ঢাকা ০৮:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
সাদপন্থীদের নিষিদ্ধ ও বিচারের দাবিতে মদনে আবারও বিক্ষোভ মিছিল পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বর্ডারে দুর্নীতির কারণে ঠেকানো যাচ্ছে না ‘রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ আব্রাম না থাকলে তাকে আমার যোগ্য বলেও মনে করতাম না ওমরাহ শেষে গ্রামে ফিরে খেজুর-জমজমের পানি বিতরণ করল শিশু রিফাত বিদেশে প্রশিক্ষণে ঘুরে-ফিরে একই ব্যক্তি নয়, জুনিয়রদের অগ্রাধিকার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে সড়ক ছাড়লেন চিকিৎসকরা রেমিট্যান্সে জোয়ার, ২১ দিনে এলো ২ বিলিয়ন ডলার গণমাধ্যমের পাঠক-দর্শক-শ্রোতার মতামত জরিপ জানুয়ারিতে বুয়েট শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩ আসামি রিমান্ডে বিয়ের আগে পরস্পরকে যে প্রশ্নগুলো করা জরুরি

হঠাৎ শুনি আমরা দুই বোন এতিম হয়ে গেছি : প্রধানমন্ত্রী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৩:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  • ২৩৯ বার

লের ৩০ জুলাই আমি ও রেহানা জার্মানী রওনা হই। ১৫ দিনের মাথায় হঠাৎ শুনি আমরা দুই বোন এতিম হয়ে গেছি। নিঃস্ব, রিক্ত হয়ে গেছি। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের বাসায় ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে আমার পিতা-মাতা, ভাইসহ পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের জীবনে যেমন এই দিনটি একটি কালো দিন তেমনি বাংলাদেশের জনগণের জীবনেও নেমে আসে অমানিষার অন্ধকার।

১৫ আগষ্ট ঘাতকের দল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ছিলেন এবং যেদিন তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে সেদিনও তিনি রাষ্ট্রপতি ছিলেন। আমার মা বেগম ফজিলাতুন নেছা, আমার ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, মুক্তিযোদ্ধা লেফটেনেন্ট শেখ জামাল, দশ বছরের ছোট্ট শিশু ভাই শেখ রাসেলকে নির্মমভাবে হত্যা করে। কামাল ও জামালের নব পরিণীতা বধূ যাদের হাত তখনও বিয়ের মেহেদির রঙ রাঙ্গানো, তাদের নির্মমভাবে হত্যা করে। আমার চাচা মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসেরকে হত্যা করে। রাষ্ট্রপতির মিলিটারী সেক্রেটারী কর্নেল জামিলকে হত্যা করে। কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারদের হত্যা করে। একই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মনি এবং তার অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনিকে হত্যা করে। কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, তার ১৩ বছরের ছেলে আরিফ, ৪ বছরের নাতি সুকান্ত, ১৭ বছরের ভাগ্নে রিন্টু, ভ্রাতুস্পুত্র সাংবাদিক শহীদ সেরনিয়াবাত, কাজের মেয়ে ও তার শিশু সন্তান পোটকাসহ আরও অনেককে নির্মমভাবে হত্যা করে।

আমার ফুফু হেলেন গুলির আঘাতে আহত হন। তার পুত্রবধূ সাহানা, ১২ বছরের মেয়ে রীনা, ২০ বছরের বিউটি, ১৮ বছরের ছেলে খোকন গুলির আঘাতে আহত হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করে। একইসঙ্গে ঘাতকরা আমার ছোট ফুফু লিলির বাড়িতে যায় এবং আমার ফুফা সৈয়দ হোসেনকে গ্রেফতার করে এবং ফুফুকে গৃহবন্দী করে রাখে।

১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পরের পরিস্থিতির স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জাতীয় সংসদে এসব কথা বলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় নিজেও কাঁদলেন এবং উপস্থিত এমপিদেরও কাঁদালেন প্রধানমন্ত্রী। বুধবার সংসদের অধিবেশনে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির এ সংক্রান্ত লিখিত প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আবেঘতাড়িত হয়ে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। বিভিষিকাময় সেইসব দিনরাত্রির অভিজ্ঞতা তাকে নতুন শপথে বলিয়ান হয়ে দেশ ও মানুষের কল্যানে আত্মনিয়োগ করার সাহস যুগিয়েছে বলেও জানান সংসদ নেতা। তিনি বলেন, নিজের জীবনকে মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সাদপন্থীদের নিষিদ্ধ ও বিচারের দাবিতে মদনে আবারও বিক্ষোভ মিছিল

হঠাৎ শুনি আমরা দুই বোন এতিম হয়ে গেছি : প্রধানমন্ত্রী

আপডেট টাইম : ১২:১৩:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

লের ৩০ জুলাই আমি ও রেহানা জার্মানী রওনা হই। ১৫ দিনের মাথায় হঠাৎ শুনি আমরা দুই বোন এতিম হয়ে গেছি। নিঃস্ব, রিক্ত হয়ে গেছি। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের বাসায় ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে আমার পিতা-মাতা, ভাইসহ পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের জীবনে যেমন এই দিনটি একটি কালো দিন তেমনি বাংলাদেশের জনগণের জীবনেও নেমে আসে অমানিষার অন্ধকার।

১৫ আগষ্ট ঘাতকের দল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ছিলেন এবং যেদিন তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে সেদিনও তিনি রাষ্ট্রপতি ছিলেন। আমার মা বেগম ফজিলাতুন নেছা, আমার ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, মুক্তিযোদ্ধা লেফটেনেন্ট শেখ জামাল, দশ বছরের ছোট্ট শিশু ভাই শেখ রাসেলকে নির্মমভাবে হত্যা করে। কামাল ও জামালের নব পরিণীতা বধূ যাদের হাত তখনও বিয়ের মেহেদির রঙ রাঙ্গানো, তাদের নির্মমভাবে হত্যা করে। আমার চাচা মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসেরকে হত্যা করে। রাষ্ট্রপতির মিলিটারী সেক্রেটারী কর্নেল জামিলকে হত্যা করে। কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারদের হত্যা করে। একই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মনি এবং তার অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনিকে হত্যা করে। কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, তার ১৩ বছরের ছেলে আরিফ, ৪ বছরের নাতি সুকান্ত, ১৭ বছরের ভাগ্নে রিন্টু, ভ্রাতুস্পুত্র সাংবাদিক শহীদ সেরনিয়াবাত, কাজের মেয়ে ও তার শিশু সন্তান পোটকাসহ আরও অনেককে নির্মমভাবে হত্যা করে।

আমার ফুফু হেলেন গুলির আঘাতে আহত হন। তার পুত্রবধূ সাহানা, ১২ বছরের মেয়ে রীনা, ২০ বছরের বিউটি, ১৮ বছরের ছেলে খোকন গুলির আঘাতে আহত হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করে। একইসঙ্গে ঘাতকরা আমার ছোট ফুফু লিলির বাড়িতে যায় এবং আমার ফুফা সৈয়দ হোসেনকে গ্রেফতার করে এবং ফুফুকে গৃহবন্দী করে রাখে।

১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পরের পরিস্থিতির স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জাতীয় সংসদে এসব কথা বলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় নিজেও কাঁদলেন এবং উপস্থিত এমপিদেরও কাঁদালেন প্রধানমন্ত্রী। বুধবার সংসদের অধিবেশনে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির এ সংক্রান্ত লিখিত প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আবেঘতাড়িত হয়ে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। বিভিষিকাময় সেইসব দিনরাত্রির অভিজ্ঞতা তাকে নতুন শপথে বলিয়ান হয়ে দেশ ও মানুষের কল্যানে আত্মনিয়োগ করার সাহস যুগিয়েছে বলেও জানান সংসদ নেতা। তিনি বলেন, নিজের জীবনকে মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছি।