হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি, অতিরিক্ত জনসংখ্যা, উন্নয়ন ও মেরামত কর্মকাণ্ডে সমন্বয়ের অভাব ঢাকা শহরে অসহনীয় যানজটের মূল কারণ বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক বিচারপতি সিকদার মকবুল হক। তিনি বলেছেন, রাজধানীর যানজট নিরসনে গৃহীত অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নানামুখী দুর্নীতি অনিয়মের কারণে সঠিকভাবে এবং যথাসময়ে সম্পন্ন হচ্ছে না। রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ও মেরামতের ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি। কোথাও কোন সমন্বয় নেই। অন্যদিকে অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপে ঢাকা শহর দিনদিন অচল ও বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। রাজধানীর যানজট পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রিকরণ ও নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারকে বিশেষভাবে মনোযোগী হতে হবে।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সেমিনার কক্ষে আয়োজিত ‘যানজটমুক্ত ঢাকার রূপরেখা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল লিডার ফেলোশীপ প্রোগ্রামের ফেলো ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সম্পাদক শাহিনুর নার্গিস এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। বিচারপতি সিকদার মকবুল হক বলেন, প্রতিটি ট্রাফিক সিগন্যালে রাস্তার লেফট লেন ওপেন রাখা, যত্রতত্র যাত্রী উঠানামার ক্ষেত্রে চালকদের সচেতন ও প্রয়োজনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। নাগরিকদের অসহিষ্ণু মনোভাবে পরিবর্তন আনতে হবে।
উন্মুক্ত আলোচনায় ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ডেপুটি ডিরেক্টও আমিনুল এহসান বলেন, ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও মানসম্পন্ন গণপরিবহনের সংখ্যা বাড়াতে হবে। আলাদা লেনের মাধ্যমে বাইসাইকেলে চলাচলের জন্য নাগরিকদের উৎসাহিত করতে হবে। সাংবাদিক কাফি কামাল বলেন, রাজধানীর যানজট নিরসনে পরিকল্পিতভাবেই অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যান চলাচল সংক্রান্ত আইন-কানুনের কঠোর প্রয়োগ এবং সচেতনতার মাধ্যমে নাগরিক সমাজের মধ্যে অভ্যাসগত পরিবর্তন জরুরি। ৩০ মিনিটের যানজট এড়াতে নাগরিকদের দু’এক মিনিট স্যাক্রিফাইস করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে।
‘যানজটমুক্ত ঢাকার রূপরেখা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধে ফেলো শাহিনুর নার্গিস যানজট নিরসনে ২৮টি সুপারিশ তুলে ধরেন। যার মধ্যে রয়েছে মানসম্মত গণপরিবহন বৃদ্ধি, ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, আধুনিক রেল যোগাযোগ, জলপথ ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ, ডেমো ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো, ভারী ও হালকা যানের লেন নির্ধারণ, পার্কিং ব্যবস্থাপনা, ফুটপাত দখলমুক্ত করা, প্রশাসনিক বিকেন্দ্রিকরণ, উপকূলীয় এলাকায় রপ্তানিযোগ্য শিল্প কারখানা স্থানান্তর, মিশ্র নগর ব্যবস্থা, নির্দিষ্ট সময়ে অফিস ও স্কুলগামী যানবাহনের জন্য আলাদা লেন নির্ধারণ, ভিভিআইপিদের জন্য পুরো রাস্তা বন্ধ না রেখে সুনির্দিষ্ট একটি লেন বরাদ্ধ করা, সুশাসনের ওপর জিরো টলারেন্স, প্রতিটি সংস্থার সমন্বয়ের মাধ্যমে রাস্তাঘাটের মেরামত ও উন্নয়নে কর্মকা- বাস্তবায়ন ও গ্রামাঞ্চলে ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মস্থান সৃষ্টি উল্লেখযোগ্য।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট, সহ সভাপতি দুলাল হোসেন, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের প্রোগ্রাম অফিসার তসনিমুন নাহার, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ফেলো ফাহমিদা মজিদ ঊষা, আরাফাত বিল্লাহ, নাদিয়া পাঠান পাপন, আরিফসহ বেশ কয়েকজন ফেলো উপস্থিত ছিলেন।