ঢাকা ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘুমন্ত অবস্থায় মুখ-হাত-পা বেধে ধর্ষণ: অতঃপর স্কুলছাত্রীর নির্মম পরিনতি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:৩৩:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর ২০১৭
  • ৩৬৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নরসিংদীতে ধর্ষণের মামলা থেকে রেহাই পেতে বিয়ের নাটক সাজিয়ে স্কুলছাত্রী ছালমা (১৫) কে প্রাণে মেরে ফেলতে স্পর্শকারতর স্থানসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতন করেছে ঘাতক ধর্ষণকারী স্বামী। পরে মৃত ভেবে হাত-পা বাধা অবস্থায় পাাহাড়ি জঙ্গলে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয় এলাকাবাসী অজ্ঞান অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোররাতে তাকে উদ্ধার করে।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শিবপুর উপজেলার বিরাজনগর গ্রামের মৃত হাজী সিরাজ মাস্টারের বখাটে ছেলে মামুন একই এলাকার দরিদ্র নজরুল ইসলামের নাবালিকা কন্যা শিবপুর পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী ছালমা আক্তারকে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে প্রায় উত্ত্যাক্ত করতো। উত্ত্যক্ত করার এক পর্যায়ে মামুন ছালমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে সে তা প্রত্যাখান করে। মামুন তার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে গত ২৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে সুকৌশলে ছালমার শোবার ঘরে প্রবেশ করে ঘুমন্ত অবস্থায় তার মুখ, হাত-পা বেধে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় ছালমার মা রোজিনা বেগম বাদী হয়ে শিবপুর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করলে পুলিশ মামুনকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে মামুন বিগত রমজান মাসে জামিনে মুক্তি পেয়ে রাগে ও ক্ষোভে পূণরায় ছালমাকে ধর্ষণ করতে গিয়ে ধরা পড়ে। এলাকাবাসী শালিশ দরবারের মাধ্যমে সামাজিক ভাবে মামুনের সাথে ছালমার বিয়ে দেয়। কিন্তু বিয়ের পর ছালমা তার বাবা বাড়ীতে থেকে যায়। ঘটনার দু’দিন পূর্বে গত ৯ অক্টোবর পূর্বে মামুন রেড়ানোর নাম করে ছালমাকে তার বাবার বাড়ী থেকে হবিগঞ্জে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গিয়ে ছালমার উপর চালানো হয় নির্যাতনের স্টীমরুলার।

গত ১১ অক্টোবর রাতে ছালমাকে নিয়ে মামুন শিবপুওে ফিরে এসে রাতের আধাওে তার মুখ, হাত-পা বেধে স্পর্শ কাতর স্থানসহ শরিরের বিভিন্ন স্থানে প্লাস দিয়ে টেনে মারাত্মক ভাবে জখম করে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে ছালমা জ্ঞান হারালে মামুন মৃত ভেবে তাকে জঙ্গলে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ভোররাতে এলাকাবাসী জঙ্গলে ছালমা অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখলে স্থানীয় মানবধিকার সংস্থা এমডিএস ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ নেওর্য়াক (এনএনপিএন) কার্যালয়ে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। তারা ছালমার সুচিকিৎসাসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এদিকে ছালমার হাসপাতালে ভর্তির খবর পেয়ে মামুনের পরিবারের সদস্যরা এলাকার বিভিন্ন লোকজনকে পাঠিয়ে স্থানীয় ভাবে মিমাংসা প্রতিশ্রতি দিয়ে মামলা না করার হুমকি প্রদান করছে। এতে হাসপাতালে আর্তঙ্কগ্রস্থ অবস্থায় রয়েছে ছালমা ও তার পরিবারের সদস্যরা।

নরসিংদী জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মিজানুর রহমান জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে ছালমাকে ভর্তি করার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তার চিকিৎসা করে। ছালমার শরিরের বিভিন্ন ক্ষত চিহ্ণ রয়েছে এবং বাম চোখ রক্তাক্ত জখমে ফুলে আছে।

এব্যাপারে শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। তবে আজকের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ঘুমন্ত অবস্থায় মুখ-হাত-পা বেধে ধর্ষণ: অতঃপর স্কুলছাত্রীর নির্মম পরিনতি

আপডেট টাইম : ০৫:৩৩:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নরসিংদীতে ধর্ষণের মামলা থেকে রেহাই পেতে বিয়ের নাটক সাজিয়ে স্কুলছাত্রী ছালমা (১৫) কে প্রাণে মেরে ফেলতে স্পর্শকারতর স্থানসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতন করেছে ঘাতক ধর্ষণকারী স্বামী। পরে মৃত ভেবে হাত-পা বাধা অবস্থায় পাাহাড়ি জঙ্গলে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয় এলাকাবাসী অজ্ঞান অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোররাতে তাকে উদ্ধার করে।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শিবপুর উপজেলার বিরাজনগর গ্রামের মৃত হাজী সিরাজ মাস্টারের বখাটে ছেলে মামুন একই এলাকার দরিদ্র নজরুল ইসলামের নাবালিকা কন্যা শিবপুর পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী ছালমা আক্তারকে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে প্রায় উত্ত্যাক্ত করতো। উত্ত্যক্ত করার এক পর্যায়ে মামুন ছালমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে সে তা প্রত্যাখান করে। মামুন তার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে গত ২৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে সুকৌশলে ছালমার শোবার ঘরে প্রবেশ করে ঘুমন্ত অবস্থায় তার মুখ, হাত-পা বেধে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় ছালমার মা রোজিনা বেগম বাদী হয়ে শিবপুর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করলে পুলিশ মামুনকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে মামুন বিগত রমজান মাসে জামিনে মুক্তি পেয়ে রাগে ও ক্ষোভে পূণরায় ছালমাকে ধর্ষণ করতে গিয়ে ধরা পড়ে। এলাকাবাসী শালিশ দরবারের মাধ্যমে সামাজিক ভাবে মামুনের সাথে ছালমার বিয়ে দেয়। কিন্তু বিয়ের পর ছালমা তার বাবা বাড়ীতে থেকে যায়। ঘটনার দু’দিন পূর্বে গত ৯ অক্টোবর পূর্বে মামুন রেড়ানোর নাম করে ছালমাকে তার বাবার বাড়ী থেকে হবিগঞ্জে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গিয়ে ছালমার উপর চালানো হয় নির্যাতনের স্টীমরুলার।

গত ১১ অক্টোবর রাতে ছালমাকে নিয়ে মামুন শিবপুওে ফিরে এসে রাতের আধাওে তার মুখ, হাত-পা বেধে স্পর্শ কাতর স্থানসহ শরিরের বিভিন্ন স্থানে প্লাস দিয়ে টেনে মারাত্মক ভাবে জখম করে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে ছালমা জ্ঞান হারালে মামুন মৃত ভেবে তাকে জঙ্গলে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ভোররাতে এলাকাবাসী জঙ্গলে ছালমা অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখলে স্থানীয় মানবধিকার সংস্থা এমডিএস ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ নেওর্য়াক (এনএনপিএন) কার্যালয়ে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। তারা ছালমার সুচিকিৎসাসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এদিকে ছালমার হাসপাতালে ভর্তির খবর পেয়ে মামুনের পরিবারের সদস্যরা এলাকার বিভিন্ন লোকজনকে পাঠিয়ে স্থানীয় ভাবে মিমাংসা প্রতিশ্রতি দিয়ে মামলা না করার হুমকি প্রদান করছে। এতে হাসপাতালে আর্তঙ্কগ্রস্থ অবস্থায় রয়েছে ছালমা ও তার পরিবারের সদস্যরা।

নরসিংদী জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মিজানুর রহমান জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে ছালমাকে ভর্তি করার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তার চিকিৎসা করে। ছালমার শরিরের বিভিন্ন ক্ষত চিহ্ণ রয়েছে এবং বাম চোখ রক্তাক্ত জখমে ফুলে আছে।

এব্যাপারে শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। তবে আজকের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি।