হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-১৫ আসনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা কামাল আহমেদ মজুমদার। মিরপুর-কাফরুল এলাকা নিয়ে গঠিত এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্যও তিনি।
তবে প্রভাবশালী এই নেতার আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন স্থানীয় অনেক নেতা। কারণ হিসেবে তার বয়সটা সামনে আনছেন তারা।
কামাল আহমেদ মজুমদার অবশ্য রাজনীতি ও নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে নিজের সামর্থ্য নিয়ে নিঃসংশয়। তিনি আশাবাদী দলের সভাপতি আবার তাকে মনোনয়ন দেবেন।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার জন্য কামাল আহমেদ মজুমদারের পাশাপাশি মাঠে রয়েছেন আরো বেশ কয়েকজন নেতা।
অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাঈনুল হোসেন খান নিখিল, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম জাহিদ, ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার ভাই এখলাস উদ্দিন মোল্লা।
নির্বাচনের এখনো বছর খানেক সময় থাকলেও এসব মনোনয়নপ্রত্যাশী মাঠে প্রচার-প্রচারণায় নেমে পড়েছেন।
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বৃহত্তর মিরপুর এলাকার নির্বাচনী আসন ছিল ঢাকা-১১। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন পুনর্বন্টনের পর এটি ভেঙে করা হয় ঢাকা-১৪, ঢাকা-১৫, ঢাকা-১৬।
সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকেটে বৃহত্তর মিরপুর এলাকার (ঢাকা-১১ আসন) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন কামাল আহমেদ মজুমদার। এরপর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৫ আসন থেকে তিনি নির্বাচিত হন। দশম জাতীয় সংসদে পুনর্নির্বাচিত কামাল মজুমদার আগামী নির্বাচনেও দল থেকে মনোনয়ন চাইবেন।
কামাল আহমেদ মজুমদার আন্দোলন-সংগ্রামে পরীক্ষিত নেতা- এ কতঅ স্বীকার করে আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন, ‘কিন্তু তার বয়স হয়েছে। এ কারণে তিনি এখন সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে অংশ নিতে পারেন না। একই কারণে তিনি এবার দলের মনোনয়ন নাও পেতে পারেন।’
বর্তমান পরিস্থিতিতে কামাল মজুমদারেরই মনোনয়ন পাওয়ার ধারণা করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের একজন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। তিনি হাওর বার্তাকে বলেন, ‘দলের দুর্দিনে কামাল আহমেদ মজুমদার অনেক অবদান রেখেছেন। তার বয়স হয়েছে এটাও সত্য। যেহেতু আগামী নির্বাচন আমাদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ, তাই এবার হয়তো দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত কামাল মজুমদার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন।’
এদিকে কামাল মজুমদার ছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা নিয়মিতই জনসংযোগ করছেন এলাকায়। তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে, সমাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নিজেদের তুলে ধরছেন। এলাকার মানুষের সমস্যার কথা শুনছেন এবং তার সমাধানের চেষ্টা করছেন।
জানতে চাইলে বর্তমান সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার হাওর বার্তাকে বলেন, ‘ইনশা আল্লাহ আমি আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। এ জন্য কাজ করছি। আমার নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে নিয়মিত জনসংযোগ করছি। এলাকার মুরব্বি, বিভিন্ন কমিটির জনগণ নিয়েই আমি এলাকার উন্নয়নে কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মনোনয়েন বিষয়টি দলের হাইকমাণ্ড তথা দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার ওপর নির্ভর করে। আমি আশা করি জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে আবার মনোনয়ন দেবেন।’
অন্য প্রার্থীদের মধ্যে মাহমুদা বেগম বিগত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সমর্থনে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। চলতি বছর মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি।
মাহমুদা বেগম নিজের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনার ব্যাপারে হাওর বার্তাকে বলেন, ‘আমি কাউন্সিলর হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। তৃণমূলের সঙ্গে আমার একটা সম্পর্ক আছে। তাই একটা প্রত্যাশা থাকতেই পারে। সময়ই বলে দিবে কী হবে।’
সম্ভাব্য আরেক প্রার্থী স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু হাওর বার্তাকে বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বলেছেন, তৃণমূলে গ্রহণযোগ্য, সৎ, পরীক্ষিতদের মনোনয়ন দিবেন। সেই হিসাবে ৩২ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আমার একটা দাবি আছে। আমি একজন মনোনয়নপ্রত্যাশী। দীর্ঘদিন রাজনীতি করার কারণে এলাকার মানুষের সাথে আমার একটা সম্পর্ক রয়েছে।