ঢাকা ১০:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জামালগঞ্জে হাওরে ধান কাটার শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৪০:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ এপ্রিল ২০১৮
  • ২৯৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জামালগঞ্জের সব কটি ইউনিয়নের ছোট বড় হাওরে ধান কাটায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। চলতি বৈশাখ মাসের শুরু থেকেই উপজেলার হালি,পাগনার হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। গেল কদিন আগেই জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা, উপজেলা প্রশাসন থেকে আগামী ৩০ শে এপ্রিল থেকে ভারী বর্ষণের আশংকা জানিয়ে উপজেলার বিভিন্ন মসজিদ, মন্দিরে প্রচার দেওয়া হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে ধান কাটা নিয়ে কৃষকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। অন্য জেলা থেকে তুলনামুলক শ্রমিক কম আসায় এবার শ্রমিক সংকট সহ শ্রমিকের মজুরী দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক কৃষকই মাঠের ধান পেকে গেলেও শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটতে পারছেন না।

চলতি মাসের শুরু থেকে দেশী জাত ধানের সাথে বিআর-২৮ ধান কাটা শুরু হয়েছে। বুকভরা আশা নিয়ে সোনাধান ঘরে তোলতে দিন গুনছেন কৃষকরা। গত বোরো মওসুমে এই সময় ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে একের পর এক তলিয়ে গিয়েছিল জেলার সব ক’টি হাওরের বোরো ফসল। এ বছর এই সময় বোরো ধানের ভার খ্যাত পাগনা হাওর, হালির হাওরে সোনার ফসলে মাঠ ভরে গেছে।

পাগনা হাওরের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, এবার বহু কষ্টে দেনা করে ফসল করছি, আল্লার রহমতে ভালো ফলন হইছে, ধান কাটা শুরু করছি।

কৃষক তোফায়েল আলম চৌধুরী ছানা মিয়া বলেন, গত বছর ফসল ডুবির পর চোখে অন্ধকার দেখেছি, সারা বছর কষ্ট করে দেনা করে ফসল ফলাইছি। ফলনও ভালো হইছে কয়েক দিনের মধ্যেই আামার ধান কাটা শুরু হইব।

কৃষক প্রবাল মিয়া বলেন, ধান কাটা শুরু হইছে, এবার হাওরের বাঁধ হইছে ঠিক মতই। নদীতেও পানি নাই, আল্লায় যদি কয়েকেটা দিন রোদ দেয় তাইলে হাওরের ফসল ঘরে যাইবো।

জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রজব আলী জানান, লম্বাবাঁক গ্রামের কৃষক কবীর হোসেন ও আ: রহিম বিআর-২৮ জাতের ধান কেটেছেন ফলনও হয়েছে ভালো, বর্তমানে শ্রমিক সংকটে আছি আমরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের এপ্রিল মাসের অতিবৃষ্টি ও পাহাঢ়ি ঢলে জেলার ৩ লাখ ২৫ হাজার ৯৯০ টি কৃষক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চলতি বছর জেলার বিভিন্ন হাওরে ২ লাখ ২২ হাজার ৭১৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক ভূঁইয়া বলেন, ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ভারী বর্ষণের বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। যাতে করে কৃষকরা দ্রুত ধান কেটে ফেলতে পারেন।

জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান বলেন, বৈশাখের প্রথম থেকেই জামালগঞ্জের কৃষকরা ধান কাটা শুরু করেছেন। শ্রমিক সংকটে কিছুটা বিপাকে কৃষকরা, জামালগঞ্জের হাওরগুলোতে অর্ধেকের কাছাকাছি ধান কাটা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম বলেন, সুনামগঞ্জের সব ক’টি হাওরের ফসল রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় বাঁধ নির্মাণর কাজ করেছি। বৈরী আবহাওয়ার ব্যাপারে সর্তকতা জারি করা হয়েছে। বৈরী আবহাওয়া না হলে, কৃষকেরা এবার হাসি মুখেই তাঁদের ধান গোলায় তুলতে পারবেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

জামালগঞ্জে হাওরে ধান কাটার শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে

আপডেট টাইম : ০৪:৪০:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ এপ্রিল ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জামালগঞ্জের সব কটি ইউনিয়নের ছোট বড় হাওরে ধান কাটায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। চলতি বৈশাখ মাসের শুরু থেকেই উপজেলার হালি,পাগনার হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। গেল কদিন আগেই জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা, উপজেলা প্রশাসন থেকে আগামী ৩০ শে এপ্রিল থেকে ভারী বর্ষণের আশংকা জানিয়ে উপজেলার বিভিন্ন মসজিদ, মন্দিরে প্রচার দেওয়া হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে ধান কাটা নিয়ে কৃষকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। অন্য জেলা থেকে তুলনামুলক শ্রমিক কম আসায় এবার শ্রমিক সংকট সহ শ্রমিকের মজুরী দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক কৃষকই মাঠের ধান পেকে গেলেও শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটতে পারছেন না।

চলতি মাসের শুরু থেকে দেশী জাত ধানের সাথে বিআর-২৮ ধান কাটা শুরু হয়েছে। বুকভরা আশা নিয়ে সোনাধান ঘরে তোলতে দিন গুনছেন কৃষকরা। গত বোরো মওসুমে এই সময় ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে একের পর এক তলিয়ে গিয়েছিল জেলার সব ক’টি হাওরের বোরো ফসল। এ বছর এই সময় বোরো ধানের ভার খ্যাত পাগনা হাওর, হালির হাওরে সোনার ফসলে মাঠ ভরে গেছে।

পাগনা হাওরের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, এবার বহু কষ্টে দেনা করে ফসল করছি, আল্লার রহমতে ভালো ফলন হইছে, ধান কাটা শুরু করছি।

কৃষক তোফায়েল আলম চৌধুরী ছানা মিয়া বলেন, গত বছর ফসল ডুবির পর চোখে অন্ধকার দেখেছি, সারা বছর কষ্ট করে দেনা করে ফসল ফলাইছি। ফলনও ভালো হইছে কয়েক দিনের মধ্যেই আামার ধান কাটা শুরু হইব।

কৃষক প্রবাল মিয়া বলেন, ধান কাটা শুরু হইছে, এবার হাওরের বাঁধ হইছে ঠিক মতই। নদীতেও পানি নাই, আল্লায় যদি কয়েকেটা দিন রোদ দেয় তাইলে হাওরের ফসল ঘরে যাইবো।

জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রজব আলী জানান, লম্বাবাঁক গ্রামের কৃষক কবীর হোসেন ও আ: রহিম বিআর-২৮ জাতের ধান কেটেছেন ফলনও হয়েছে ভালো, বর্তমানে শ্রমিক সংকটে আছি আমরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের এপ্রিল মাসের অতিবৃষ্টি ও পাহাঢ়ি ঢলে জেলার ৩ লাখ ২৫ হাজার ৯৯০ টি কৃষক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চলতি বছর জেলার বিভিন্ন হাওরে ২ লাখ ২২ হাজার ৭১৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক ভূঁইয়া বলেন, ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ভারী বর্ষণের বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। যাতে করে কৃষকরা দ্রুত ধান কেটে ফেলতে পারেন।

জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান বলেন, বৈশাখের প্রথম থেকেই জামালগঞ্জের কৃষকরা ধান কাটা শুরু করেছেন। শ্রমিক সংকটে কিছুটা বিপাকে কৃষকরা, জামালগঞ্জের হাওরগুলোতে অর্ধেকের কাছাকাছি ধান কাটা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম বলেন, সুনামগঞ্জের সব ক’টি হাওরের ফসল রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় বাঁধ নির্মাণর কাজ করেছি। বৈরী আবহাওয়ার ব্যাপারে সর্তকতা জারি করা হয়েছে। বৈরী আবহাওয়া না হলে, কৃষকেরা এবার হাসি মুখেই তাঁদের ধান গোলায় তুলতে পারবেন।