সম্প্রতি চলচ্চিত্র তারকা নাজনীন আক্তার হ্যাপী চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছেন। এরপরেই তিনি ধর্মের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন এবং তাবলিগ জামায়াতেও যোগ দেন।
সম্প্রতি হ্যাপী তার সমসাময়িক বিষয়গুলো ফেসবুকে তুলে ধরেছেন। পাঠকদের জন্য হ্যাপীর লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘মানুষ হয়ে জন্মে যদি মানুষই হতে না পারলাম তাহলে পরের জন্মে ( মৃত্যুর পর) কিভাবে কিয়ামতের ময়দানে দাড়াবো? সেখানে তো মানুষের বিচার হবে! কোনও মানুষ হয়ে নিজের কর্মের জবাবদিহি করব মানুষ (যে প্রকৃত অর্থেই মানুষ) নাকি মানুষ (যে শুধু দেখতেই মানুষ, কিন্তু মনুষ্যত্ব নেই)?
আমরা এমনই মানুষ যে, সাবলীলভাবেই আমরা সেই মানুষের (যে মানুষ তাকে ভালোবাসে, সম্মান করে এবং গুরুত্ব দেয়) মনে আঘাত করতে পারি,কাঁদাতে পারি,গালি দিতে পারি কিন্তু মন থেকে ভালোবাসতে পারিনা, সম্মান করতে পারি না, গুরুত্ব দিতে পারি না বা ইচ্ছাকৃতভাবেই করি না। একবারও কি চিন্তা করি যে, আমাদের কাছে এইরকম তুচ্ছ বিষয়টা আল্লাহ কত বড় ভাবে বিচার করবেন?
হ্যা! তুচ্ছ তার কাছে যে আল্লাহকে ভয় না করে ঐ কাজগুলো করে, আর যে কষ্ট পায় তার কাছে পৃথিবীতে সেটাই অনেক বেশি কষ্টের কারণ হয়ে দাড়ায় (কষ্টের পরিমাণ যত বেশি হবে, যেই মানুষের দ্বারা কষ্ট পেল সেই মানুষের সাজা আরও ভয়ংকর হতে থাকবে। সেটা ইহকালে বা পরকালেই হোক, কঠিন শাস্তি পেতেই হবে) এবং এই সাজা থেকে ঐ মানুষ মুক্তি পাবে না, যদি না সেই মানুষ তাকে ক্ষমা না করে (এটা বান্দার হক,আল্লাহর হক নষ্ট করলে আল্লাহ চাইলে মাফ করতে পারে কিন্তু যেটা বান্দার সেটা আল্লাহ মাফ করেন না)। একজন মায়ের সামনে যদি তার সন্তানকে কেউ কষ্ট দেয় তাহলে সেই মা অনেক কষ্ট পায় তার চেয়ে অনেক বেশি কষ্ট পায় আল্লাহ, যখন তার কোনও বান্দাকে কেউ কষ্ট দেয়! এটা আল্লাহ সহ্য করতে পারেন না।
যেমন আল্লাহ আমাদের ভালোবেসে তার কাজের জন্য পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন কিন্তু আমরা সেই সৃষ্টিকর্তাকেই ভুলে বসে আছি!
তাকে আমরা ভালোবাসতে পারি না যিনি আমাদের জন্য একের পর এক নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন, পবিত্র আসমানি কিতাব নাযিল করেছেন শুধুমাত্র এই কারণেই যে, আমরা যেন সঠিক পথে চলতে পারি এবং সঠিক পথে চলতে পারলে মহান আল্লাহ এর পুরস্কার হিসাবে রেখেছেন জান্নাত! যেখানে শুধুই সুখ!
কিন্তু আমরা কিছুসময়ের জন্য দুনিয়ার অতিথি হয়ে এসে এই দুনিয়ার জীবন নিয়েই মরিয়া হয়ে উঠেছি। এমন করি যেন আমাদের এই দুনিয়ার জীবনই সবকিছু! কে কার উপরে উঠব?
কে কাকে ঠকাবো? কয়টা বাড়ি-গাড়ি করবো? মানুষকে কিভাবে কষ্ট দেব? শুধু এসবই ভাবি! এটা ভাবিনা যে, আল্লাহ এর জন্য কি করব? কি করার জন্য দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন? কি করলে তিনি খুশি হবেন? নবী-রাসূলগণ কোন পথে চলেছেন? এই দুনিয়া কিছুই না। এই দুনিয়ার কথা যত ভাববো তত পরকালের জীবন কঠিন হয়ে যাবে।
এই দুনিয়া খুব কম সময়ের জন্য। আর এটা ভুলে গেলে সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাবে, আল্লাহের কাছে কোনও প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাবো না। সব অন্ধকার হয়ে যাবে। আল্লাহের পথেই সব সমাধান। চোখের সামনে এই দুনিয়ার সামান্য চকচক করা সুখের পেছনে না ছুটে পরকালের কথা ভাবি আর মানুষ হওয়ার চেষ্টা করি, এতেই মুক্তি। কাউকে কষ্ট না দেই আসুন সবাইকে ভালবাসি,আল্লাহকে খুশি রাখি। আমিন