ঢাকা ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাট ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠন হচ্ছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:০১:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭
  • ৩৩৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাট ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর আসছে। কাঁচা পাট কিনতে এ খাতের ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠন হচ্ছে। পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে এরই মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেয়েছে। এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপক্ষোয়। তবে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের তুলনায় তহবিলের আকার ছোট হবে।

সূত্র জানায়, কাঁচা পাট কিনতে ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা হবে। এ তহবিল থেকে ব্যবসায়ীরা ২ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় এখনও তহবিলটির অনুমোদন দেয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সম্মতি পাওয়ায় ইতিবাচকভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। অনেক দিন ধরেই ব্যবসায়ীরা কাঁচা পাট কিনতে ১০ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনের দাবি করে আসছেন। তাদের দাবি তহবিল হলে চাষিরা যেমন ন্যায্যমূল্য পাবেন, তেমনি বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত পণ্যের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে। এতে সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের পাটকল সুবিধা পাবে।

ব্যবসায়ীদের ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় গত এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তহবিল গঠনের প্রস্তাব করে। ওই মাসেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ বিষয়ে ইতিবাচক মত দেয়। তবে সেখানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। পাট মন্ত্রণালয় মতামত চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পর্যালোচনার দায়িত্ব দেয় রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোকে (ইপিবি)।

ইপিবি তাদের বিশ্লেষণে উল্লেখ করেছে বিগত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে মোট ১৬ লাখ টন কাঁচা পাট উৎপাদিত হয়েছে। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী (প্রতি টন ৫০ হাজার টাকা বা প্রতি মণ দুই হাজার টাকা) উৎপাদিত পাটের দাম হয় ৮ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে গত অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি থেকে আয় হয়েছে ৯৬ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার ডলার বা প্রায় ৭ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া দেশে উৎপাদিত পাটের একটি অংশ অভ্যন্তরীণ বাজারে ব্যবহার হয়। ফলে দাবিকৃত তহবিল এ খাতের উৎপাদিত মোট পণ্যের দাম বা রফতানি আয়ের চেয়ে বেশি।

এ ছাড়া কাঁচা পাট কেনার ক্ষেত্রে পাটকল মালিক ও মধ্যস্বত্বভোগীদের নিজস্ব তহবিল রয়েছে। ফলে ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করলে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য দেশে উৎপাদিত পাটের মোট মূল্যের ৬০ ভাগ অর্থাৎ ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছে ইপিবি।

এসবের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠনের বিষয়ে মত দিয়েছে। একই সঙ্গে সম্প্রতি এক চিঠিতে তহবিল গঠন করতে অর্থ বিভাগকে সুপারিশও করেছে তারা। জানা গেছে, তহবিলটি হবে রফতানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) আদলে। সব ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান এ তহবিল থেকে অর্থ পাবে।

তবে এ তহবিলের অর্থ দিয়ে শুধু অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে পাট কেনা যাবে। একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ কত টাকা ঋন নিতে পারবেন, এর পরিশোধ মেয়াদ কত সময়ে হবে, এর পরিশোধ পদ্ধতি কী হবে?- তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

পাট ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠন হচ্ছে

আপডেট টাইম : ০১:০১:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাট ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর আসছে। কাঁচা পাট কিনতে এ খাতের ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠন হচ্ছে। পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে এরই মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেয়েছে। এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপক্ষোয়। তবে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের তুলনায় তহবিলের আকার ছোট হবে।

সূত্র জানায়, কাঁচা পাট কিনতে ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা হবে। এ তহবিল থেকে ব্যবসায়ীরা ২ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় এখনও তহবিলটির অনুমোদন দেয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সম্মতি পাওয়ায় ইতিবাচকভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। অনেক দিন ধরেই ব্যবসায়ীরা কাঁচা পাট কিনতে ১০ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনের দাবি করে আসছেন। তাদের দাবি তহবিল হলে চাষিরা যেমন ন্যায্যমূল্য পাবেন, তেমনি বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত পণ্যের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে। এতে সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের পাটকল সুবিধা পাবে।

ব্যবসায়ীদের ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় গত এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তহবিল গঠনের প্রস্তাব করে। ওই মাসেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ বিষয়ে ইতিবাচক মত দেয়। তবে সেখানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। পাট মন্ত্রণালয় মতামত চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পর্যালোচনার দায়িত্ব দেয় রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোকে (ইপিবি)।

ইপিবি তাদের বিশ্লেষণে উল্লেখ করেছে বিগত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে মোট ১৬ লাখ টন কাঁচা পাট উৎপাদিত হয়েছে। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী (প্রতি টন ৫০ হাজার টাকা বা প্রতি মণ দুই হাজার টাকা) উৎপাদিত পাটের দাম হয় ৮ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে গত অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি থেকে আয় হয়েছে ৯৬ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার ডলার বা প্রায় ৭ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া দেশে উৎপাদিত পাটের একটি অংশ অভ্যন্তরীণ বাজারে ব্যবহার হয়। ফলে দাবিকৃত তহবিল এ খাতের উৎপাদিত মোট পণ্যের দাম বা রফতানি আয়ের চেয়ে বেশি।

এ ছাড়া কাঁচা পাট কেনার ক্ষেত্রে পাটকল মালিক ও মধ্যস্বত্বভোগীদের নিজস্ব তহবিল রয়েছে। ফলে ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করলে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য দেশে উৎপাদিত পাটের মোট মূল্যের ৬০ ভাগ অর্থাৎ ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছে ইপিবি।

এসবের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠনের বিষয়ে মত দিয়েছে। একই সঙ্গে সম্প্রতি এক চিঠিতে তহবিল গঠন করতে অর্থ বিভাগকে সুপারিশও করেছে তারা। জানা গেছে, তহবিলটি হবে রফতানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) আদলে। সব ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান এ তহবিল থেকে অর্থ পাবে।

তবে এ তহবিলের অর্থ দিয়ে শুধু অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে পাট কেনা যাবে। একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ কত টাকা ঋন নিতে পারবেন, এর পরিশোধ মেয়াদ কত সময়ে হবে, এর পরিশোধ পদ্ধতি কী হবে?- তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।