ঢাকা ০৭:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গরুর মূল্য নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই হতাশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৩৯:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  • ৩১৬ বার

সিরাজগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার কান্দাপাড়া পশুর হাটে গরুর মূল্য নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই হতাশ। ক্রেতারা বলছে, গরুর মূল্য বেশি হওয়ায় তারা পশু কিনতে পারছেন না, আবার বিক্রেতারা বলছেন গরুর যে মূল্য বলা হচ্ছে তাতে তাদের খরচের টাকা উঠছে না। এ নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মাঝে হতাশা নেমে এসেছে।

সিরাজগঞ্জের হাটে এক গরু বিক্রেতা বলছেন, গত কয়েকমাস ধরে লালন পালন করার পরও কাঙ্খিত মূল্য না পাওয়ায় অনেকেই গরু ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, সারাদেশে এরই মধ্যে বাজারে ভারতীয় গরুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় গরুর মূল্যে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

সিরাজগঞ্জের বাজারে বহুলী গ্রামের গরু বিক্রেতা রাশেদুল ইসলামের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি জানান, গরুটি ৬ মাস ধরে আমি লালন-পালন করেছি। আমার গরুর যে দাম হাঁকা হচ্ছে তাতে আমার খরচই উঠবে না। তিনি বলেন গরুটি কিনেছিলাম ৩৬ হাজার টাকা দিয়ে। ৬ মাস পালনের পর এখন দাম হাঁকা মাত্র ৩৭/৩৮ হাজার টাকা। তাই তিনি গরুটি ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

ফিরিয়ে নেয়ার তালিকায় আরও পাওয়া গেল সদর উপজেলার শিয়ালকোল গ্রামের বক্কার হোসেন, আব্দুল হাই, আড়িয়া মোহনের মহর আলী, শিলন্দার মমতাজ আলী, বেলকুচি উপজেলার গারামাসী গ্রামের আবুল হোসেন, খামার পাইকোশা গ্রামের আব্দুর রশিদসহ শত শত মানুষের গরু।

এদের মধ্যে অনেক খামারিও রয়েছেন। শিলন্দার খামারি জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনি ৭টি গরু হাটে নিয়ে এসেছিলেন, এর মধ্যে মাত্র একটি গরু বিক্রি হয়েছে। বাকিগুলোর আশানুরুপ মূল্য উঠছে না। যে দাম বলা হচ্ছে তাতে খরচের টাকা উঠে আসবে না।

কান্দাপাড়ার বেপারি শহিদুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন হাট থেকে গরু কিনে কান্দাপাড়া হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন। ক্রেতারা যে দাম বলছে তাতে কেনা দাম থেকে প্রতি গরুতে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা কম বলা হচ্ছে।

হাটকমিটির সদস্য ইদ্রীস আলী জানালেন ঈদের প্রথম হাটে যে বিক্রি হয়েছে তা একেবারেই নগন্য।

তবে দূর-দূরান্ত থেকে আগত বেপারিরা জানালেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি হাটে গরুর আমদানি বেশি হলেও অতিরিক্ত মুল্য হাঁকানোর কারণে গরু ক্রয় করা সম্ভব হয়নি।

গাজীপুরের আজিজুল হক বেপারি জানালেন, প্রতি হাটে তিনি ৩০/৪০টি গরু ক্রয় করে থাকেন। মূল্য বেশি হওয়া বৃহস্পতিবার কান্দাপাড়া হাট থেকে মাত্র ৬টি গরু কিনতে পেরেছেন।

জেলার আড়িয়া মোহনের বেপারি আব্দুর রাজ্জাক, কামারখন্দের চর হরিপুরের বেপারি রিপন জানান, তারা দুজনে মিলে ২৫/৩০টি গরু কিনতে পেরেছেন। তবে সেটা চড়া দামে।

কান্দাপাড়া হাটের ইজারাদার মোঃ আকতার হোসেন মন্ডল জানান, গরুও ব্যাপক আমদানি হলেও বিক্রি হয়েছে খুবই কম। তবে হাটে ভারতীয় কোন গরুর আমদানি ছিলনা বলেও জানান তিনি ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

গরুর মূল্য নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই হতাশ

আপডেট টাইম : ১২:৩৯:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

সিরাজগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার কান্দাপাড়া পশুর হাটে গরুর মূল্য নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই হতাশ। ক্রেতারা বলছে, গরুর মূল্য বেশি হওয়ায় তারা পশু কিনতে পারছেন না, আবার বিক্রেতারা বলছেন গরুর যে মূল্য বলা হচ্ছে তাতে তাদের খরচের টাকা উঠছে না। এ নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মাঝে হতাশা নেমে এসেছে।

সিরাজগঞ্জের হাটে এক গরু বিক্রেতা বলছেন, গত কয়েকমাস ধরে লালন পালন করার পরও কাঙ্খিত মূল্য না পাওয়ায় অনেকেই গরু ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, সারাদেশে এরই মধ্যে বাজারে ভারতীয় গরুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় গরুর মূল্যে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

সিরাজগঞ্জের বাজারে বহুলী গ্রামের গরু বিক্রেতা রাশেদুল ইসলামের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি জানান, গরুটি ৬ মাস ধরে আমি লালন-পালন করেছি। আমার গরুর যে দাম হাঁকা হচ্ছে তাতে আমার খরচই উঠবে না। তিনি বলেন গরুটি কিনেছিলাম ৩৬ হাজার টাকা দিয়ে। ৬ মাস পালনের পর এখন দাম হাঁকা মাত্র ৩৭/৩৮ হাজার টাকা। তাই তিনি গরুটি ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

ফিরিয়ে নেয়ার তালিকায় আরও পাওয়া গেল সদর উপজেলার শিয়ালকোল গ্রামের বক্কার হোসেন, আব্দুল হাই, আড়িয়া মোহনের মহর আলী, শিলন্দার মমতাজ আলী, বেলকুচি উপজেলার গারামাসী গ্রামের আবুল হোসেন, খামার পাইকোশা গ্রামের আব্দুর রশিদসহ শত শত মানুষের গরু।

এদের মধ্যে অনেক খামারিও রয়েছেন। শিলন্দার খামারি জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনি ৭টি গরু হাটে নিয়ে এসেছিলেন, এর মধ্যে মাত্র একটি গরু বিক্রি হয়েছে। বাকিগুলোর আশানুরুপ মূল্য উঠছে না। যে দাম বলা হচ্ছে তাতে খরচের টাকা উঠে আসবে না।

কান্দাপাড়ার বেপারি শহিদুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন হাট থেকে গরু কিনে কান্দাপাড়া হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন। ক্রেতারা যে দাম বলছে তাতে কেনা দাম থেকে প্রতি গরুতে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা কম বলা হচ্ছে।

হাটকমিটির সদস্য ইদ্রীস আলী জানালেন ঈদের প্রথম হাটে যে বিক্রি হয়েছে তা একেবারেই নগন্য।

তবে দূর-দূরান্ত থেকে আগত বেপারিরা জানালেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি হাটে গরুর আমদানি বেশি হলেও অতিরিক্ত মুল্য হাঁকানোর কারণে গরু ক্রয় করা সম্ভব হয়নি।

গাজীপুরের আজিজুল হক বেপারি জানালেন, প্রতি হাটে তিনি ৩০/৪০টি গরু ক্রয় করে থাকেন। মূল্য বেশি হওয়া বৃহস্পতিবার কান্দাপাড়া হাট থেকে মাত্র ৬টি গরু কিনতে পেরেছেন।

জেলার আড়িয়া মোহনের বেপারি আব্দুর রাজ্জাক, কামারখন্দের চর হরিপুরের বেপারি রিপন জানান, তারা দুজনে মিলে ২৫/৩০টি গরু কিনতে পেরেছেন। তবে সেটা চড়া দামে।

কান্দাপাড়া হাটের ইজারাদার মোঃ আকতার হোসেন মন্ডল জানান, গরুও ব্যাপক আমদানি হলেও বিক্রি হয়েছে খুবই কম। তবে হাটে ভারতীয় কোন গরুর আমদানি ছিলনা বলেও জানান তিনি ।