হাওর বার্তা ডেস্কঃ হাওর ও হাওরের মানুষ বাঁচাতে নদী খনন, যথাযথভাবে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ, হাওরে ইজারা প্রথা বাতিল ও প্রকৃত জেলে-কৃষকদের মাছ ধরার অধিকার দেওয়ার দাবিতে সুনামগঞ্জ থেকে দুই দিনের নৌযাত্রা শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনাবাজার এলাকার সুরমা নদী থেকে এই নৌযাত্রা শুরু হয়েছে। জেলা ক্ষেতমজুর সমিতি ও জেলা কৃষক সমিতি এই নৌযাত্রার আয়োজন করেছে। আজ বুধবার কিশোরগঞ্জ জেলার চামরাঘাট এলাকার গিয়ে এই নৌযাত্রা শেষ হবে।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় নৌযাত্রা শুরুর আগে সাচনাবাজার নৌকাঘাটে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জামালগঞ্জ উপজেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অখিল তালুকদার। সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দন, সহ সভাপতি প্রকৌশলী নিমাই গাঙ্গুলি, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক অর্নব সরকার, কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক সুকান্ত সফি কমল ও আবিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লাকী আক্তার, সুনামগঞ্জ জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি চিত্তরঞ্জন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. এনাম আহমেদ, ক্ষেত মজুর সমিতির নেত্রকোনা জেলা শাখার সভাপতি নলীনি কান্ত সরকার, কমিউনিস্ট পার্টির নেতা সংগঠনের নেতা নিরঞ্জন দাস, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সহ সভাপতি দ্বিপাল ভট্টাচার্য প্রমুখ।
নৌযাত্রা শুরু আগে সমাবেশে বক্তারা বলেন,‘নানা সংকটে এখন হাওর ও হাওরের মানুষ। হাওর ভরাট হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় নদীগুলো নাব্যতা হারাচ্ছে। প্রায় প্রতি বছরই হাওরে ফসলহানির ঘটনা ঘটছে। এতে হাওরের মানুষ দিশেহারা। এবার হাওরের পানি নিস্কাশনে বিলম্ব হওয়ায় বোরো আবাদে বিলম্ব হয়েছে। অনেক হাওরে জলাবদ্ধতার কারণে বোরো আবাদ হয়নি। পানি নামছে না। এ জন্য ধেনু ও মেঘনা নদী খনন করতে হবে। এসব নদীর বিভিন্ন স্থানে ভরাট হওয়ার কারণে পানি আটকে আছে।
তাই শুধু হাওরের ভিতরের ছোট ছোট নদী খনন করলে সমস্যা মিটবে না। নদীগুলো খনন না করলে হাওর বাঁচবে না, হাওর থাকবে না। দ্রুত ধেনু ও মেঘনা নদী খননের উদ্যোগ না দিলে এক সময় হাওরে বোরো আবাদ বন্ধ হয়ে যাবে। বক্তারা আরও বলেন, হাওরে প্রকৃত জেলে-কৃষকদের কোনো অধিকার নেই। অথচ তাদের ব্যবহার করে লুটেরা ইজারাদাগোষ্ঠী হাওরকে শেষ করে দিচ্ছে। হাওরগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে ইজারাদেরা। ইজারা প্রথা বাতিল করে হাওরে প্রকৃত জেলে ও কৃষকদের মাছ ধরার অধিকার দিতে হবে।