হাওর বার্তা ডেস্কঃ হাওর মানে অনেকেই মনে করে সাগর। অবশ্য সাগরের সঙ্গে হাওরের একটা মিলও রয়েছে। আর বর্ষাকালে হাওর অনেকটা সাগরের মতোই দেখায়। শহরের মানুষ বর্ষায় হাওর ঘুরতে গেলে এই চিত্র দেখে অনেক আনন্দিত হয়। বাইরে থেকে দেখে হাওরের মানুষের জীবন চিত্র যতটা মনোমুগদ্ধকর মনে হয়, বাস্তবে এর চিত্রটা ভিন্ন। কঠিন সংগ্রামের মাধ্যমে হাওরের মানুষ তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে।
এ হাওরাঞ্চলের মানুষের জীবন নির্বাহ করা যেমন কষ্টকর তেমনি তাদের নেই কোনও নির্দিষ্ট যাতায়ত ব্যবস্থা। হাওরের এ সংগ্রামী জীবনে অনেকটা আশার আলো ফুটিয়েছে সাবমার্সেবল সড়ক। আর এ সাবমার্সেবল সড়কে যাতায়ত ব্যবস্থাকে দ্রুত করেছে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল। এ সড়ক নির্মাণ হওয়ায় ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালকেরা ঢাকার উবার সার্ভিসের মতো সুবিধা দিচ্ছে। যাত্রীদের ইচ্ছে মতো মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে হাওরের যেকোন জায়গা যাতায়ত করতে পরবে।
সাবমার্সেবল সড়ক একদিকে যেমন হাওরের মানুষের যাতায়ত ব্যবস্থাকে সহজ করেছে তেমনি অসংখ্য যুবককে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি দিয়েছে। এ সড়কে কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম এ তিন উপজেলায় প্রায় চার শতাধিক যুবক ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে সংসারের খরচ বহন করছে। বেকারত্ব থেকে মুক্তি পাওয়া এমনি এক যুবকের নাম রাষ্ট্র মিয়া তার বয়স ৩০।
তার বাড়ি মিঠাইমইন উপজেলার কাটখাল ইউনিয়নের কাকুয়া গ্রামে। রাষ্টের বাবা খলিল মিয়া মারা যায় চার বছর হতে চললো। বাবা মারা যাওয়ার পর পরিবারের ১০ সদস্যের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিতে হয় রাষ্ট্রকে। তারপর থেকে রাষ্ট্র মোটরসাইকেল কিনে হাওরের সাবমার্সেবল সড়কে ভাড়ায় চালাতে শুরু করে। প্রতিদিন মোটরসাইকেল চালিয়ে রাষ্ট্র ছয়শত টাকা আয় করে।
রাষ্ট্রের মতো আরো চার শতাধিক যুবক প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করে।
বেকারত্ব গুছিয়ে সংসারের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিয়েছেন অষ্টগ্রামের যুবক নিয়ামত আলী।
নিয়ামত জানান, প্রতিদিন অনেকের ফোন আসে, বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতে। আমরাও অষ্টগ্রাম থেকে মিঠামইন, বাজিতপুর, কুলিয়ারচর, ভৈরব, কিশোরগঞ্জেও নিয়ে যাই।
কিছুদিন আগে রাষ্ট্রের মোটরসাইকেলে চড়ছেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। মোটরসাইকেলে চড়ার ছবি এমপি তৌফিক নিজ ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। এমপির এ পোস্টে ১হাজার ৭শ লাইক ও ২শ ১১টি মন্তব্য এসেছে।
মন্তব্যে অনেকে লিখেছেন- তৌফিক ভাইয়ের দুই নয়ন, অষ্টগ্রাম-ইটনা-মিঠামইনের উন্নয়ন। আবার কেউ কেউ লিখেছেন-এমপি তৌফিকের কোন তুলনা নেই।
সূত্রঃ হাওরবাংলা