পুলিশ আক্রান্ত হলেই গুলি চালায়

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহিদুল হক বলেছেন, ‘পুলিশের জীবননাশের আশঙ্কা থেকেই গানফাইটের (বন্দুকযুদ্ধ) ঘটনা ঘটে। বন্দুকযুদ্ধে কেউ নিহত হলে তা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হয়। কেননা, আত্মরক্ষার অধিকার পুলিশের আছে। পুলিশ যখন আক্রান্ত হয়, তখন আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়। আর সেজন্য আমাদের ইনকোয়ারি ফেস করতে হয়, জবাবদিহি টানতে হয়।’
গতকাল রোববার রাজধানীর মিরপুর পুলিশ স্টাফ কলেজে ‘ইন্টিলিজেন্স এনালাইসিস ফর টাইগার রেঞ্জ কান্ট্রি’ বিষয়ক এক ট্রেনিং কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ মন্তব্য করেন। আইজিপি বলেন, সন্ত্রাসীদের কারণে তাদের নানা রকম প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। সে যে দলেরই হোক, যত প্রভাবশালী হোক, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ব্যবস্থা নিতে গিয়ে যদি পুলিশ হুমকির মুখে পড়ে, পুলিশের জীবননাশের আশঙ্কা থাকে সেখানে অনেক সময় গানফাইটের ঘটনা ঘটে।
আইজিপি বলেন, সন্ত্রাসীদের কোন দল নেই। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নাম ব্যবহার করে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়। সন্ত্রাসীরা যদি জননিরাপত্তার হুমকি হয়, আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি হয়, তখন আমাদের জিরো টলারেন্স দেখাতে হয়। সে কোন দলের তা বিবেচনার বিষয় নয়।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল আছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, পুলিশ ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে। যেখানে সন্ত্রাসী পাওয়া যাবে, যেখানে আইন অমান্য হবে, সেখানেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, প্রতিমাসে অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজের আন্তর্জাতিক মিলনায়তনে ওই প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলা হয়, মূলত চোরা শিকারীদের হাতে বাঘ হত্যা বন্ধ করা ও বাঘের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যাতে চোরাচালান না হয়, সে জন্য এই দেশগুলো পারস্পরিক সহযোগিতা ও তথ্য বিনিময়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাঘ যাতে বিলুপ্ত না হয়ে টিকে থাকে, সেই লক্ষ্যে দেশগুলো এই উদ্যোগ নিয়েছে। আর এই কাজে সহযোগিতা করবে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল।
দুই সপ্তাহের এ প্রশিক্ষণ কোর্সে ১০টি দেশের ২০ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, নেপাল, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম। প্রশিক্ষণ কোর্সে বাঘ এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণী পাচার রোধ, বাঘ সংরক্ষণ সংক্রান্ত ইন্টেলিজেন্স সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, লাওস, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামের পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ এবং বন বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা এই প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর