হাওর বার্তা ডেস্কঃ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার রামসাইট খ্যাত পর্যটন সমৃদ্ধ টাংগুয়ার হাওরে প্রতিদিন বেড়াতে আসে হাজার হাজার পর্যটক ও দর্শনার্থীরা। টাংগুয়ার হাওরে বেড়াতে যাবার একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাড়ায় চালিত ইঞ্জিনের নৌকা। এই নৌকা ভাড়া করতে উপজেলার নৌকা ঘাটে গেলেই শুরু হয় নৌকা ভাড়া করা নিয়ে নানান জামেলা। র্দীঘ দিন থেকেই এই নৌকা ভাড়া অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানাযায়, কেউ সকাল থেকে সারাদিন, আবার কেউ বা সারাদিন ও একরাত হাওরে থাকার জন্য ভাড়া করতে গিয়ে শুরু হয় নৌকার মাঝিদের সাথে দর কষাকষি। একটি নৌকায় (বড়) সর্ব মোট ৩জন লোকের প্রয়োজন। আর ছোট নৌকায় দু-জন। বড় নৌকায় ৩ জনের একজন বৈঠা ধরে (সারেং), একজন ইঞ্জিন চালালো ও বন্ধ করা অন্য জন নৌকা ঘাট থেকে বাশানো ও ঘাঠে লাগানো সহ অন্যান্য কাজ করে। এক্ষেত্রে দৈনিক মজুরী জনপ্রতি ৩-৪শত টাকা, তেল খচর সবোর্চ্চ ৫হাজার টাকা হলে হাওরে সারাদিনের জন্য সবোর্চ্চ ২০০০টাকা থেকে ২৫০০টাকা সেখানে ৪-৫হাজার টাকার বেশি আর একদিন, একরাতে হাওরে থাকার জন্য ৩০০০-৩৫০০ হাজার টাকা সবোর্চ্চ নিলেই যতেষ্ট সেখানে ৬-৭ হাজার টাকার বেশি দাবী করছে নৌকার মাঝিরা। এতে করে পর্যটকরা পড়ে যান মহা বিপদে। টাংগুয়ার হাওরে বেড়াতে দেশ-বিদেশ ও দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহর থেকে আসা পর্যটক ও দর্শনার্থীরা হাওরের সুন্দর্য উপভোগ করা শুরুতেই নৌকা ভাড়া দ্বিগুন দাবী করায় প্রতিদিন নতুন নতুন পর্যটকরা বিড়াম্বনার শিকার হচ্ছেন।
ফলে কষ্ট করে তাহিরপুর উপজেলায় এসে অনেকেই বাধ্য হয়ে দ্বিগুন ভাড়া দিয়ে হাওরে যাচ্ছেন সোন্দর্য উপভোগ করতে। আবার অনেক পর্যটক ও দর্শনার্থীরা অতিরিক্ত ভাড়ার কারনে টাংগুয়ার হাওরে না গিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে ফিরে যাচ্ছেন। টাংগুয়ার হাওরে বেড়াতে আসা বিভিন্ন এলাকার পর্যটক ও দর্শনার্থীরা জানান, হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করার আগে আমাদের নৌকা ভাড়ার জামেলা শেষ করতে হয়। আমরা সবাই বেড়াতে আসার সময় নির্দিষ্ট পরিমান টাকা নিয়ে আসি এভাবে ভাড়া বেশি দিলে পড়ে বাড়ি ফিরতে গিয়ে আমাদের টাকার সমস্যায় পড়ে যাই। ভাড়া নির্ধারন না থাকায় নৌকার মাঝি ও মালিকরা যে যার মত নৌকা ভাড়া দাবী করছে।
তারা আরো জানায়,মাঝে মাঝে ঘাঠে দেখা যায় হাওরে বেড়াতে যাওয়ার মত কোন নৌকা নেই তখন সুকৌশলে নৌকা ভাড়া বাড়িয়ে দেয় দ্বিগুন। পরে ভাড়া ঠিকঠাক হলেই নৌকা এনে দেয় পর্যটকদের মাঝিরা। আর আমরা বেড়াতে এসে ফিরে যাব তাই বাধ্য হয়ে টাকা বেশি দিয়েই নৌকা ভাড়া করে টাংগুয়ার হাওরে বেড়াতে যাই। নৌকা ভাড়া নির্ধারনের বিষয়ে একটি কার্য়কর প্রদক্ষেন গ্রহন করা খুবেই প্রয়োজন। না হলে অনেক পর্যটকগন এখানে সে ফিরে যাবে। আর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হলে এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সংখ্যা অনেক গুন বেড়ে যাবে।
আমরা হাওরবাসী সংঘটনের তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্বনয়ক ফেরদৌস আলম জানান, নির্দিষ্ট ভাড়া নির্ধারন না করায় ও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকার কারনে টাংগুয়ার হাওরে যেতে নৌকার ইচ্ছা মত অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে। এই বিষয়ে সুষ্ট সমাধান করা খুবেই প্রয়োজন। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল জানান, টাংগুয়ার হাওরে বেড়াতে আসা পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আর বেড়াতে যাওয়া ইঞ্জিন চালিত নৌকার নির্দিষ্ট ভাড়া নির্ধারন বিষয়ে সবার সাথে আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব। যাতে করে টাংগুয়ার হাওরে বেড়াতে আসা পর্যটকদের অতিরিক্ত ভাড়া দিতে না হয়।