ঢাকা ০২:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগে প্রার্থীজট, বিএনপিতে জোটের সমীকরণ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:১৩:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৭
  • ২৩৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিগত ১০টি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পাঁচবার, জামায়াত তিনবার ও বিএনপি-জাতীয় পার্টির প্রার্থী একবার করে বিজয়ী হয়েছেন। আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্তত সাতজন। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে ক্লিন ইমেজধারী, তৃণমূলের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক আছে, সৎ ও যোগ্য এমন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে ঘাঁটি আরো শক্তিশালী করতে চায় আওয়ামী লীগ।

যশোরের চৌগাছা ও ঝিকরগাছা উপজেলার ২২ ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা নিয়ে যশোর-২ সংসদীয় আসন গঠিত। আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবেও বেশ পরিচিত। অন্যদিকে এবারের নির্বাচনে জোটের শরিক জামায়াতকে ছাড় দিতে নারাজ বিএনপির প্রার্থীরা। বিগত দুটি নির্বাচনে জোটের শরিক জামায়াতকে ছাড় দিলেও এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। তাই বিএনপির প্রার্থীরাই জোটের মনোনয়ন নিশ্চিত করতে চান। তবে শরিক দল জামায়াতও তাদের অস্তিত্ব রক্ষায় মনোনয়ন নিশ্চিত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী চূড়ান্ত করতে জট থেকেই যাচ্ছে। মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরাও আছেন মাঠে।

১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদ নির্বাচনে যশোর-২ আসনে আবুল ইসলাম আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি বর্তমান সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলামের বাবা। ১৯৭৯ সালে বিএনপির বদরুল আলা, ১৯৮৬ সালে জামায়াতের মকবুল হোসেন, ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির মীর শাহাদাতুর রহমান, ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির মনিরুল হুদা, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন আওয়ামী লীগের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, ২০০১ সালে জামায়াতের আবু সাঈদ মোহাম্মদ শাহাদাৎ হুসাইন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ ও ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনিরুল ইসলাম মনির নির্বাচিত হন। তবে ২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচন বর্জন করায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনিরুল ইসলামকে চ্যালেঞ্জ করে বিদ্রোহী প্রার্থী হন অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কোন্দল রয়েছে। দ্বিধাবিভক্ত দলের মনোনয়ন নিয়ে শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

একাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্তত সাতজন প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। তাদের মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনিরের নৌকা টিকিট ছিনিয়ে নিতে তৎপর অন্তত ছয়জন প্রার্থী। বসে নেই মনিরুল ইসলামও। তিনিও নৌকার মনোনয়ন ধরে রাখতে প্রস্তুত। মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি তৃণমূল থেকে উঠে আসা একজন কর্মী। ৩২ বছর ধরে রাজনীতির বারান্দায় ঘুরছি। ফুলটাইম রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে জনগণের কাতারে আছি। গত ৯ বছর জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের সেবা করছি। নির্বাচন সামনে রেখে বসন্তের কোকিলের আগমন ঘটবে, এটা স্বাভাবিক। তবে আমি নিজের মনোনয়ন নিয়ে চিন্তিত নই।’

মনিরুল ইসলামের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। তবে গত নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হন। রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তৃণমূলের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইব।’

নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা আনোয়ার হোসেনও রয়েছেন মাঠে। আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অন্য প্রার্থীদের তুলনায় তৃণমূলে আমার যোগাযোগ বেশি ভালো। প্রতিটি গ্রামে আমার সমর্থক আছে। দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের সঙ্গে আছি। সেই হিসেবে আমাকে মনোনয়ন দিলে নৌকা বিপুল ভোটে জয়ী হবে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আইনজীবী আহসানুল হক আহসান গতবার নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু পাননি। তবে হাল ছাড়েননি তিনি এবারও। আহসানুল হক আহসান বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশায় তৃণমূলে নিবিড় যোগাযোগ করছি। বিগত সাড়ে তিন বছর সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড তুলে ধরে দুই উপজেলা পোস্টার, লিফলেট, পুস্তিকা বিতরণ অব্যাহত রেখেছি। জনপ্রতিনিধি, শিক্ষকসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে নিয়মিত মতবিনিময়, সভা-সমাবেশ করছি।’

জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী মোহাম্মদ আলী রায়হান আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী। মোহাম্মদ আলী রায়হান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছি। চৌগাছা-ঝিকরগাছা জনপদের তৃণমূলের সুখে-দুঃখে সঙ্গে আছি।’

নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী মেজর জেনারেল (অব.) নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, চিকিৎসক ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল। ৩০ বছর ধরে মানুষের সেবা করেছি। এখনো করছি। মানুষের সেবা করাই আমার কাজ। এলাকার চার হাজার তরুণ-তরুণীকে চাকরি দিয়েছি। দুই বছর ধরে এলাকায় গণসংযোগ করছি। সন্ত্রাস, অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে আছি। এজন্য মনোনয়নের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’ এ ছাড়াও চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম হাবিবুর রহমান দলীয় মনোনয়ন পেতে ঘরে-বাইরে তৎপর রয়েছেন।

অন্যদিকে সর্বশেষ দুটি নির্বাচনে চারদলীয় জোটের প্রার্থী ছিলেন জামায়াতের আবু সাঈদ মোহাম্মদ শাহাদাৎ হুসাইন। জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলটির অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। জামায়াত নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় কৌশলে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। তবে এবার বিএনপির প্রার্থীরা জামায়াতকে আসনটি ছাড় দিতে নারাজ। বিএনপির অন্তত চারজন প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। জোটের আসন ভাগাভাগির হিসাব-নিকাশে বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়ন অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। তার পরও দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঝিকরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান সাবিরা নাজমুল মুন্নী, জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোটে মোহাম্মদ ইসহাক, চৌগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি জহুরুল ইসলাম।

সাবিরা নাজমুল মুন্নী বলেন, ‘জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির ভোটের জোট। এবার এই আসনে ধানের শীষে বিএনপির প্রার্থী মনোনয়ন পাবে। এটাই আমাদের জোরালো দাবি। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তৃণমূলে কাজ করছি।’

জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘৯১ সাল থেকে এমপি পদে দলের মনোনয়ন চেয়ে আসছি। একবারও পাইনি। এবার দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তির বিষয়ে আশাবাদী। দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলে রাজনীতি করছি। বিএনপি এবার আসন পুনরুদ্ধার করতে চায়। জামায়াতের নির্বাচন করার মতো পরিবেশ নেই। ফলে এবার বিএনপি জামায়াতকে ছাড় দেবে না।’

এ ছাড়াও এ আসনে জাতীয় পার্টির নেতা মুফতি ফিরোজ ও চৌগাছা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নুরুল কদর মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আওয়ামী লীগে প্রার্থীজট, বিএনপিতে জোটের সমীকরণ

আপডেট টাইম : ০১:১৩:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিগত ১০টি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পাঁচবার, জামায়াত তিনবার ও বিএনপি-জাতীয় পার্টির প্রার্থী একবার করে বিজয়ী হয়েছেন। আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্তত সাতজন। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে ক্লিন ইমেজধারী, তৃণমূলের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক আছে, সৎ ও যোগ্য এমন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে ঘাঁটি আরো শক্তিশালী করতে চায় আওয়ামী লীগ।

যশোরের চৌগাছা ও ঝিকরগাছা উপজেলার ২২ ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা নিয়ে যশোর-২ সংসদীয় আসন গঠিত। আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবেও বেশ পরিচিত। অন্যদিকে এবারের নির্বাচনে জোটের শরিক জামায়াতকে ছাড় দিতে নারাজ বিএনপির প্রার্থীরা। বিগত দুটি নির্বাচনে জোটের শরিক জামায়াতকে ছাড় দিলেও এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। তাই বিএনপির প্রার্থীরাই জোটের মনোনয়ন নিশ্চিত করতে চান। তবে শরিক দল জামায়াতও তাদের অস্তিত্ব রক্ষায় মনোনয়ন নিশ্চিত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী চূড়ান্ত করতে জট থেকেই যাচ্ছে। মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীরাও আছেন মাঠে।

১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদ নির্বাচনে যশোর-২ আসনে আবুল ইসলাম আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি বর্তমান সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলামের বাবা। ১৯৭৯ সালে বিএনপির বদরুল আলা, ১৯৮৬ সালে জামায়াতের মকবুল হোসেন, ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির মীর শাহাদাতুর রহমান, ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির মনিরুল হুদা, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন আওয়ামী লীগের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, ২০০১ সালে জামায়াতের আবু সাঈদ মোহাম্মদ শাহাদাৎ হুসাইন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ ও ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনিরুল ইসলাম মনির নির্বাচিত হন। তবে ২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচন বর্জন করায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনিরুল ইসলামকে চ্যালেঞ্জ করে বিদ্রোহী প্রার্থী হন অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কোন্দল রয়েছে। দ্বিধাবিভক্ত দলের মনোনয়ন নিয়ে শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

একাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্তত সাতজন প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। তাদের মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনিরের নৌকা টিকিট ছিনিয়ে নিতে তৎপর অন্তত ছয়জন প্রার্থী। বসে নেই মনিরুল ইসলামও। তিনিও নৌকার মনোনয়ন ধরে রাখতে প্রস্তুত। মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি তৃণমূল থেকে উঠে আসা একজন কর্মী। ৩২ বছর ধরে রাজনীতির বারান্দায় ঘুরছি। ফুলটাইম রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে জনগণের কাতারে আছি। গত ৯ বছর জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের সেবা করছি। নির্বাচন সামনে রেখে বসন্তের কোকিলের আগমন ঘটবে, এটা স্বাভাবিক। তবে আমি নিজের মনোনয়ন নিয়ে চিন্তিত নই।’

মনিরুল ইসলামের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। তবে গত নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হন। রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তৃণমূলের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইব।’

নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা আনোয়ার হোসেনও রয়েছেন মাঠে। আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অন্য প্রার্থীদের তুলনায় তৃণমূলে আমার যোগাযোগ বেশি ভালো। প্রতিটি গ্রামে আমার সমর্থক আছে। দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের সঙ্গে আছি। সেই হিসেবে আমাকে মনোনয়ন দিলে নৌকা বিপুল ভোটে জয়ী হবে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আইনজীবী আহসানুল হক আহসান গতবার নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু পাননি। তবে হাল ছাড়েননি তিনি এবারও। আহসানুল হক আহসান বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশায় তৃণমূলে নিবিড় যোগাযোগ করছি। বিগত সাড়ে তিন বছর সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড তুলে ধরে দুই উপজেলা পোস্টার, লিফলেট, পুস্তিকা বিতরণ অব্যাহত রেখেছি। জনপ্রতিনিধি, শিক্ষকসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে নিয়মিত মতবিনিময়, সভা-সমাবেশ করছি।’

জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী মোহাম্মদ আলী রায়হান আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী। মোহাম্মদ আলী রায়হান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছি। চৌগাছা-ঝিকরগাছা জনপদের তৃণমূলের সুখে-দুঃখে সঙ্গে আছি।’

নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী মেজর জেনারেল (অব.) নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, চিকিৎসক ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল। ৩০ বছর ধরে মানুষের সেবা করেছি। এখনো করছি। মানুষের সেবা করাই আমার কাজ। এলাকার চার হাজার তরুণ-তরুণীকে চাকরি দিয়েছি। দুই বছর ধরে এলাকায় গণসংযোগ করছি। সন্ত্রাস, অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে আছি। এজন্য মনোনয়নের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’ এ ছাড়াও চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম হাবিবুর রহমান দলীয় মনোনয়ন পেতে ঘরে-বাইরে তৎপর রয়েছেন।

অন্যদিকে সর্বশেষ দুটি নির্বাচনে চারদলীয় জোটের প্রার্থী ছিলেন জামায়াতের আবু সাঈদ মোহাম্মদ শাহাদাৎ হুসাইন। জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলটির অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। জামায়াত নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় কৌশলে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। তবে এবার বিএনপির প্রার্থীরা জামায়াতকে আসনটি ছাড় দিতে নারাজ। বিএনপির অন্তত চারজন প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। জোটের আসন ভাগাভাগির হিসাব-নিকাশে বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়ন অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। তার পরও দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঝিকরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান সাবিরা নাজমুল মুন্নী, জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোটে মোহাম্মদ ইসহাক, চৌগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি জহুরুল ইসলাম।

সাবিরা নাজমুল মুন্নী বলেন, ‘জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির ভোটের জোট। এবার এই আসনে ধানের শীষে বিএনপির প্রার্থী মনোনয়ন পাবে। এটাই আমাদের জোরালো দাবি। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তৃণমূলে কাজ করছি।’

জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘৯১ সাল থেকে এমপি পদে দলের মনোনয়ন চেয়ে আসছি। একবারও পাইনি। এবার দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তির বিষয়ে আশাবাদী। দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলে রাজনীতি করছি। বিএনপি এবার আসন পুনরুদ্ধার করতে চায়। জামায়াতের নির্বাচন করার মতো পরিবেশ নেই। ফলে এবার বিএনপি জামায়াতকে ছাড় দেবে না।’

এ ছাড়াও এ আসনে জাতীয় পার্টির নেতা মুফতি ফিরোজ ও চৌগাছা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নুরুল কদর মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।