ঢাকা ০১:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েন থাকছে না

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:০৯:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ এপ্রিল ২০১৮
  • ৩০০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনা সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে না। নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হবে। বৃহস্পতিবার গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কয়েকদিন ধরে বিএনপির পক্ষ থেকে এ দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করার দাবি জানানো হয়েছে।

সূত্র জানায়, ওই সভায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা।

তবে তাদের আশঙ্কা, এখন পরিস্থিতি ভালো থাকলেও ভোটের সময়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের গুজব ছড়িয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তাদের কেউ কেউ। এমন আশঙ্কা থেকে ভোটের সময়ে ফেসবুকসহ সামাজিকমাধ্যমগুলো বন্ধের প্রস্তাব দেন তারা।

এছাড়া গাজীপুর ও খুলনায় শিল্প প্রতিষ্ঠান থাকায়, এ দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মহান মে দিবসে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিতে না পারে, সেজন্য বৈঠক থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

ওই সভায় খুলনার তুলনায় গাজীপুরের পরিস্থিতি নিয়ে বেশি শঙ্কা প্রকাশ করেন কয়েকটি সংস্থার প্রতিনিধিরা। তাদের মতে, জামিনে থাকা কয়েকজন জঙ্গির (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) বাড়ি গাজীপুরে। তারা সেখানে অবস্থান করছে। এসব জঙ্গির ওপর নজরদারি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

এছাড়া নির্বাচনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে যাতে কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সে লক্ষ্যে গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইসিকে বৈঠকের পরামর্শ দেয়া হয়।

বৈঠকে সিইসি ও অন্য কমিশনাররা বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ দু’সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলা, অনিয়ম, গাফিলতি পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসির সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনা মোতায়েন করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, যে কোনো স্থানীয় নির্বাচনে কোনোভাবেই সেনা মোতায়েন হবে না।

গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমাদের আধাসামরিক বাহিনীর সঙ্গে বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্য থাকবে। প্রয়োজনে অন্য যে কোনো এলাকা থেকে আরও বেশিসংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এ দুই সিটি কর্পোরেশনে মোতায়েন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, স্যোশাল মিডিয়া দিয়ে অনেক ধরনের প্রোপাগান্ডা চালানো হয়, গুজব ছড়ানো হয়। এটা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়- সেই বিষয়ে প্রস্তাব এসেছে। নির্বাচন কমিশন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়েছেন। বিটিআরসি, মোবাইল অপারেটরসহ যারা স্যোশাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করে, কমিশন তাদের সঙ্গে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ভোটের সময়ে মোবাইল ফোন বা ফেসবুক বন্ধ রাখা হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেসবুক ব্যবহার করে কিভাবে গুজব রটিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে, সেটাকে উদাহরণ হিসেবে টেনে নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বলা হয়েছে, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যদি গুজব রটে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন বিষয়। সেটা কিভাবে কন্ট্রোল করা যায় বা গুজব না ছড়ানোর সুযোগ দিয়ে কিভাবে স্যোশাল মিডিয়াকে ব্যবহার করা যায়, সেই ব্যাপারে বিটিআরসি ও মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সচিব জানান, দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে (বৃহস্পতিবার) কেন্দ্রীয় আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় সভা হয়েছে। এতে অংশ নেয়া সবাই জানিয়েছেন, আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। সিইসি তাদের বক্তব্য শুনেছেন এবং কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন।

গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আগামী ১৫ মে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গাজীপুরে সাতজন মেয়র ও ৩৪০ জন নারী ও সাধারণ কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর খুলনা সিটিতে পাঁচজন মেয়র ও ১৮৬ জন নারী ও সাধারণ কাউন্সিলর রয়েছেন।

ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভার কার্যপত্রে প্রতিটি ওয়ার্ডে পুলিশের একটি ও র‌্যাবের একটি মোবাইল টিম রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ হিসাবে গাজীপুরে ৫৭টি করে এবং খুলনায় ৩১টি টিম থাকার কথা। কিন্তু বৈঠকে পর্যালোচনার পর ওই সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।

আরও জানা গেছে, সভায় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ফেসবুকের গুজব থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কার্যালয়ে হামলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটের আগে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। ওই দুই সিটিতে প্রচুরসংখ্যক ভাসমান ভোটার রয়েছে, যারা শিল্প-কারখানায় চাকরি করে।

ভোটের মতো স্পর্শকতার সময়ে এমন পরিস্থিতি হলে তা নিয়ন্ত্রণ করা দুরূহ হবে। তাই ভোটের সময়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের প্রস্তাব দেন তারা। তবে এমন আশঙ্কার জবাবে সিইসি তাদের বলেছেন, গুজব বন্ধে কার্যকর মাধ্যম হচ্ছে কাউন্সিলিং। প্রতিটি সংস্থা তাদের জনবল এবং রিটার্নিং কর্মকর্তার পক্ষ থেকে প্রার্থীদের কাউন্সিলিং করা হলে গুজব রটিয়েও পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে পারবে না।

সূত্র জানায়, সভায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা বলেন, ভৌগোলিক অবস্থান (ঢাকার পাশে থাকা), যাতায়াত ব্যবস্থা, ভোটার ও জনসংখ্যাসহ কয়েকটি দিক বিবেচনায় খুলনার তুলনায় গাজীপুর বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন, যার মধ্যে একটি অংশ ভাসমান।

অপরদিকে খুলনার ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার। এছাড়া গাজীপুরের অনেক ভোট কেন্দ্রে যাতায়াতের পথও খারাপ। ওইসব কেন্দ্রে সহিংসতা হলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সেখানে যাওয়া সময়সাপেক্ষ। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে নিরাপত্তা ছক সাজানোর পরামর্শ দেন তিনি।

বৈঠকে বেশির ভাগ সংস্থা ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা বলেন, গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অনেক শিল্প-কারখানায় বিপুলসংখ্যক শ্রমিক রয়েছে। মহান মে দিবসে এ দুই সিটিতে শ্রমিকদের বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। অধিকার আদায়ের নামে ওই সমাবেশ থেকে যাতে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সেদিকে সবার নজর রাখা প্রয়োজন।

সভায় একজন গোয়েন্দা সংস্কার কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি জামিনে বের হওয়া আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের কয়েকজন জঙ্গি সদস্য গাজীপুরে অবস্থান করছে। ভোটকে সামনে রেখে তারা যাতে কোনো তৎপরতা চালাতে না পারে, সেজন্য তাদের ওপর নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে এসব জঙ্গি আটক করতে হবে।

একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, ভোটের মাঠে এত সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি থাকার পরও কারচুপি ও কেন্দ্র দখল হয়েছে। বিশেষ করে দুপুরের পর কেন্দ্রগুলোতে এ ঘটনা ঘটেছে বেশি। কুমিল্লায় অনেক কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতি হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশিসংখ্যক সদস্য দিয়েও গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। ভোট সুষ্ঠু হবে না। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষ ও কঠোর ভূমিকা আশা করেন।

তার এ বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা।

তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা বলেন, স্থানীয় সরকারের কয়েকটি নির্বাচনে কিছু কিছু কেন্দ্রে ভোটের আগের রাতে ব্যালটে সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে। অনেক কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাই হয়েছে। এসব ঘটনা যাতে দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বৈঠকের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে সিইসি বলেন, সংসদ নির্বাচন অতি সন্নিকটে। তাই গাজীপুর ও খুলনার নির্বাচনকে কমিশন অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হুশিয়ারি উচ্চারণ করে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, সংসদ নির্বাচনের আগে এ দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ইসির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনে কোনো অনিয়ম ও দায়িত্বে অবহেলা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বৈঠক শেষে ইসি সচিব সাংবাদিকদের আরও বলেন, সাধারণ কেন্দ্রে ২২ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে, আর অতি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে থাকবে ২৪ জন। পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে পুলিশের মোবাইল টিম থাকবে, দুই ওয়ার্ড মিলিয়ে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকবে একটি করে র‌্যাবের মোবাইল টিম।

আগের রাতে ব্যালটে সিল মারা বন্ধে ভোটের দিন ব্যালট পেপার কেন্দ্রে পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ৩১ মার্চ তফসিল ঘোষণার পর আজ পর্যন্ত দুই সিটিতে কোনো সমস্যা হয়নি। সব প্রার্থী সমানভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ বা এ ধরনের সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে ব্যালট পেপার বা নির্বাচনী সামগ্রী সকালে বিতরণ করে ভোট গ্রহণ করা সম্ভব নয়। আমাদের পরিকল্পনা আছে, যেসব পৌরসভার ইউএনের অফিসের কাছাকাছি কেন্দ্র আছে, সেগুলো আমরা সকালে ব্যালট পেপার দেব।

এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ইভিএম খুব স্বল্পপরিসরে পরীক্ষামূলকভাবে দু-একটি ওয়ার্ডে ব্যবহার করা হতে পারে। কেন্দ্রগুলো অচিরেই চিহ্নিত করা হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার ব্যাপারে আমরা জোর দিই। গাজীপুরে ৭ জন ও খুলনায় ৫ জন মেয়র প্রার্থী হয়েছেন। নিবন্ধিত ৪০টি দলের সবাই অংশগ্রহণ করলে আমরা খুশি হতাম। নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করুক এই প্রত্যাশা করি।

গাজীপুরের এসপির বিরুদ্ধে বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে সচিব বলেন, আগেও বলেছি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে তা সুনির্দিষ্ট হবে। রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তারা বলেছেন, এসপির কাছ থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা পাচ্ছি। সেখানে তিনি (এসপি) অসহযোগিতা করছেন এমন কেউ বলেনি।

সিইসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পুলিশের আইজি ড. জাভেদ পাটোয়ারী, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) মীর শহীদুল ইসলাম, বিজিবির ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আনিছুর রহমান, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইর মেজবাহ উদ্দিন, ডিজিএফআইর কর্নেল মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, র‌্যাবের কর্নেল মো. আনোয়ার লতিফ খান, গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা, বিভাগীয় কমিশনার, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপাররা উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সরকারি চাকরিতে ২২ হাজার নতুন নিয়োগের ঘোষণা আসছে

দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েন থাকছে না

আপডেট টাইম : ০৯:০৯:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ এপ্রিল ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনা সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে না। নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হবে। বৃহস্পতিবার গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কয়েকদিন ধরে বিএনপির পক্ষ থেকে এ দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করার দাবি জানানো হয়েছে।

সূত্র জানায়, ওই সভায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা।

তবে তাদের আশঙ্কা, এখন পরিস্থিতি ভালো থাকলেও ভোটের সময়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের গুজব ছড়িয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তাদের কেউ কেউ। এমন আশঙ্কা থেকে ভোটের সময়ে ফেসবুকসহ সামাজিকমাধ্যমগুলো বন্ধের প্রস্তাব দেন তারা।

এছাড়া গাজীপুর ও খুলনায় শিল্প প্রতিষ্ঠান থাকায়, এ দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মহান মে দিবসে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিতে না পারে, সেজন্য বৈঠক থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

ওই সভায় খুলনার তুলনায় গাজীপুরের পরিস্থিতি নিয়ে বেশি শঙ্কা প্রকাশ করেন কয়েকটি সংস্থার প্রতিনিধিরা। তাদের মতে, জামিনে থাকা কয়েকজন জঙ্গির (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) বাড়ি গাজীপুরে। তারা সেখানে অবস্থান করছে। এসব জঙ্গির ওপর নজরদারি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

এছাড়া নির্বাচনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে যাতে কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সে লক্ষ্যে গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইসিকে বৈঠকের পরামর্শ দেয়া হয়।

বৈঠকে সিইসি ও অন্য কমিশনাররা বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ দু’সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলা, অনিয়ম, গাফিলতি পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসির সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনা মোতায়েন করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, যে কোনো স্থানীয় নির্বাচনে কোনোভাবেই সেনা মোতায়েন হবে না।

গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমাদের আধাসামরিক বাহিনীর সঙ্গে বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্য থাকবে। প্রয়োজনে অন্য যে কোনো এলাকা থেকে আরও বেশিসংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এ দুই সিটি কর্পোরেশনে মোতায়েন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, স্যোশাল মিডিয়া দিয়ে অনেক ধরনের প্রোপাগান্ডা চালানো হয়, গুজব ছড়ানো হয়। এটা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়- সেই বিষয়ে প্রস্তাব এসেছে। নির্বাচন কমিশন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়েছেন। বিটিআরসি, মোবাইল অপারেটরসহ যারা স্যোশাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করে, কমিশন তাদের সঙ্গে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ভোটের সময়ে মোবাইল ফোন বা ফেসবুক বন্ধ রাখা হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেসবুক ব্যবহার করে কিভাবে গুজব রটিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে, সেটাকে উদাহরণ হিসেবে টেনে নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বলা হয়েছে, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যদি গুজব রটে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন বিষয়। সেটা কিভাবে কন্ট্রোল করা যায় বা গুজব না ছড়ানোর সুযোগ দিয়ে কিভাবে স্যোশাল মিডিয়াকে ব্যবহার করা যায়, সেই ব্যাপারে বিটিআরসি ও মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সচিব জানান, দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে (বৃহস্পতিবার) কেন্দ্রীয় আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় সভা হয়েছে। এতে অংশ নেয়া সবাই জানিয়েছেন, আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। সিইসি তাদের বক্তব্য শুনেছেন এবং কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন।

গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আগামী ১৫ মে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গাজীপুরে সাতজন মেয়র ও ৩৪০ জন নারী ও সাধারণ কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর খুলনা সিটিতে পাঁচজন মেয়র ও ১৮৬ জন নারী ও সাধারণ কাউন্সিলর রয়েছেন।

ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভার কার্যপত্রে প্রতিটি ওয়ার্ডে পুলিশের একটি ও র‌্যাবের একটি মোবাইল টিম রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ হিসাবে গাজীপুরে ৫৭টি করে এবং খুলনায় ৩১টি টিম থাকার কথা। কিন্তু বৈঠকে পর্যালোচনার পর ওই সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।

আরও জানা গেছে, সভায় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ফেসবুকের গুজব থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কার্যালয়ে হামলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটের আগে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। ওই দুই সিটিতে প্রচুরসংখ্যক ভাসমান ভোটার রয়েছে, যারা শিল্প-কারখানায় চাকরি করে।

ভোটের মতো স্পর্শকতার সময়ে এমন পরিস্থিতি হলে তা নিয়ন্ত্রণ করা দুরূহ হবে। তাই ভোটের সময়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের প্রস্তাব দেন তারা। তবে এমন আশঙ্কার জবাবে সিইসি তাদের বলেছেন, গুজব বন্ধে কার্যকর মাধ্যম হচ্ছে কাউন্সিলিং। প্রতিটি সংস্থা তাদের জনবল এবং রিটার্নিং কর্মকর্তার পক্ষ থেকে প্রার্থীদের কাউন্সিলিং করা হলে গুজব রটিয়েও পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে পারবে না।

সূত্র জানায়, সভায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা বলেন, ভৌগোলিক অবস্থান (ঢাকার পাশে থাকা), যাতায়াত ব্যবস্থা, ভোটার ও জনসংখ্যাসহ কয়েকটি দিক বিবেচনায় খুলনার তুলনায় গাজীপুর বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন, যার মধ্যে একটি অংশ ভাসমান।

অপরদিকে খুলনার ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার। এছাড়া গাজীপুরের অনেক ভোট কেন্দ্রে যাতায়াতের পথও খারাপ। ওইসব কেন্দ্রে সহিংসতা হলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সেখানে যাওয়া সময়সাপেক্ষ। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে নিরাপত্তা ছক সাজানোর পরামর্শ দেন তিনি।

বৈঠকে বেশির ভাগ সংস্থা ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা বলেন, গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অনেক শিল্প-কারখানায় বিপুলসংখ্যক শ্রমিক রয়েছে। মহান মে দিবসে এ দুই সিটিতে শ্রমিকদের বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। অধিকার আদায়ের নামে ওই সমাবেশ থেকে যাতে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সেদিকে সবার নজর রাখা প্রয়োজন।

সভায় একজন গোয়েন্দা সংস্কার কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি জামিনে বের হওয়া আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের কয়েকজন জঙ্গি সদস্য গাজীপুরে অবস্থান করছে। ভোটকে সামনে রেখে তারা যাতে কোনো তৎপরতা চালাতে না পারে, সেজন্য তাদের ওপর নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে এসব জঙ্গি আটক করতে হবে।

একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, ভোটের মাঠে এত সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি থাকার পরও কারচুপি ও কেন্দ্র দখল হয়েছে। বিশেষ করে দুপুরের পর কেন্দ্রগুলোতে এ ঘটনা ঘটেছে বেশি। কুমিল্লায় অনেক কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতি হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশিসংখ্যক সদস্য দিয়েও গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। ভোট সুষ্ঠু হবে না। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষ ও কঠোর ভূমিকা আশা করেন।

তার এ বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা।

তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা বলেন, স্থানীয় সরকারের কয়েকটি নির্বাচনে কিছু কিছু কেন্দ্রে ভোটের আগের রাতে ব্যালটে সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে। অনেক কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাই হয়েছে। এসব ঘটনা যাতে দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বৈঠকের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে সিইসি বলেন, সংসদ নির্বাচন অতি সন্নিকটে। তাই গাজীপুর ও খুলনার নির্বাচনকে কমিশন অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হুশিয়ারি উচ্চারণ করে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, সংসদ নির্বাচনের আগে এ দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ইসির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনে কোনো অনিয়ম ও দায়িত্বে অবহেলা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বৈঠক শেষে ইসি সচিব সাংবাদিকদের আরও বলেন, সাধারণ কেন্দ্রে ২২ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবে, আর অতি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে থাকবে ২৪ জন। পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে পুলিশের মোবাইল টিম থাকবে, দুই ওয়ার্ড মিলিয়ে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকবে একটি করে র‌্যাবের মোবাইল টিম।

আগের রাতে ব্যালটে সিল মারা বন্ধে ভোটের দিন ব্যালট পেপার কেন্দ্রে পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ৩১ মার্চ তফসিল ঘোষণার পর আজ পর্যন্ত দুই সিটিতে কোনো সমস্যা হয়নি। সব প্রার্থী সমানভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ বা এ ধরনের সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে ব্যালট পেপার বা নির্বাচনী সামগ্রী সকালে বিতরণ করে ভোট গ্রহণ করা সম্ভব নয়। আমাদের পরিকল্পনা আছে, যেসব পৌরসভার ইউএনের অফিসের কাছাকাছি কেন্দ্র আছে, সেগুলো আমরা সকালে ব্যালট পেপার দেব।

এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ইভিএম খুব স্বল্পপরিসরে পরীক্ষামূলকভাবে দু-একটি ওয়ার্ডে ব্যবহার করা হতে পারে। কেন্দ্রগুলো অচিরেই চিহ্নিত করা হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার ব্যাপারে আমরা জোর দিই। গাজীপুরে ৭ জন ও খুলনায় ৫ জন মেয়র প্রার্থী হয়েছেন। নিবন্ধিত ৪০টি দলের সবাই অংশগ্রহণ করলে আমরা খুশি হতাম। নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করুক এই প্রত্যাশা করি।

গাজীপুরের এসপির বিরুদ্ধে বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে সচিব বলেন, আগেও বলেছি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে তা সুনির্দিষ্ট হবে। রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তারা বলেছেন, এসপির কাছ থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা পাচ্ছি। সেখানে তিনি (এসপি) অসহযোগিতা করছেন এমন কেউ বলেনি।

সিইসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পুলিশের আইজি ড. জাভেদ পাটোয়ারী, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) মীর শহীদুল ইসলাম, বিজিবির ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আনিছুর রহমান, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইর মেজবাহ উদ্দিন, ডিজিএফআইর কর্নেল মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, র‌্যাবের কর্নেল মো. আনোয়ার লতিফ খান, গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা, বিভাগীয় কমিশনার, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপাররা উপস্থিত ছিলেন।