দৈনিক মানবকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সিনিয়র সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান। গত ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে তিনি পত্রিকাটিতে যোগ দেন। এর আগে ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক পদ থেকে পীর হাবিবুর রহমানকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
মানবকণ্ঠ থেকে পদত্যাগ প্রসঙ্গে পীর হাবিবুর রহমান ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এখানে সেই স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো:
“প্রতিদিনের পর যে দৈনিকটিতে যোগ দিয়েছিলাম সেখান থেকেও আজ বিদায় নিলাম। আমি মুক্ত স্বাধীন মানুষ। আমার ছেলেবেলা থেকেই আমি বৃত্ত ভাঙ্গতে শিখেছি। পরিবার আপনজনরা আমাকে বরাবর বলেছেন, আর পাগলামি না, আর অস্থিরতা না, এবার একটু মন দাও। এবার একটু স্থির হও। বেকার মানুষের প্রতি সবচেয়ে বেশি নির্দয় নারীর হৃদয়। চাকরি বাকরি নাই, তোমার কোন দাম নাই। নারীরা হয়তো দাস পছন্দ করে। না হয় ছাগলের হাটে কুরবানির সময় নারী ক্রেতা কেন এত বেশি। যাক, আমি কটাদিন একটু নিজের মতোন গোছাবো। আমার শক্তির উৎস আমার ভিতর থেকে আসা লেখা। মানুষ আমার শক্তির জায়গা, মানুষ ও দেশকে ভালোবাসি। আমার পেশীতে নয়, কলমেই শক্তি। মানুষ ও দেশের কথা বলে আমার কলম। যতদিন বাঁচবো মানুষের জন্যই লিখবো। যতদিন বাঁচি মুক্ত কণ্ঠেই কথা বলবো। যতদিন বাঁচি মাথা উঁচু করেই হাটবো, চোরকে চোর, লুটেরাকে লুটেরা, দালালকে দালাল, দাসকে দাস, দল কানাকে দল কানা, দল দাসিদের দল দাসি, তদ্বিরবাজ, তেলবাজ, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ সবাইকেই যার যার নামেই ডাকবো। একটি অসাম্প্রদায়িক গণতান্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন বুকে নিয়ে আমার পথ হাটা চলবে, কবিগুরুর ভাষায় বলি, সত্য সে যে কঠিন, কঠিনেরে ভালোবাসিলাম আমি, কারণ সে করেনা বন্চনা।বিদ্রোহী কবির ভাষায় বলি অমর কাব্য লিখিও বন্ধু তোমরা যারা সুখে আছো, দেখিয়া শোনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি তাই মুখে যাহা আসে তাহাই কহি,। ভলতেয়ারের কথাটিই হৃদয়ে বাধি, আমি তোমার মতের সঙ্গে একমত নাও হতে পারি, কিন্তু তোমার মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য জীবন দিতে পারি। আমার সমালোচকগণ আনন্দে থাকুন, আমার প্রিয় পাঠকগণ, অপেক্ষা করুন। বেঁচে থাকলে লিখবো। আর পাঠক ঠকানো লিখা আমি লিখবোনা, কোনদিন লিখিওনি, মতলববাজি লেখার প্রশ্নই আসেনা। ফরমায়েশি লিখা টেমসের তীর থেকে আসুক, সুরমা বুড়িগঙ্গার তীর থেকে নয়।”
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালে বাংলাবাজার পত্রিকা দিয়ে সাংবাদিকতা শুরু পীর হাবিবুর রহমানের। এরপর দৈনিক যুগান্তর, আমাদের সময়, আমাদের অর্থনীতি, বাংলাদেশ প্রতিদিন হয়ে মানবকণ্ঠে কাজ করেন তিনি।