ঢাকা ০৩:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

মাছ ধরতে গিয়ে ফসল রক্ষাবাঁধ কাটলেন জেলেরা, হুমকিতে এক হাজার হেক্টর জমির

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৩১:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ এপ্রিল ২০১৮
  • ২৭৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের নাউটানা ফসল রক্ষাবাঁধ কেটে দেওয়ায় হাওরের এক হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান হুমকির মুখে পড়েছে। পানিতে এসব জমির ৫০ শতাংশ ধান তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে সবার অগোচরে একদল জেলে তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের গোলাবাড়ি গ্রামসংলগ্ন নাউটানা বাঁধটি কেটে দেয়। পানিতে জাল ফেলে মাছ ধরার জন্য তারা এই কাজ করেন বলে দাবি করা হচ্ছে। এই ঘটনার পর টাঙ্গুয়ার  হাওরের এরালিয়াকোনা, গনিয়াকুরি, লামারগুল, টানেরগুল, নান্দিয়া, মাজেরগুল, টুঙ্গামারা, সুনাডুবি, গলগলিয়া, শামসাগর হাওরের ধান হুমকির মুখে পড়েছে।

ফসল রক্ষাবাঁধ কাটার ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকালে টাংগুয়ার হাওরের কমিউনিটি গার্ডের সদস্য খসরুল আলম বাদী হয়ে তাহিরপুর থানায় আটজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৯০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ রামসিংহপুর  গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে আনোয়ার হোসেনকে (২৮) গ্রেফতারও করেছে।

টাঙ্গুয়ার হাওরের সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটি এ বাঁধটি নির্মাণ করে। এই সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির কোষাধ্যক্ষ খসরুল  আলম বলেন, ‘টাঙ্গুয়ার হাওরের নাউটানা বাঁধের পুরনো বাঁধটিতে এবারও মাটি ফেলা হয়েছে। একশ্রেণির  অসৎ জেলে হয়তো মাছ ধরার জন্য বাঁধটি কেটে দিয়েছে।

শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাজিনুর মিয়া জানান, ‘নাওটানা খালটি বৃহস্পতিবার ভোররাতে কে বা কারা কেটে দিয়েছে। বাঁধটি কেটে দেওয়ায় টাঙ্গুয়ার  হাওরের ৫০ ভাগ ফসল পানির নিচে তলিয়ে যাবে।’

তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘হাওরের বাঁধটি কেটে দেওয়ায় ফসলের তেমন কোনও ক্ষতি হবে না। কারণ, মানুষ ধান কেটে ফেলছে। এছাড়া পুরো হাওরে পানি ঢুকতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। তবে ১৫০০ কৃষকের ১০০০ হেক্টর জমির বোরো ফসল ঝুঁকিতে আছে।’

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক ভুঁইয়া বলেন, ‘বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনও বাঁধ নয়। এটি টাঙ্গুয়ার হাওরের কমিউনিটি সদস্যদের তৈরি করা বাঁধ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সব বাঁধ এখনও নিরাপদ রয়েছে।’

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নন্দন কান্তি ধর বলেন, ‘বাঁধ কাটার ঘটনায় খসরুল আলম বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন এবং একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

উল্লেখ্য, টাঙ্গুয়ার হাওরের অন্তর্গত ছোট-বড় ১০টি হাওরে উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের কৃষকদের জমি রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সরকারি চাকরিতে ২২ হাজার নতুন নিয়োগের ঘোষণা আসছে

মাছ ধরতে গিয়ে ফসল রক্ষাবাঁধ কাটলেন জেলেরা, হুমকিতে এক হাজার হেক্টর জমির

আপডেট টাইম : ০৫:৩১:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ এপ্রিল ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের নাউটানা ফসল রক্ষাবাঁধ কেটে দেওয়ায় হাওরের এক হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান হুমকির মুখে পড়েছে। পানিতে এসব জমির ৫০ শতাংশ ধান তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে সবার অগোচরে একদল জেলে তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের গোলাবাড়ি গ্রামসংলগ্ন নাউটানা বাঁধটি কেটে দেয়। পানিতে জাল ফেলে মাছ ধরার জন্য তারা এই কাজ করেন বলে দাবি করা হচ্ছে। এই ঘটনার পর টাঙ্গুয়ার  হাওরের এরালিয়াকোনা, গনিয়াকুরি, লামারগুল, টানেরগুল, নান্দিয়া, মাজেরগুল, টুঙ্গামারা, সুনাডুবি, গলগলিয়া, শামসাগর হাওরের ধান হুমকির মুখে পড়েছে।

ফসল রক্ষাবাঁধ কাটার ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকালে টাংগুয়ার হাওরের কমিউনিটি গার্ডের সদস্য খসরুল আলম বাদী হয়ে তাহিরপুর থানায় আটজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৯০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ রামসিংহপুর  গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে আনোয়ার হোসেনকে (২৮) গ্রেফতারও করেছে।

টাঙ্গুয়ার হাওরের সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটি এ বাঁধটি নির্মাণ করে। এই সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির কোষাধ্যক্ষ খসরুল  আলম বলেন, ‘টাঙ্গুয়ার হাওরের নাউটানা বাঁধের পুরনো বাঁধটিতে এবারও মাটি ফেলা হয়েছে। একশ্রেণির  অসৎ জেলে হয়তো মাছ ধরার জন্য বাঁধটি কেটে দিয়েছে।

শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাজিনুর মিয়া জানান, ‘নাওটানা খালটি বৃহস্পতিবার ভোররাতে কে বা কারা কেটে দিয়েছে। বাঁধটি কেটে দেওয়ায় টাঙ্গুয়ার  হাওরের ৫০ ভাগ ফসল পানির নিচে তলিয়ে যাবে।’

তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘হাওরের বাঁধটি কেটে দেওয়ায় ফসলের তেমন কোনও ক্ষতি হবে না। কারণ, মানুষ ধান কেটে ফেলছে। এছাড়া পুরো হাওরে পানি ঢুকতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। তবে ১৫০০ কৃষকের ১০০০ হেক্টর জমির বোরো ফসল ঝুঁকিতে আছে।’

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক ভুঁইয়া বলেন, ‘বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনও বাঁধ নয়। এটি টাঙ্গুয়ার হাওরের কমিউনিটি সদস্যদের তৈরি করা বাঁধ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সব বাঁধ এখনও নিরাপদ রয়েছে।’

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নন্দন কান্তি ধর বলেন, ‘বাঁধ কাটার ঘটনায় খসরুল আলম বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন এবং একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

উল্লেখ্য, টাঙ্গুয়ার হাওরের অন্তর্গত ছোট-বড় ১০টি হাওরে উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের কৃষকদের জমি রয়েছে।