ঢাকা ০১:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

টাঙ্গুয়ায় হাওরে পানি ঢোকা অব্যাহত ৭-৮ হাজার জমি ডুবে যাবার আশংকা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৮
  • ৩৭৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরের নাওটানা খালের মুখের বাঁধ ভেঙে প্রবল বেগে পানি ঢোকা অব্যাহত রয়েছে। এই বাঁধের কিছু অংশ গত বৃহস্পতিবার ভোর রাতে কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা।

সারাদিন এই অংশ দিয়ে পানি নামায় বাঁধের বিশাল অংশ বৃহস্পতিবার বিকালেই ভেঙে গেছে। প্রবল বেগে হাওরে নামছে সীমান্ত নদী পাটলাইয়ের পানি। এই পানি প্লাবিত করছে ছয় কুড়ি বিল ও নয় কুডি কান্দার টাঙ্গুয়ার হাওরের ফসলি জমিকে।

টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ের ৪ ইউনিয়নের ৮৮ গ্রামের মানুষ এই কান্দা ও বিলের পাড়ে চাষাবাদ করেন। এ কারণে চিন্তিত কৃষকরা। কৃষক ও জনপ্রতিনিধিরা জানালেন, পানি প্রবেশ বন্ধ না হলে ৭-৮ হাজার একর জমির পাকা ধান ডুবে যাবার আশংকা রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই টাঙ্গুয়ার হাওরে ঢুকছে পানি। হাওরের পাশ দিয়ে বহমান সীমান্ত নদী পাটলাই। এই নদী দিয়ে ভারতের মেঘালয়ের পানি বৌলাই হয়ে সুরমা নদীতে নামে। সীমান্তের টেকেরঘাট থেকে নেমে আসা এই নদীপাড়ের গোলাভারি গ্রামের আধা কিলোমিটার উজানের অংশ ভেঙে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে হাওরে।

প্লাবিত করছে ধর্মপাশা উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ বংশিকুন্ডা এবং তাহিরপুর উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের ৮৮ গ্রামের কৃষকের জমি। টাঙ্গুয়ার হাওরের এরালিয়াকোনা, গনিয়াকুরি, লামারগুল, টানেরগুল, নান্দিয়া, মাজেরগুল, টুঙ্গামারা, সুনাডুবি, গলগলিয়া, শামসাগর, রাঙামাটিয়াসহ ছয় কুড়ি বিলের পাড়ে এবং কান্দায় রয়েছে এসব জমি। এভাবে পানি ঢোকা অব্যাহত থাকলে হাওরের সকল ফসল ডুবে যাবার আশংকা করছেন কৃষকরা।

হাওরপাড়ের জয়পুর গ্রামের কালা মিয়া বললেন,‘১২ একর জমি চাষাবাদ করেছিলাম। ১ একর কেটেছি, বাকী জমি ডুবে যায় কী-না চিন্তা করছি। গত বছরে এক ছটাক ধানও পাইনি, এবার বাম্পার ফলন হয়েছিল। বাঁধ কাটায় কপাল পুড়ে কী-না এই শঙ্কায় রয়েছি।’

হাওরপাড়ের গোলাভারী গ্রামের কৃষক সিরাজ মিয়া বলেন, ‘কৃষকদের কষ্টার্জিত ফসল ডুবে যাবার আগেই ভাঙন অংশ বন্ধ করতে হবে।’

বাঁধ নির্মাণকারী সংগঠন টাঙ্গুয়ার হাওর সমাজভিত্তিক টেকসই ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আব্দুছ ছত্তার জানালেন, পাটলাই নদীর জেলেরাই বেশি মাছ ধরার লোভে এই বাঁধ কাটতে পারে। এরা আগেও অনেকবার এভাবে কেটেছে। পানি প্রবল বেগে নামলে মাছের উজাই ওঠে, একদিনে লক্ষাধিক টাকার মাছ ধরতে পারে। বেশি লোভে এই কাজ করেছে দুর্বৃত্তরা।’

তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানালেন, টাঙ্গুয়ার হাওরের ৬০ ভাগ ফসল কাটা হয়ে গেছে। পানি প্রবেশ বন্ধ না করলে টাঙ্গুয়ার হাওরের বাকী ফসল ডুবে যাবার আশংকা রয়েছে। হাওরে পানি প্রবশে করতে করতে একসময় বিলের পাড় ও কান্দার জমি ডুবে যেতে পারে।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বললেন, ‘পানি প্রবেশ ঠেকানো না গেলে ৮ থেকে ৯ হাজার হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা দ্রুত ভাঙন অংশ বন্ধের ব্যবস্থা করবো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সরকারি চাকরিতে ২২ হাজার নতুন নিয়োগের ঘোষণা আসছে

টাঙ্গুয়ায় হাওরে পানি ঢোকা অব্যাহত ৭-৮ হাজার জমি ডুবে যাবার আশংকা

আপডেট টাইম : ১০:০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরের নাওটানা খালের মুখের বাঁধ ভেঙে প্রবল বেগে পানি ঢোকা অব্যাহত রয়েছে। এই বাঁধের কিছু অংশ গত বৃহস্পতিবার ভোর রাতে কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা।

সারাদিন এই অংশ দিয়ে পানি নামায় বাঁধের বিশাল অংশ বৃহস্পতিবার বিকালেই ভেঙে গেছে। প্রবল বেগে হাওরে নামছে সীমান্ত নদী পাটলাইয়ের পানি। এই পানি প্লাবিত করছে ছয় কুড়ি বিল ও নয় কুডি কান্দার টাঙ্গুয়ার হাওরের ফসলি জমিকে।

টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ের ৪ ইউনিয়নের ৮৮ গ্রামের মানুষ এই কান্দা ও বিলের পাড়ে চাষাবাদ করেন। এ কারণে চিন্তিত কৃষকরা। কৃষক ও জনপ্রতিনিধিরা জানালেন, পানি প্রবেশ বন্ধ না হলে ৭-৮ হাজার একর জমির পাকা ধান ডুবে যাবার আশংকা রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই টাঙ্গুয়ার হাওরে ঢুকছে পানি। হাওরের পাশ দিয়ে বহমান সীমান্ত নদী পাটলাই। এই নদী দিয়ে ভারতের মেঘালয়ের পানি বৌলাই হয়ে সুরমা নদীতে নামে। সীমান্তের টেকেরঘাট থেকে নেমে আসা এই নদীপাড়ের গোলাভারি গ্রামের আধা কিলোমিটার উজানের অংশ ভেঙে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে হাওরে।

প্লাবিত করছে ধর্মপাশা উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ বংশিকুন্ডা এবং তাহিরপুর উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের ৮৮ গ্রামের কৃষকের জমি। টাঙ্গুয়ার হাওরের এরালিয়াকোনা, গনিয়াকুরি, লামারগুল, টানেরগুল, নান্দিয়া, মাজেরগুল, টুঙ্গামারা, সুনাডুবি, গলগলিয়া, শামসাগর, রাঙামাটিয়াসহ ছয় কুড়ি বিলের পাড়ে এবং কান্দায় রয়েছে এসব জমি। এভাবে পানি ঢোকা অব্যাহত থাকলে হাওরের সকল ফসল ডুবে যাবার আশংকা করছেন কৃষকরা।

হাওরপাড়ের জয়পুর গ্রামের কালা মিয়া বললেন,‘১২ একর জমি চাষাবাদ করেছিলাম। ১ একর কেটেছি, বাকী জমি ডুবে যায় কী-না চিন্তা করছি। গত বছরে এক ছটাক ধানও পাইনি, এবার বাম্পার ফলন হয়েছিল। বাঁধ কাটায় কপাল পুড়ে কী-না এই শঙ্কায় রয়েছি।’

হাওরপাড়ের গোলাভারী গ্রামের কৃষক সিরাজ মিয়া বলেন, ‘কৃষকদের কষ্টার্জিত ফসল ডুবে যাবার আগেই ভাঙন অংশ বন্ধ করতে হবে।’

বাঁধ নির্মাণকারী সংগঠন টাঙ্গুয়ার হাওর সমাজভিত্তিক টেকসই ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আব্দুছ ছত্তার জানালেন, পাটলাই নদীর জেলেরাই বেশি মাছ ধরার লোভে এই বাঁধ কাটতে পারে। এরা আগেও অনেকবার এভাবে কেটেছে। পানি প্রবল বেগে নামলে মাছের উজাই ওঠে, একদিনে লক্ষাধিক টাকার মাছ ধরতে পারে। বেশি লোভে এই কাজ করেছে দুর্বৃত্তরা।’

তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানালেন, টাঙ্গুয়ার হাওরের ৬০ ভাগ ফসল কাটা হয়ে গেছে। পানি প্রবেশ বন্ধ না করলে টাঙ্গুয়ার হাওরের বাকী ফসল ডুবে যাবার আশংকা রয়েছে। হাওরে পানি প্রবশে করতে করতে একসময় বিলের পাড় ও কান্দার জমি ডুবে যেতে পারে।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বললেন, ‘পানি প্রবেশ ঠেকানো না গেলে ৮ থেকে ৯ হাজার হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা দ্রুত ভাঙন অংশ বন্ধের ব্যবস্থা করবো।