ঢাকা ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে কোনো পরিস্থিতিতে কমান্ডোদের প্রস্তুত থাকতে হবে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৩৭:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০১৭
  • ৩৭৩ বার
হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সদা প্রস্তুত থাকতে সেনা কমান্ডোদের নির্দেশ দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি আজ বৃহস্পতিবার এখানে রাজশাহী সেনানিবাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১ প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নকে জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে বলেন, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আপনাদের সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।
দেশের এখন প্রয়োজন যোগ্য, অভিজ্ঞ ও বিশ্বমানের প্যারাকমান্ডো ইউনিট উল্লেখ করে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, দেশ ও জনগণের জরুরি সময়ে সেনাবাহিনীর ১ প্যারা কমান্ডোর মতো বিশেষ ব্রিগেড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, কমান্ডোরা দেশের চৌকস, সুশৃঙ্খল ও দুঃসাহসী সেনানী। মাতৃভূমির সার্বভৌমত্বকে সমুন্নত রাখতে তারা জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের সেবায় আত্মোৎসর্গ করার সংকল্পে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক সশস্ত্র বাহিনীকে দেশের আস্থা ও গর্বের প্রতীক হিসেবে অভিহিত করে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
২৫ বছর আগে ১৯৯২ সালে গঠিত ১ প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের কর্মকান্ডের প্রশংসা করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ২০১৬ সালের গুলশানের বিশেষ করে হলি আর্টিজান বেকারিতে যথাক্রমে অপারেশন থান্ডার বোল্ট ও অপারেশন হোয়াইট লাইট এবং সিলেটের সুরমায় আতিয়া মহলে সফল সন্ত্রাস ও জঙ্গি বিরোধী অভিযানে তাদের কর্মদক্ষতায় এই ইউনিট বিশ্বব্যাপী প্রশংসা অর্জন করে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ আজ আর কোনো একটি দেশ বা জাতির সমস্যা নয়। ধনী-গরীব, উন্নত-অনুন্নত নির্বিশেষে বিশ্বের সকল দেশের জন্যই সমস্যা। এজন্য প্যারা কমান্ডো ইউনিটের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
রাষ্ট্রপতি তার ভাষণের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার হচ্ছে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন। এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে রূপকল্প ২০২১’র ধারাবাহিকতায় এবং ফোর্সেস গোল ২০৩০’র আলোকে সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো বিন্যাস ও পরিবর্তনের পাশাপাশি আধুনিকায়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সামরিক জীবনে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জিত এবং নৈপুণ্য নিশ্চিত হয়। সঠিক প্রশিক্ষণ পেশাগত মান বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। প্রশিক্ষণের এই ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতি হামিদ সদ্য স্বাধীন যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী সশস্ত্রবাহিনী গড়ে তুলতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করে বলেন, অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু কুমিল্লায় মিলিটারি একাডেমি স্থাপন করেন এবং সেখানে প্রথম ব্যাচের ক্যাডেটদের সমাপনী কুচকাওয়াজে জাতির পিতা সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের উদ্দেশ্যে চেইন অব কমান্ড ও কঠোর শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন।
রাষ্ট্রপতি জাতির পিতার ভাষণ উদ্ধৃত করে বলেন, ‘তোমরা অবশ্যই অন্যায় দমন করবে। কিন্তু খেয়াল রেখো, নিরপরাধ লোকের প্রতি যেন অন্যায় কিছু না হয়।’
রাষ্ট্রপতি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন মিশনে আত্মত্যাগ, কর্তব্য নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে দেশের জন্য সম্মান ও মর্যাদা বয়ে আনার জন্য সেনাবাহিনীর প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে তিনি প্রাকৃতিক এবং বন্যা ও ভূমিধসের মতো মানবসৃষ্ট দুর্যোগ এবং ব্যাপক হারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে সৃষ্ট সংকট মোকাবেলায় সেনাবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন।
মন্ত্রীবর্গ, সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, সংসদ সদস্যরা, বগুড়া আঞ্চলিক কমান্ডার, রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এবং সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বাসস
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

যে কোনো পরিস্থিতিতে কমান্ডোদের প্রস্তুত থাকতে হবে

আপডেট টাইম : ০৭:৩৭:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০১৭
হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সদা প্রস্তুত থাকতে সেনা কমান্ডোদের নির্দেশ দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি আজ বৃহস্পতিবার এখানে রাজশাহী সেনানিবাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১ প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নকে জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে বলেন, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আপনাদের সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।
দেশের এখন প্রয়োজন যোগ্য, অভিজ্ঞ ও বিশ্বমানের প্যারাকমান্ডো ইউনিট উল্লেখ করে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, দেশ ও জনগণের জরুরি সময়ে সেনাবাহিনীর ১ প্যারা কমান্ডোর মতো বিশেষ ব্রিগেড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, কমান্ডোরা দেশের চৌকস, সুশৃঙ্খল ও দুঃসাহসী সেনানী। মাতৃভূমির সার্বভৌমত্বকে সমুন্নত রাখতে তারা জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের সেবায় আত্মোৎসর্গ করার সংকল্পে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক সশস্ত্র বাহিনীকে দেশের আস্থা ও গর্বের প্রতীক হিসেবে অভিহিত করে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
২৫ বছর আগে ১৯৯২ সালে গঠিত ১ প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের কর্মকান্ডের প্রশংসা করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ২০১৬ সালের গুলশানের বিশেষ করে হলি আর্টিজান বেকারিতে যথাক্রমে অপারেশন থান্ডার বোল্ট ও অপারেশন হোয়াইট লাইট এবং সিলেটের সুরমায় আতিয়া মহলে সফল সন্ত্রাস ও জঙ্গি বিরোধী অভিযানে তাদের কর্মদক্ষতায় এই ইউনিট বিশ্বব্যাপী প্রশংসা অর্জন করে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ আজ আর কোনো একটি দেশ বা জাতির সমস্যা নয়। ধনী-গরীব, উন্নত-অনুন্নত নির্বিশেষে বিশ্বের সকল দেশের জন্যই সমস্যা। এজন্য প্যারা কমান্ডো ইউনিটের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
রাষ্ট্রপতি তার ভাষণের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার হচ্ছে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন। এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে রূপকল্প ২০২১’র ধারাবাহিকতায় এবং ফোর্সেস গোল ২০৩০’র আলোকে সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো বিন্যাস ও পরিবর্তনের পাশাপাশি আধুনিকায়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সামরিক জীবনে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জিত এবং নৈপুণ্য নিশ্চিত হয়। সঠিক প্রশিক্ষণ পেশাগত মান বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। প্রশিক্ষণের এই ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতি হামিদ সদ্য স্বাধীন যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী সশস্ত্রবাহিনী গড়ে তুলতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করে বলেন, অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু কুমিল্লায় মিলিটারি একাডেমি স্থাপন করেন এবং সেখানে প্রথম ব্যাচের ক্যাডেটদের সমাপনী কুচকাওয়াজে জাতির পিতা সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের উদ্দেশ্যে চেইন অব কমান্ড ও কঠোর শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন।
রাষ্ট্রপতি জাতির পিতার ভাষণ উদ্ধৃত করে বলেন, ‘তোমরা অবশ্যই অন্যায় দমন করবে। কিন্তু খেয়াল রেখো, নিরপরাধ লোকের প্রতি যেন অন্যায় কিছু না হয়।’
রাষ্ট্রপতি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন মিশনে আত্মত্যাগ, কর্তব্য নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে দেশের জন্য সম্মান ও মর্যাদা বয়ে আনার জন্য সেনাবাহিনীর প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে তিনি প্রাকৃতিক এবং বন্যা ও ভূমিধসের মতো মানবসৃষ্ট দুর্যোগ এবং ব্যাপক হারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে সৃষ্ট সংকট মোকাবেলায় সেনাবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন।
মন্ত্রীবর্গ, সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, সংসদ সদস্যরা, বগুড়া আঞ্চলিক কমান্ডার, রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এবং সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বাসস