ঢাকা ১২:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নাসিরনগরে মন্দিরে হামলা ও ভাংচুরের ২২৮ আসামির বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযোগপত্র

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:৪৯:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৭
  • ৩৬০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে মন্দিরে হামলা ও ভাংচুরের মামলায় ২২৮ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দায়ের করেছে পুলিশ। আজ দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক ফারজানা আহমেদের কাছে এ অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে বলে আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. মাহাবুবুর রহমান জানান। নাসিরনগর গৌরমন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল চৌধুরী বাদী হয়ে দুই থেকে আড়াই হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে এ মামলাটি দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শওকত হোসেন ২২৮ জনের নাম উল্লেখ করে এ অভিযোগপত্র দেন বলে জানান তিনি।

আসামিদের মধ্যে নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ প্রচার সম্পাদক মো. আবুল হাসেম, হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাময়িক বরখাস্ত চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি, হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক মিয়া, চাপরতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সুরুজ আলী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হান্নান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম চকদার, হরিপুর ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি মো. জামাল, হরিপুর গ্রামের কাপ্তান মিয়া, বিল্লাল হোসেন ও মো. জাহাঙ্গীর আলমের নাম রয়েছে। এর মধ্যে আবুল হাসেম ও আব্দুল হান্নান ছাড়া বাকিরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর আদালত থেকে জামিনে মুক্ত আছে।

নাসিরনগর উপজেলার হরিণবেড় গ্রামের রসরাজ দাস নামে এক জেলে ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননাকর ছবি পোস্ট করার অভিযোগ তুলে ২০১৬ সালের ২৯ অক্টোবর তাকে পিটিয়ে পুলিশে দেয় কয়েকজন যুবক।

এর পরদিন এলাকায় মাইকিং করে উপজেলা সদরে পৃথক দুইটি সমাবেশ থেকে ১৫টি মন্দির, শতাধিক ঘরবাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর গত ৪ নভেম্বর ভোরে ও ১৩ নভেম্বর ভোরে ফের উপজেলা সদরে হিন্দুদের অন্তত ছয়টি ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এসব ঘটনায় নাসিরনগর থানায় মোট আটটি মামলা দায়ের করা হয়। বাকি সাতটি মামলার তদন্ত এখনও চলছে।

দলীয় বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে বেকায়দায় ফেলতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাংসদ উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সমর্থকরা এ হামলার নেপথ্যে ছিলেন বলে স্থানীয় নেতাদের ভাষ্য।

নাসিরনগরের এমপি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হকের সঙ্গে মোকতাদির ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের দ্বন্দ্বই এ হামলার কারণ হিসেবে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম নামে এক অনলাইন পত্রিকার অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে।

এই অনুসন্ধানে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখিকে হামলার হোতা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। পরবর্তীতে আঁখিকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নাসিরনগরে মন্দিরে হামলা ও ভাংচুরের ২২৮ আসামির বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযোগপত্র

আপডেট টাইম : ০৮:৪৯:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে মন্দিরে হামলা ও ভাংচুরের মামলায় ২২৮ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দায়ের করেছে পুলিশ। আজ দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক ফারজানা আহমেদের কাছে এ অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে বলে আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. মাহাবুবুর রহমান জানান। নাসিরনগর গৌরমন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল চৌধুরী বাদী হয়ে দুই থেকে আড়াই হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে এ মামলাটি দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শওকত হোসেন ২২৮ জনের নাম উল্লেখ করে এ অভিযোগপত্র দেন বলে জানান তিনি।

আসামিদের মধ্যে নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ প্রচার সম্পাদক মো. আবুল হাসেম, হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাময়িক বরখাস্ত চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি, হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক মিয়া, চাপরতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সুরুজ আলী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হান্নান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম চকদার, হরিপুর ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি মো. জামাল, হরিপুর গ্রামের কাপ্তান মিয়া, বিল্লাল হোসেন ও মো. জাহাঙ্গীর আলমের নাম রয়েছে। এর মধ্যে আবুল হাসেম ও আব্দুল হান্নান ছাড়া বাকিরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর আদালত থেকে জামিনে মুক্ত আছে।

নাসিরনগর উপজেলার হরিণবেড় গ্রামের রসরাজ দাস নামে এক জেলে ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননাকর ছবি পোস্ট করার অভিযোগ তুলে ২০১৬ সালের ২৯ অক্টোবর তাকে পিটিয়ে পুলিশে দেয় কয়েকজন যুবক।

এর পরদিন এলাকায় মাইকিং করে উপজেলা সদরে পৃথক দুইটি সমাবেশ থেকে ১৫টি মন্দির, শতাধিক ঘরবাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর গত ৪ নভেম্বর ভোরে ও ১৩ নভেম্বর ভোরে ফের উপজেলা সদরে হিন্দুদের অন্তত ছয়টি ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এসব ঘটনায় নাসিরনগর থানায় মোট আটটি মামলা দায়ের করা হয়। বাকি সাতটি মামলার তদন্ত এখনও চলছে।

দলীয় বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে বেকায়দায় ফেলতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাংসদ উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সমর্থকরা এ হামলার নেপথ্যে ছিলেন বলে স্থানীয় নেতাদের ভাষ্য।

নাসিরনগরের এমপি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হকের সঙ্গে মোকতাদির ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের দ্বন্দ্বই এ হামলার কারণ হিসেবে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম নামে এক অনলাইন পত্রিকার অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে।

এই অনুসন্ধানে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখিকে হামলার হোতা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। পরবর্তীতে আঁখিকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।