চন্ডিকা হাথুরুসিংহে থাকবেন কী থাকবেন না- এখনও এ বিষয়ে অন্ধকারে রয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এখনও তারা আশা করছেন, হাথুরু ঢাকায় আসবেন এবং তার সঙ্গে সব বিষয়ে কথা-বার্তা বলার সুযোগ পাবেন তারা। তবে, আগামী মাসের শেষের দিকেই যেহেতু পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলার জন্য শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল বাংলাদেশে আসতেছে, সে জন্য হাথুরু আসছে না ধরে নিয়েই খালেদ মাহমুদ সুজনকে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ নিয়োগ দিয়েছে বিসিবি। আজ বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নিজেই এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘এর মধ্যে সিরিজ (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে) শুরু হবার আগে যদি বাইরের কোচ না আনি বা ফাইনাল করতে না পারি, তাহলে অবশ্যই লোকাল কোচ হবে। খালেদ মাহমুদ সুজনের সম্ভাবনাই বেশি। তার উপরই দায়িত্ব দেয়া হতে পারে।’
চন্ডিকা হাথুরুসিংহে আর আসছেন না- এমন নিশ্চিত সংবাদ জাগো নিউজে এর আগেও একাধিকবার প্রকাশ হয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড থেকে বারবার বলা হচ্ছিল, তারা হাথুরুর অপেক্ষায় রয়েছেন। তিনি ঢাকায় এসে তাদের (বিসিবির) সঙ্গে আলোচনা না করা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণাও দিতে পারছেন না তারা। এমনকি এটাও বলছিলেন, নির্দিষ্ট একটা সময় পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করবেন। হাথুরু এর মধ্যে না আসলে ভিন্ন কোনো সিদ্ধান্ত নেবে বিসিবি।
আজ ঢাকা ডায়নামাইটস এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ম্যাচের পরবর্তী সময়ে বিসিবির প্রেস কনফারেন্সরুমে রুমে মিডিয়ার মুখোমুখি হন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। সেখানেই কোচের বিষয়ে কথা বলেন তিনি। তবে, সুজনকে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ নিয়োগ দেয়া হলেও হাথুরু অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘোষণা করেননি বিসিবি সভাপতি। তিনি জানিয়েছেন আগামী দু’তিন দিনের মধ্যে ঢাকায় আসবেন হাথুরুসিংহে এবং তার সাথে কথা বলেই বিসিবি তাদের চূড়ান্ত ঘোষণাটা দিয়ে দেবে।
এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘তার আসার কথা ছিল। এই দু-একদিনের মধ্যেই তার আসার কথা ছিল। লাস্ট আমাদের সিইও সুজন (নিজাম উদ্দিন চৌধুরী) আমাকে জানিয়েছে, তাকে (সিইও) একটা চিঠি পাঠিয়েছে । কয়েকদিন পরে সে আসবে। এইটুকুই জানি এখন পর্যন্ত।’
হাথুরু বাংলাদেশ দলের কোচ পদে আর থাকতে না চাইলে বিসিবিও জোর করবে না। শুধু তার কাছ থেকে পদত্যাগের কারণটা জানতে চান বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, ‘কেউ যদি থাকতে না চায় তাহলে আমরা তাকে জোর করে রাখতে পারি না। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, তা করা ঠিক হবে না। আমরা তাই সেদিক যাই’ই নাই। তবে ওর কাছ থেকে দুটো জিনিস দরকার। সিরিজের রিপোর্ট আর পদত্যাগের কারণটা কি- এটা জানা দরকার। সে যদি মনে করে স্বেচ্ছায় চলে যাবে, তাহলে কোন কথা নেই।’
কখন হাথুরু পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? আগে থেকে কী তার পদত্যাগের কোনো আলামত বিসিবি জানতে পেরেছিল কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘আমার মনে হয় না। প্রথম টেস্টের (দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে) পরেও সে যে ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলছিল, বিশ্বকাপের জন্য কী করতে হবে না হবে, এসব নিয়ে কাজ করছিল। তাই আমার মনে হয় না, এটা পূর্ব পরিকল্পিত কিছু। যে জিনিসটা হল, দ্বিতীয় টেস্টটা যেদিন শেষ হল, সেদিনই সে পদত্যাগ পত্রটি লিখেছে। তাতে বোঝা যায়, ওই সময়ের মধ্যে কিছু একটা হয়েছে। তখন সিদ্ধান্তও নিয়েছে যে, সে আর থাকবে না।’
আগেরদিনই সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে থাকার সম্ভাবনা শেষ হাথুরুর। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে মৌখিকভাবে সব কিছু চূড়ান্ত করে ফেলেছেন তিনি এবং সব ঠিক থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই লঙ্কান বোর্ডের সঙ্গে চুক্তি করে ফেলবেন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী এই কোচ। এমনকি আগামী মাসে শ্রীলঙ্কার বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজই হয়তো হবে হাথুরুসিংহের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট।
হাথুরুর পদত্যাগ পত্র পাঠানোর পর থেকেই নানান মহলের আলোচনায় শোনা যাচ্ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হতে পারে খালেদ মাহমুদ সুজনকে। তবে তিনি খণ্ডিত সময়ের জন্য দায়িত্ব নিতে রাজি ছিলেন না। খালেদ মাহমুদ সুজন নিজেই কয়েকদিন আগেই জাগো নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, স্বল্প সময়ের জন্য নয়, তিনি কোচের দায়িত্ব নিতে চান দীর্ঘ সময়ের জন্য। সে জন্য নিজেকে প্রস্তুতও করে তুলছেন তিনি।