামেও পরিচিত।

প্রজাতির পুরুষ পাখি দৈর্ঘ্যে ১৫-২০ সেন্টিমিটার। স্ত্রী পাখি ৭-৮ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারা সম্পূর্ণ ভিন্ন। পুরুষ পাখির মাথা নীলাভ। ঘাড় রক্ত লাল। পিঠ ও লেজ কমলা-লাল। ডানায় জলপাই রঙের সঙ্গে নীলটান। গলা নীলাভ কালচে। বুক হলুদের ওপর কমলা-হলুদ রঙের ডিম্বাকৃতি। বুকের নিচ থেকে লেজতল পর্যন্ত জলপাই হলুদ। শরীরের তুলনায় লেজ বেশ লম্বা। অপরদিকে স্ত্রী পাখির মাথা ধূসর জলপাই। পিঠ গাঢ় জলপাই। ডানায় নীলচে কালো পালক। লেজ খাটো বাদামি। উভয়ের ঠোঁট নীলচে কালো, লম্বা, কাস্তের মতো বাঁকানো। চোখ ও পা কালো।
প্রধান খাবার: ফুলের মধু, ছোট পোকামাকড়, মাকড়সা ইত্যাদি।

প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুন। অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। মোচাকৃতির বাসা বাঁধে। গাছের তন্তু, শ্যাওলা, মাকড়সার জাল দিয়ে বাসা বানায়। ডিম পাড়ে ২টি। ফুটতে সময় লাগে ১৫-১৭ দিন।

সূত্রঃ মানবকণ্ঠ