পঞ্চগড় জেলায় এক দিনের ব্যবধানে আবারও তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রির ঘরে। আজ সোমবার সকাল ৯টায় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।এর আগে গতকাল রবিবার একই সময়ে ১২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। তবে এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা ১২ থেকে ৯ ডিগ্রির ঘরে নেমে আসে।
এদিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পাশাপাশি রবিবার বিকেল থেকে আবারও ঘন কুয়াশা পড়া শুরু হয়েছে। সোমবার সমগ্র এলাকা কুয়াশায় ঢাকা ছিল। সুর্যের মুখ দেখা যায়নি। জেলার উপর দিয়ে হিমালয় পাহাড় থেকে বয়ে আসা হিমশীতল বাতাসে কনকনে হাড়কাঁপানো শীত অনুভূত হচ্ছে।
এর আগে শনিবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর গত শুক্রবার একই সময়ে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস এই তাপমাত্রা রেকর্ড করে।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, সোমবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। আকাশে মেঘ কেটে যাওয়ায় কুয়াশা বেড়ে গেছে।
জানুয়ারিতে তাপমাত্রা আরও কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানান তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের এই কর্মকর্তা।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী এ জেলার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। গত সাত দিন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির উপরে বিরাজ করে এবং শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা ছিল। ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবারও এ জেলার উপর দিয়ে দ্বিতীয় দফায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে।
তবে রবিবার এক দিনের জন্য তাপমাত্রা বেড়ে ১২ ডিগ্রির ঘরে অবস্থান করে। কিন্তু এক দিন পর তাপমাত্রার পারদ আবারও ৯ ডিগ্রির ঘরে নেমে আসে। সোমবার আবারও তৃতীয় দফায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে পরে এই জনপদের মানুষ, জানায় আবহাওয়া অফিস।
এদিকে তীব্র শীতে কাবু হয়ে পড়েছে এই জনপদের শীর্তাত মানুষ। গ্রামীণ জনপদের অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। শীতে জবুথবু অবস্থা অসহায় দরিদ্র ছিন্নমূল মানুষের। অনেকে শীতবস্ত্রের অভাবে দারুণ কষ্ট ভোগ করছে। জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে কিছু কম্বল বিতরণ করার হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
শীতবস্ত্রের অভাবে বিশেষ করে চা,পাথর, বালু শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানচালক ও দরিদ্র মানুষরা বেশি কষ্ট পাচ্ছেন। অপরদিকে শীতজনিত নানা রোগবালাই বেড়ে গেছে। শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো.সাবেত আলী জানান, শীত মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রথম দফায় দুই হাজার কম্বল দরিদ্র শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে শীতবস্ত্র ক্রয়ের জন্য ৩৩ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এই টাকা দিয়ে অতি দ্রুত কম্বল এবং শীতবস্ত্র ক্রয় করে অসহায় দরিদ্র শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।