ঢাকা ০৪:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুনানিতে ১১ আইনজীবী চিন্ময় দাসের জামিন নামঞ্জুর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪৯:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৫ বার

রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেপ্তার ইসকনের সাবেক নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ সাইফুল ইসলামের আদালতে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, চিন্ময়ের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন সুপ্রীম কোর্টের ১১ আইনজীবীর একটি দল। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন সরকারি কৌঁসুলির (পিপি) পিপি মফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া। দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে আদালত চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর করেন।

এর আগে শুনানিতে অংশ নিতে সুপ্রিম কোর্টের ১১ আইনজীবীর দলটি আজ সকাল সোয়া ১০টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে প্রবেশ করেন।

শুনানিকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম আদালত পাড়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কড়া নিরাপত্তা দিতে দেখা গেছে। প্রবেশ মুখগুলোতে জনসাধারণের প্রবেশ সীমিত করা হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ভেতর ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

এ ছাড়া আদালত এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাপক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেসব বিচারপ্রার্থী আদালতে আসছেন তাদের কাগজপত্র দেখে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। আদালতের দুটি ঢোকা ও বেড়োনোর পথে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, বিজিবি ও সেনাসদস্য মোতায়েন রয়েছে। সেই সঙ্গে সাদা পোশাকেও আছে পুলিশ।

 

এদিকে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার প্রতিবাদে আজও বিক্ষোভ হয়েছে চট্টগ্রামের আদালতপাড়ায়। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টায় একদল আইনজীবী আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় তারা আলিফ হত্যার বিচার চান। আইনজীবীরা আলিফ হত্যাকাণ্ডের জন্য চিন্ময়ের ফাঁসি দাবি করেন।

উল্লেখ্য, গত ২৬ নভেম্বর চিন্ময়ের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত। তাকে কারাগারে নেওয়ার সময় মুক্তির দাবিতে চিন্ময়ের অনুসারীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয় পুলিশের। এ সময় কুপিয়ে হত্যা করা হয় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবীকে। যিনি সরকারি কৌঁসুলি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন।

আইনজীবী আলিফ খুন এবং আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের ওপর হামলা-গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করেন তার বাবা এবং ভাই। বাবার করা হত্যা মামলায় ৩১ জনকে আসামি করা হলেও ভাইয়ের করা মামলায় এজাহারনামীয় আসামি করা হয় ১১৬ জনকে। মোট ছয়টি মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার ৩৯ জন।

 

প্রসঙ্গত, গত ২৫ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ হয়। এর কয়েক দিন পর গত ৩১ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। এ মামলায় আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়।

গত ২২ নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরও একটি বড় সমাবেশ হয়। এরপর রাষ্ট্রদ্রোহের সেই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গত ২৫ নভেম্বর ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।

আদালত চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে সেদিন চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় আইনজীবীর সাইফুল ইসলাম আলিফকে আদালত চত্বরের বাইরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর থেকে কারাগারে আছেন চিন্ময়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

শুনানিতে ১১ আইনজীবী চিন্ময় দাসের জামিন নামঞ্জুর

আপডেট টাইম : ০৫:৪৯:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫

রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেপ্তার ইসকনের সাবেক নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ সাইফুল ইসলামের আদালতে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, চিন্ময়ের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন সুপ্রীম কোর্টের ১১ আইনজীবীর একটি দল। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন সরকারি কৌঁসুলির (পিপি) পিপি মফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া। দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে আদালত চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর করেন।

এর আগে শুনানিতে অংশ নিতে সুপ্রিম কোর্টের ১১ আইনজীবীর দলটি আজ সকাল সোয়া ১০টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে প্রবেশ করেন।

শুনানিকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম আদালত পাড়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কড়া নিরাপত্তা দিতে দেখা গেছে। প্রবেশ মুখগুলোতে জনসাধারণের প্রবেশ সীমিত করা হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ভেতর ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

এ ছাড়া আদালত এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাপক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেসব বিচারপ্রার্থী আদালতে আসছেন তাদের কাগজপত্র দেখে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। আদালতের দুটি ঢোকা ও বেড়োনোর পথে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, বিজিবি ও সেনাসদস্য মোতায়েন রয়েছে। সেই সঙ্গে সাদা পোশাকেও আছে পুলিশ।

 

এদিকে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার প্রতিবাদে আজও বিক্ষোভ হয়েছে চট্টগ্রামের আদালতপাড়ায়। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টায় একদল আইনজীবী আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় তারা আলিফ হত্যার বিচার চান। আইনজীবীরা আলিফ হত্যাকাণ্ডের জন্য চিন্ময়ের ফাঁসি দাবি করেন।

উল্লেখ্য, গত ২৬ নভেম্বর চিন্ময়ের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত। তাকে কারাগারে নেওয়ার সময় মুক্তির দাবিতে চিন্ময়ের অনুসারীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয় পুলিশের। এ সময় কুপিয়ে হত্যা করা হয় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবীকে। যিনি সরকারি কৌঁসুলি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন।

আইনজীবী আলিফ খুন এবং আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের ওপর হামলা-গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করেন তার বাবা এবং ভাই। বাবার করা হত্যা মামলায় ৩১ জনকে আসামি করা হলেও ভাইয়ের করা মামলায় এজাহারনামীয় আসামি করা হয় ১১৬ জনকে। মোট ছয়টি মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার ৩৯ জন।

 

প্রসঙ্গত, গত ২৫ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ হয়। এর কয়েক দিন পর গত ৩১ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। এ মামলায় আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়।

গত ২২ নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরও একটি বড় সমাবেশ হয়। এরপর রাষ্ট্রদ্রোহের সেই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গত ২৫ নভেম্বর ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।

আদালত চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে সেদিন চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় আইনজীবীর সাইফুল ইসলাম আলিফকে আদালত চত্বরের বাইরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর থেকে কারাগারে আছেন চিন্ময়।