ঢাকা ০৭:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রধানমন্ত্রীকে নমনীয় করতে হিলারির দ্বারস্থ হন ইউনূস

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:১৯:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  • ২২৬ বার

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্যাংকে তার কর্তৃত্ব ধরে রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। ড. ইউনূস যাতে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে থাকতে পারেন, সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাজি করাতে তদবিরের জন্য হিলারি ক্লিনটনকে অনুরোধ জানিয়ে বারবার মেইল পাঠিয়েছিলেন। হিলারিও এ ব্যাপারে চেষ্টা চালান। তবে তার চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হিলারি। এ সময়ে তার ব্যক্তিগত ই-মেইলে এ নিয়ে চিঠি চালাচালি হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর সম্প্রতি হিলারির সাত হাজার ই-মেইল প্রকাশ করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় ব্যক্তিগত ই-মেইলে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যোগাযোগ নিয়ে বিতর্কের মুখে প্রকাশ করা ই-মেইলগুলোর মধ্যে আছে বাংলাদেশ ও ড. ইউনূস-সংক্রান্ত মেইলগুলো।

ড. ইউনূস বর্তমানে ভারত সফরে রয়েছেন। এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে গতকাল ইউনূস সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমকাল। সেন্টারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ খবরের বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূসের কোনো বক্তব্য থাকলে পরে জানানো হবে।

ড. ইউনূস মেইলগুলো নিজে লিখেছিলেন। কিছু মেইল পাঠিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তৎকালীন কর্মকর্তা মেলানি ভারবিসের কাছে। সেগুলো হিলারির অ্যাকাউন্টে পাঠানো (ফরোয়ার্ড) হয়েছিল। এসবের জবাব দিয়েছেন হিলারি। কিছু ক্ষেত্রে যে আইডি থেকে মেইল পাঠানো হয়েছে, সেগুলো মুছে দেওয়া হয়েছে। তবে বিভিন্ন মেইলে উল্লেখ আছে, ড. ইউনূসের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে এবং তা গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কিত। আবার প্রকাশিত মেইলের অনেকগুলোতে হিলারির জবাব মুছে দেওয়া হয়েছে। শ্রেণীভুক্ত নথি হিসেবে বিবেচিত বলে ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে এসব বক্তব্য প্রকাশ করা হবে না। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়, প্রকাশ করা মেইলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ-সংক্রান্ত মেইল আছে ৩১৭টি।

২০০৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর মেলানিকে পাঠানো একটি মেইলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে ওই দিনই বাংলাদেশের ডেইলি স্টারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের কথা বিস্তারিত তুলে ধরে হিলারির উদ্দেশে ইউনূস লেখেন, বাংলাদেশের দৈনিকটিতে প্রকাশিত খবরটি দেখবেন। অন্যান্য পত্রিকায়ও এ নিয়ে খবর প্রকাশ হয়েছে। সংসদে প্রধানমন্ত্রী কী বলেছেন, সেটা নিয়েই খবর। ডেইলি স্টারের খবরের হাইলাইট করা অংশটিতে প্রধানমন্ত্রী মূলত আমাকেই বুঝিয়েছেন, তবে আমার নাম উল্লেখ করা হয়নি। যদি পারেন, আমার সম্পর্কে তার ভয়ঙ্কর মনোভাব দূর করার একটি পথ খুঁজে বের করুন। আপনাকে শান্তির দূত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। তা না হলে এটা ভয়াবহ রূপ নেবে। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক যাবেন। সেখানেই হয়তো হিলারির সঙ্গে তার দেখা হবে।

মেইলটি মেলানি হিলারির কাছে পাঠান ‘হাসিনা ও ইউনূসের চলমান কাহিনী’ লিখে। সেখানে মেলানি যোগ করেন, ইউনূসের সঙ্গে কথা হয়েছে। ইউনূসের আশা, এমন কোনো পথ নিশ্চয়ই আছে, যেটা দিয়ে তাকে (প্রধানমন্ত্রী) নিশ্চিত করানো যাবে যে ইউনূস রাজনীতিতে আগ্রহী নন মোটেও এবং দেশকে একটি আদর্শ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার কাজে প্রধানমন্ত্রী ইউনূসকে ব্যবহার করতে পারেন। কিছু ব্যক্তিগত বিরোধও আছে, যেটার গভীরতা ইউনূস পরিমাপ করতে পারছেন না। অগ্রগতি খুবই খারাপ।

জবাবে ২০ সেপ্টেম্বর হিলারি লেখেন, আগামীকাল ইউনূসের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। দু’জনেই হিলটন ফাউন্ডেশন নিয়ে কথা বলতে চাই। সেখানে আরও বেশি কিছু জানতে পারব। নরওয়ের একটি টেলিভিশন ২০১০ সালের ৩০ নভেম্বর গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করে। এর ভিত্তিতে বিডিনিউজ যে খবর প্রচার করে, তা-ও উঠে এসেছে মেইল চালাচালিতে। হিলারিকে জানানো হয়, প্রামাণ্যচিত্রে বলা হয়েছে, ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা অন্যত্র স্থানান্তর করেছেন। তবে ওই টাকা ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ছিল না।

২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর একটি মেইল পাঠানো হয় মেলানিকে। এতে প্রেরকের অংশটি সাদা। মেইলের বেশ কিছু অংশ মুছে প্রকাশ করা হয়েছে। নিচে একটি নোটে প্রকাশ করা হয় ইউনূসের পরিস্থিতি। এতে লেখা হয়েছে- প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, নোবেল বিজয়ী ইউনূসের বিরুদ্ধে বিদেশি সাহায্য গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অন্য কোম্পানিতে পাঠানোর যে অভিযোগ, সেসব পুনরায় তদন্ত করা হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ অনেক উদাহরণ তৈরি করেছে। টাকা আত্মসাৎ করে ধোঁকা দেওয়াটাও একটা উদাহরণ। গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণে দরিদ্রদের জীবনে কোনোই উন্নতি আসেনি। দরিদ্র মানুষ শুধু বিদেশি সাহায্য পাওয়ার দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষকে গিনিপিগের মতো ব্যবহার করা হয়েছে। আমি কখনও এটা সমর্থন করিনি।’

মার্কিন কর্মকর্তা মেলানির কাছে পাঠানো একটি মেইলে ড. ইউনূস অনুরোধ জানান, বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে যেন গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে কথা বলেন হিলারি ক্লিনটন। ওই মেইল ‘ইউনূস এখনও গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে খুব বেশি আগ্রহী’ উল্লেখ করে হিলারি ক্লিনটনকে ফরোয়ার্ড করেন মেলানি।

ড. ইউনূস মেইলে লিখেছেন, প্রিয় মেলানি, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা। জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমেরিকা ভ্রমণের ব্যাপারে কথা বলতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ১৬ সেপ্টেম্বর। তখন গ্রামীণ ব্যাংকের বিষয়টি বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে তুলতে পারলে ভালো হবে।

আমরা বাংলাদেশে অবস্থিত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের পরামর্শে আমাদের সমস্যাগুলো জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটা বৈঠকের চেষ্টা করেছিলাম। ছয় মাস হতে চলল, এর কোনো জবাব পাইনি।

দেশের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি আমাকে প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম (ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র ড. ইউনূসকে এই পদক দিয়েছিল) পাওয়ার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী এখনও একটি কথাও বলেননি। নিশ্চয়ই আপনি সমস্যার গভীরতা বুঝতে পারছেন।সূত্র :সমকাল

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রধানমন্ত্রীকে নমনীয় করতে হিলারির দ্বারস্থ হন ইউনূস

আপডেট টাইম : ০৪:১৯:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্যাংকে তার কর্তৃত্ব ধরে রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। ড. ইউনূস যাতে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে থাকতে পারেন, সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাজি করাতে তদবিরের জন্য হিলারি ক্লিনটনকে অনুরোধ জানিয়ে বারবার মেইল পাঠিয়েছিলেন। হিলারিও এ ব্যাপারে চেষ্টা চালান। তবে তার চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হিলারি। এ সময়ে তার ব্যক্তিগত ই-মেইলে এ নিয়ে চিঠি চালাচালি হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর সম্প্রতি হিলারির সাত হাজার ই-মেইল প্রকাশ করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় ব্যক্তিগত ই-মেইলে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যোগাযোগ নিয়ে বিতর্কের মুখে প্রকাশ করা ই-মেইলগুলোর মধ্যে আছে বাংলাদেশ ও ড. ইউনূস-সংক্রান্ত মেইলগুলো।

ড. ইউনূস বর্তমানে ভারত সফরে রয়েছেন। এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে গতকাল ইউনূস সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমকাল। সেন্টারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ খবরের বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূসের কোনো বক্তব্য থাকলে পরে জানানো হবে।

ড. ইউনূস মেইলগুলো নিজে লিখেছিলেন। কিছু মেইল পাঠিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তৎকালীন কর্মকর্তা মেলানি ভারবিসের কাছে। সেগুলো হিলারির অ্যাকাউন্টে পাঠানো (ফরোয়ার্ড) হয়েছিল। এসবের জবাব দিয়েছেন হিলারি। কিছু ক্ষেত্রে যে আইডি থেকে মেইল পাঠানো হয়েছে, সেগুলো মুছে দেওয়া হয়েছে। তবে বিভিন্ন মেইলে উল্লেখ আছে, ড. ইউনূসের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে এবং তা গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কিত। আবার প্রকাশিত মেইলের অনেকগুলোতে হিলারির জবাব মুছে দেওয়া হয়েছে। শ্রেণীভুক্ত নথি হিসেবে বিবেচিত বলে ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে এসব বক্তব্য প্রকাশ করা হবে না। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়, প্রকাশ করা মেইলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ-সংক্রান্ত মেইল আছে ৩১৭টি।

২০০৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর মেলানিকে পাঠানো একটি মেইলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে ওই দিনই বাংলাদেশের ডেইলি স্টারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের কথা বিস্তারিত তুলে ধরে হিলারির উদ্দেশে ইউনূস লেখেন, বাংলাদেশের দৈনিকটিতে প্রকাশিত খবরটি দেখবেন। অন্যান্য পত্রিকায়ও এ নিয়ে খবর প্রকাশ হয়েছে। সংসদে প্রধানমন্ত্রী কী বলেছেন, সেটা নিয়েই খবর। ডেইলি স্টারের খবরের হাইলাইট করা অংশটিতে প্রধানমন্ত্রী মূলত আমাকেই বুঝিয়েছেন, তবে আমার নাম উল্লেখ করা হয়নি। যদি পারেন, আমার সম্পর্কে তার ভয়ঙ্কর মনোভাব দূর করার একটি পথ খুঁজে বের করুন। আপনাকে শান্তির দূত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। তা না হলে এটা ভয়াবহ রূপ নেবে। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক যাবেন। সেখানেই হয়তো হিলারির সঙ্গে তার দেখা হবে।

মেইলটি মেলানি হিলারির কাছে পাঠান ‘হাসিনা ও ইউনূসের চলমান কাহিনী’ লিখে। সেখানে মেলানি যোগ করেন, ইউনূসের সঙ্গে কথা হয়েছে। ইউনূসের আশা, এমন কোনো পথ নিশ্চয়ই আছে, যেটা দিয়ে তাকে (প্রধানমন্ত্রী) নিশ্চিত করানো যাবে যে ইউনূস রাজনীতিতে আগ্রহী নন মোটেও এবং দেশকে একটি আদর্শ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার কাজে প্রধানমন্ত্রী ইউনূসকে ব্যবহার করতে পারেন। কিছু ব্যক্তিগত বিরোধও আছে, যেটার গভীরতা ইউনূস পরিমাপ করতে পারছেন না। অগ্রগতি খুবই খারাপ।

জবাবে ২০ সেপ্টেম্বর হিলারি লেখেন, আগামীকাল ইউনূসের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। দু’জনেই হিলটন ফাউন্ডেশন নিয়ে কথা বলতে চাই। সেখানে আরও বেশি কিছু জানতে পারব। নরওয়ের একটি টেলিভিশন ২০১০ সালের ৩০ নভেম্বর গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করে। এর ভিত্তিতে বিডিনিউজ যে খবর প্রচার করে, তা-ও উঠে এসেছে মেইল চালাচালিতে। হিলারিকে জানানো হয়, প্রামাণ্যচিত্রে বলা হয়েছে, ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা অন্যত্র স্থানান্তর করেছেন। তবে ওই টাকা ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ছিল না।

২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর একটি মেইল পাঠানো হয় মেলানিকে। এতে প্রেরকের অংশটি সাদা। মেইলের বেশ কিছু অংশ মুছে প্রকাশ করা হয়েছে। নিচে একটি নোটে প্রকাশ করা হয় ইউনূসের পরিস্থিতি। এতে লেখা হয়েছে- প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, নোবেল বিজয়ী ইউনূসের বিরুদ্ধে বিদেশি সাহায্য গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অন্য কোম্পানিতে পাঠানোর যে অভিযোগ, সেসব পুনরায় তদন্ত করা হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ অনেক উদাহরণ তৈরি করেছে। টাকা আত্মসাৎ করে ধোঁকা দেওয়াটাও একটা উদাহরণ। গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণে দরিদ্রদের জীবনে কোনোই উন্নতি আসেনি। দরিদ্র মানুষ শুধু বিদেশি সাহায্য পাওয়ার দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষকে গিনিপিগের মতো ব্যবহার করা হয়েছে। আমি কখনও এটা সমর্থন করিনি।’

মার্কিন কর্মকর্তা মেলানির কাছে পাঠানো একটি মেইলে ড. ইউনূস অনুরোধ জানান, বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে যেন গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে কথা বলেন হিলারি ক্লিনটন। ওই মেইল ‘ইউনূস এখনও গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে খুব বেশি আগ্রহী’ উল্লেখ করে হিলারি ক্লিনটনকে ফরোয়ার্ড করেন মেলানি।

ড. ইউনূস মেইলে লিখেছেন, প্রিয় মেলানি, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা। জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমেরিকা ভ্রমণের ব্যাপারে কথা বলতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ১৬ সেপ্টেম্বর। তখন গ্রামীণ ব্যাংকের বিষয়টি বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে তুলতে পারলে ভালো হবে।

আমরা বাংলাদেশে অবস্থিত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের পরামর্শে আমাদের সমস্যাগুলো জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটা বৈঠকের চেষ্টা করেছিলাম। ছয় মাস হতে চলল, এর কোনো জবাব পাইনি।

দেশের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি আমাকে প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম (ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র ড. ইউনূসকে এই পদক দিয়েছিল) পাওয়ার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী এখনও একটি কথাও বলেননি। নিশ্চয়ই আপনি সমস্যার গভীরতা বুঝতে পারছেন।সূত্র :সমকাল