হাওর বার্তা ডেস্কঃ বোর ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক। তাই দিন রাত পরিশ্রম করে সোনার ফসল ঘরে তুলতে এখন হাওরপারের কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। পরিবারের মা বাবার সাথে ব্যস্ততা বেড়েছে কৃষক পরিবারের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদেরও।
সুনামগঞ্জ জেলার বৃহৎ বোর ফসলি ধানের হাওর শনির হাওরে গিয়ে এ চিত্রই দেখা গেছে। পর পর দু’বছর অকাল বন্যায় ফসল হারিয়ে হাওর পারের কৃষকরা অনেকটা সর্বশান্ত হয়ে পড়েছিলেন। চলতি বছর ব্যাংক ঋণ,এনজিও ঋণ, মহাজনি ঋণ এমন কি স্বজনদের কাছ থেকে ধার দেনা করে বোর ফসল চাষ করেছিলেন কৃষকরা।
বোর ধান রোপন মৌসুমে হাওরের পানি দ্রুত নিষ্কাশন না হওয়ায় অসময়ে হাওরে বোর ধান রোপন করেন কৃষকরা। ঠিক সে সময় থেকেই কৃষকরা একটু উৎকণ্ঠায় ছিলেন এবারও ধান কাটতে পারবেন কিনা। কিন্তু আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গত সপ্তাহ খানেক পূর্ব থেকে উপজেলার সবক’টি হাওরে বোর ধান কাটার ধুম পড়েছে। শ্রমিক সংকটে অনেকে পাকা ধান কাটতে পারছেন না।
অনেকে আবার বেশী দামে শ্রমিক দিয়ে ধান কাটাচ্ছেন । শ্রমিক সংকটের কারণে বৈশাখ মাসের শুরুতে প্রতি কিয়ার (৩০ শতক)জমি শ্রমিকরা ২ হাজার টাকায় কাটা শুরু করেছেন। সম্প্রতি ধান কাটার ধুম পড়ায় তা বেড়ে ২৪ থেকে ২৫ শ টাকায় দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে সরকার কৃষি অফিসের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াই মেশিন শতকরা ৭০ ভাগ মূল্যহ্রাসে কৃষকদের কেনার সুযোগ করে দিয়েছেন।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, সরকার প্রতি মণ ধানের ন্যায্যমূল্য এক হাজার চল্লিশ টাকা নির্ধারণ করায় কৃষক তার জমি রোপনের খরচ উঠিয়ে অনেকটাই লাভবান হবেন।
আবাহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী ১০ দিনে হাওরপারের কৃষকরা তাদের সোনালী ধান কাটা শেষ করতে পারবেন।
শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের মারালা গ্রামের কৃষক মিয়া হোসেন বলেন, শনির হাওরে এবার ফলন ভাল হয়েছে। দিন ভাল থাকলে ভালভাবেই হাওর থেকে ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারবো।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুস ছালাম বলেন, চলতি বছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে হাওরপাড়ে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটবে।
চলতি বছর তাহিরপুর উপজেলায় ২৩ টি ছোট বড় হাওরে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বোর ধান চাষাবাদ করা হয়েছে।