ঢাকা ০৮:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিন হাওরের গুরুত্বপূর্ণ চার ভাঙন নিয়ে দুশ্চিন্তা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:২০:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মার্চ ২০১৮
  • ২৭৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জেলার বৃহৎ তিন হাওরের গুরুত্বপূর্ণ চার ভাঙন নিয়ে দুশ্চিন্তা শেষ হয়নি কৃষকদের। ঝুঁকিপূর্ণ এই চার ভাঙন হচ্ছে-শনির হাওরের লালুর গোয়ালা ও মনেছার বাঁধ, ছায়ার হাওরের জুয়ারিয়া এবং কালিকোটা হাওরের হাওয়ার বাঁধ। শনির হাওরের লালুর গোয়ালার ভাঙনে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিকে (পিআইসি) প্রায় ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট নয় এলাকাবাসী।

লালুর গোয়ালার ভাঙনের পাশের রাধানগরের কৃষক জয়নাল মিয়া বললেন, ‘জামালগঞ্জ, তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় শনির হাওর। গত বছর লালুর গোয়ালা এবং ঝালোখালীর ভাঙনের পাশের মনেছার বাঁধ ভেঙে হাওর ডুবেছিল। এবারও হাওরের এই দুই অংশ নিয়ে সকলেরই দুশ্চিন্তা। বৌলাই নদীর পাড়ের লালুর গোয়ালার বাঁধ ভাঙর পর হাওরজুড়ে হাহাকার শুরু হয়েছিল। মনেছার ভাঙন আটকাতেও আমরা মাসব্যাপি কাজ করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত আটকানো যায়নি। এবার লালুর গোয়ালায় যেভাবে বাঁধ দেওয়া হয়েছে, এটি টিকবে না। বাঁধ টেকসই করতে হলে গোড়ায় আরও মাটি দিতে হবে। গোড়া বড় করতে হবে। বাঁধের এক পাশে নদী, আরেক পাশে বড় খুর (বড় গর্ত), গর্তের দিকে ভরাট করা ছাড়া উপায় নেই। আমরা বার বার বলেছি, কিন্তু আমলে নিচ্ছে না কেউ।’

মনেছার বাঁধে বালু মাটি দিয়ে কাজ হয়েছে। পানির চাপ হলেই এই অংশ ভেঙে যাবে। মনেছার ভাঙন ঠেকাতে হলে বাঁধের দুই পাশে বেশি করে মাটি ভর্তি বস্তা দিতে হবে। এই ভাঙনের পাশের কিছু আফর আরও উঁচু করতে হবে।’
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পওর বিভাগ-১’এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক ভুইয়া বলেন,‘ঝুঁকি এড়ানোর জন্য লালুর গোয়ালা বাঁধের গোড়ায় মাটি ফেলতে হবে।’ তিনি জানালেন, কোন বাঁধেই কাজ শেষ হয়েছে বলা যাবে না। হাওরের ধান কেটে ঘরে ওঠানোর পূর্ব পর্যন্ত পিআইসির লোকজনকে কাজ করতে হবে।
দিরাই-শাল্লার বৃহৎ হাওর কালিকুটা। এই হাওরের হাওয়ার বাঁধে এবার বরাদ্দ প্রায় ৪০ লাখ টাকা। দুটি পিআইসি বাঁধের কাজ করছে। গত বছরও নামকাওয়াস্তে কাজ হয়েছিল এই বাঁধে। এ কারণে পানি আসার শুরুতেই বাঁধ তলিয়ে হাওর ডুবেছিল। এবারও এই বাঁধ পিয়াইন নদীর পানির ধাক্কা সামলাতে পারবে না বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

কালিকুটা হাওরপাড়ের শ্যামারচরের কৃষক নেতা অমর চাঁদ দাস বললেন, ‘বাঁধের প্রশস্ততা কম হয়েছে। কমপেকশন ও স্লোপ হয়নি। বাঁশ-বস্তাও দেওয়া হয়নি। আমরা বার বার বলেও কাজ করাতে পারছি না।’
দিরাই ও শাল্লা উপজেলার বৃহদাংশ জুড়ে ছায়ার হাওর। এই হাওরের জুয়ারিয়া বাঁধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এবার এই বাঁধে বরাদ্দ হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা। ৫ পিআইসি বাঁধের কাজ করছে। জুয়ারিয়া বাঁধের একটি অংশের একপাশে ভেড়ামোহনা অন্য পাশে রইছ মিয়ার দাইড়। এই অংশে বাঁধের কাজ শেষ হবার আগেই ফাটল ধরেছে।
বাঁধের পাশের গ্রাম শ্রীহাইলের কৃষক জিয়াউর রহমান বললেন,‘বাঁধের গোড়ায় আরও মাটি ভরাট করে বাঁশ বস্তা না দিলে বাঁধ টিকানো যাবে না।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পওর বিভাগ-২’এর নির্বাহী প্রকৌশলী খুশী মোহন সরকার বলেন, ‘জুয়ারিয়া বাঁধ এবং হাওয়ার বাঁধে আরও কাজ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পিআইসির লোকজন কাজ করছে। যেটুকু কাজ করা প্রয়োজন আদায় করবো আমরা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

তিন হাওরের গুরুত্বপূর্ণ চার ভাঙন নিয়ে দুশ্চিন্তা

আপডেট টাইম : ০১:২০:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মার্চ ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জেলার বৃহৎ তিন হাওরের গুরুত্বপূর্ণ চার ভাঙন নিয়ে দুশ্চিন্তা শেষ হয়নি কৃষকদের। ঝুঁকিপূর্ণ এই চার ভাঙন হচ্ছে-শনির হাওরের লালুর গোয়ালা ও মনেছার বাঁধ, ছায়ার হাওরের জুয়ারিয়া এবং কালিকোটা হাওরের হাওয়ার বাঁধ। শনির হাওরের লালুর গোয়ালার ভাঙনে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিকে (পিআইসি) প্রায় ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট নয় এলাকাবাসী।

লালুর গোয়ালার ভাঙনের পাশের রাধানগরের কৃষক জয়নাল মিয়া বললেন, ‘জামালগঞ্জ, তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় শনির হাওর। গত বছর লালুর গোয়ালা এবং ঝালোখালীর ভাঙনের পাশের মনেছার বাঁধ ভেঙে হাওর ডুবেছিল। এবারও হাওরের এই দুই অংশ নিয়ে সকলেরই দুশ্চিন্তা। বৌলাই নদীর পাড়ের লালুর গোয়ালার বাঁধ ভাঙর পর হাওরজুড়ে হাহাকার শুরু হয়েছিল। মনেছার ভাঙন আটকাতেও আমরা মাসব্যাপি কাজ করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত আটকানো যায়নি। এবার লালুর গোয়ালায় যেভাবে বাঁধ দেওয়া হয়েছে, এটি টিকবে না। বাঁধ টেকসই করতে হলে গোড়ায় আরও মাটি দিতে হবে। গোড়া বড় করতে হবে। বাঁধের এক পাশে নদী, আরেক পাশে বড় খুর (বড় গর্ত), গর্তের দিকে ভরাট করা ছাড়া উপায় নেই। আমরা বার বার বলেছি, কিন্তু আমলে নিচ্ছে না কেউ।’

মনেছার বাঁধে বালু মাটি দিয়ে কাজ হয়েছে। পানির চাপ হলেই এই অংশ ভেঙে যাবে। মনেছার ভাঙন ঠেকাতে হলে বাঁধের দুই পাশে বেশি করে মাটি ভর্তি বস্তা দিতে হবে। এই ভাঙনের পাশের কিছু আফর আরও উঁচু করতে হবে।’
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পওর বিভাগ-১’এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক ভুইয়া বলেন,‘ঝুঁকি এড়ানোর জন্য লালুর গোয়ালা বাঁধের গোড়ায় মাটি ফেলতে হবে।’ তিনি জানালেন, কোন বাঁধেই কাজ শেষ হয়েছে বলা যাবে না। হাওরের ধান কেটে ঘরে ওঠানোর পূর্ব পর্যন্ত পিআইসির লোকজনকে কাজ করতে হবে।
দিরাই-শাল্লার বৃহৎ হাওর কালিকুটা। এই হাওরের হাওয়ার বাঁধে এবার বরাদ্দ প্রায় ৪০ লাখ টাকা। দুটি পিআইসি বাঁধের কাজ করছে। গত বছরও নামকাওয়াস্তে কাজ হয়েছিল এই বাঁধে। এ কারণে পানি আসার শুরুতেই বাঁধ তলিয়ে হাওর ডুবেছিল। এবারও এই বাঁধ পিয়াইন নদীর পানির ধাক্কা সামলাতে পারবে না বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

কালিকুটা হাওরপাড়ের শ্যামারচরের কৃষক নেতা অমর চাঁদ দাস বললেন, ‘বাঁধের প্রশস্ততা কম হয়েছে। কমপেকশন ও স্লোপ হয়নি। বাঁশ-বস্তাও দেওয়া হয়নি। আমরা বার বার বলেও কাজ করাতে পারছি না।’
দিরাই ও শাল্লা উপজেলার বৃহদাংশ জুড়ে ছায়ার হাওর। এই হাওরের জুয়ারিয়া বাঁধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এবার এই বাঁধে বরাদ্দ হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা। ৫ পিআইসি বাঁধের কাজ করছে। জুয়ারিয়া বাঁধের একটি অংশের একপাশে ভেড়ামোহনা অন্য পাশে রইছ মিয়ার দাইড়। এই অংশে বাঁধের কাজ শেষ হবার আগেই ফাটল ধরেছে।
বাঁধের পাশের গ্রাম শ্রীহাইলের কৃষক জিয়াউর রহমান বললেন,‘বাঁধের গোড়ায় আরও মাটি ভরাট করে বাঁশ বস্তা না দিলে বাঁধ টিকানো যাবে না।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পওর বিভাগ-২’এর নির্বাহী প্রকৌশলী খুশী মোহন সরকার বলেন, ‘জুয়ারিয়া বাঁধ এবং হাওয়ার বাঁধে আরও কাজ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পিআইসির লোকজন কাজ করছে। যেটুকু কাজ করা প্রয়োজন আদায় করবো আমরা।