ঢাকা ১০:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নির্যাতন: সত্য, মিথ্যা এবং আং সান সুচি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৪০:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • ২৭৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আর মিয়ানমারের নেত্রী আং সান সুচিকে এক কাতারে ফেলতে চাইবেন না অনেকেই। কিন্তু রোহিঙ্গা নির্যাতনের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হাওর বার্তাকে জোনাহ ফিশার যে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন, তাতে তার মনে হয়েছে, দুজনের মধ্যে আসলে অনেক মিল। সেই অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন জোনা ফিশার তাঁর এই লেখায়:

আপনি যা ভাবছেন, তার চেয়েও আসলে অনেক বেশি মিল ডোনাল্ড ট্রাম্প আর আং সান সুচির মধ্যে।

দুজনেরই বয়স ৭০-এর বেশি। দুজনের মাথার চুল নিয়েই বেশ আলোচনা হয়। এবং দুজনেই সাংবাদিকদের প্রচন্ড অপছন্দ করেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অশান্ত সম্পর্ক খুবই আলোচিত। কিন্তু আং সান সুচির সঙ্গে গণমাধ্যমের সম্পর্ক যে অনেকটা একই রকম সেটা জানলে অবাক হবেন অনেকে।

আং সান সুচি অনেকের কাছেই পরিচিত ‘দ্য লেডি’ নামে। ১৯৯০ এর দশকে তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পান মানবাধিকার আর গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে।

সুচিকে যখন মিয়ানমারের সামরিক শাসকরা রেঙ্গুনে গৃহবন্দী করে রেখেছিল, তখন তার সঙ্গে কথা বলার জন্য, তার সাহসী প্রতিরোধের কাহিনি তুলে ধরার জন্য অনেক সাংবাদিক জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন।

তবে আং সান সুচি ক্ষমতায় যাওয়ার পর সবকিছু যেন বদলে গেছে।

মিয়ানমারের সরকারে তিনি নিজের জন্য তৈরি করেছেন এক ক্ষমতাধর পদ। প্রেসিডেন্টেরও উর্ধ্বে এই ‘স্টেট কাউন্সেলর’ বা ‘রাষ্ট্রীয় পরামর্শকের’ পদটি। বাস্তবে তিনি আসলে সবার ধরা ছোঁয়ার উপরে। তাঁকে জবাবদিহি করার কেউ নেই।

আং সান সুচি কখনোই মিয়ানমারের গণমাধ্যমে কোন সাক্ষাৎকার দেন না। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় কথা বলেন বেছে বেছে। পার্লামেন্টে এমপি-রা তাঁকে নিয়মিত প্রশ্ন করার কোন সুযোগই পান না। ১৪ মাস আগে নির্বাচনের সময়ের সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনের পর আর কোন সত্যিকারের সংবাদ সম্মেলনে তাঁকে দেখা যায়নি।

আর এর পাশাপাশি সরকারী প্রপাগান্ডা তো রয়েছেই। এই প্রপাগান্ডা মিয়ানমারে সামরিক শাসন আর সেন্সরশীপের কালো দিনগুলোকেই মনে করিয়ে দেয়।

রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে প্রশ্ন:

রোহিঙ্গা মুসলিমরা দাবি করে তারা বহু বছর ধরে রাখাইনে বাস করছেছবির কপিরাইটAFP
Image captionরোহিঙ্গা মুসলিমরা দাবি করে তারা বহু বছর ধরে রাখাইনে বাস করছে

প্রায় প্রতিদিনই মিয়ানমারের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্রে ছাপা হয় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে আক্রমণ করে লেখা নিবন্ধ। রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরার কারণেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এই হামলার লক্ষ্যবস্তু।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের সংখ্যা প্রায় দশ লাখ। দশকের পর দশক ধরে তারা মিয়ানমারে বৈষম্যের শিকার। গত সাড়ে তিন মাস ধরে রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলছে সামরিক বাহিনির নির্মম অভিযান।

সেখানে কী ঘটছে তার উত্তর নির্ভর করছে আপনি কাকে বিশ্বাস করবেন তার ওপর। কারণ কেউ যে স্বাধীনভাবে সেখানে গিয়ে প্রকৃত ঘটনা জানবেন, তার সব পথ বন্ধ রেখেছে মিয়ানমার সরকার।

অনেকে দাবি করছেন মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সেখানে জাতিগত নির্মূল অভিযান চালাচ্ছে। কারও দাবি সেখানে গণহত্যা চলছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং আং সান সুচি অবশ্য এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করছেন। তারা বলছেন, সেখানে পুলিশের ওপর রোহিঙ্গা জঙ্গীরা যে হামলা চালিয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান চলছে।

সাক্ষাৎকারের বিফল চেষ্টা

গত সপ্তাহে বিবিসি-কে যখন রাখাইন রাজ্যের সহিংসতা কবলিত এলাকায় যাওয়ার অনুমতি দেয়া হলো, সেটা ছিল বেশ অবাক করা ব্যাপার। আমরা তাড়াতাড়ি বিমানে উড়ে গেলাম রাখাইনের রাজধানী সিটুয়ে-তে। সেখান থেকে আমরা একটা ফেরিতে চড়ে মায়ু নদী ধরে বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে রওনা হলাম।

চার ঘন্টা পর আমরা বুথিডং এ পৌঁছালাম। সেখান থেকে সংঘাত কবলিত এলাকাগুলি আর মাত্র ৪৫ মিনিটের পথ।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য: সাংবাদিকদের যেখানে প্রবেশ নিষেধ

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ সেখানেও হাজির। আমাদের পথ রোধ করে দাঁড়ালো পুলিশ আর নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের একটি দল। আমাদেরকে স্থানীয় টাউনশীপের’ অফিসে নিয়ে যেতে চায় তারা।

টাউনশীপ অফিসে নিয়ে আমাদের জানানো হলো, রাখাইন রাজ্যে আমাদের সফর বাতিল করা হয়েছে। আমরা যে রাখাইনে যাচ্ছি সেই খবর রাজধানীতে আং সান সুচির সরকারের কানে পৌঁছে গেছে। সেখান থেকে নির্দেশ এসেছে আমাদের থামানোর।

আমরা আবার নৌকায় উঠে ফিরে আসার আগে স্থানীয় এক কর্মকর্তা আমাদের ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে একটা সাক্ষাৎকার দিতে রাজী হলেন।

এটাকেও একটা ছোটখাট বিজয় বলা যেতে পারে। আং সান সুচি আর তাঁর মুখপাত্র এ পর্যন্ত রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলতে ক্রমাগত আমাদের সব আবেদন খারিজ করেছে।

এই কর্মকর্তা থান টুট কিয়া একজন ডাক্তার। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। গত দশ বছর ধরে তিনি উত্তর রাখাইনে আছেন। তার সঙ্গে কথা বলে খুব দ্রুত পরিস্কার হয়ে গেল যে, আরও অনেক বার্মিজ নাগরিকের মতো তিনিও বিশ্বাস করেন রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের খবরকে তিনি বানানো গল্প বলে মনে করেন।

“আমাদের গোপন করার কিছু নেই। আমাদের জাতীয় সরকার এখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে সব সত্য ঘটনা জানাচ্ছে। বার্মিজ বৌদ্ধরা ধর্ষণের শিক্ষা দেয় না। এসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে।”

সত্য জানার চ্যালেঞ্জ

তবে আং সান সুচির সমস্যা হচ্ছে, এসবকে কেবল গুজব বলে উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। সাংবাদিক এবং ত্রাণ কর্মীরা যেহেতু রাখাইনে যেতে পারছেন না, তাই রোহিঙ্গারা নিজেরাই সেখানে অত্যাচার-নির্যাতনের ছবি তুলে ধরছেন। তারা স্মার্টফোনে তাদের কাহিনী বর্ণনা করে বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করে পাঠিয়ে দিচ্ছেন বিদেশে।

আমি গত কয়েক মাসে ভয়াবহ সব ভিডিও দেখেছি। অনেক নারী, যাদের মুখে নির্যাতনের ক্ষতচিহ্ণ, তারা বলেছেন, তাদের ধর্ষন করা হয়েছে। রাস্তায় পড়ে আছে শিশুদের মৃতদেহ। ছাইয়ের গাদার ওপর পড়ে আছে পুড়ে যাওয়া মাথার খুলি।

এসব ঘটনা যাচাই করা হয়তো কষ্টকর। কিন্তু অসম্ভব নয়। অনেক সময় একই এলাকা থেকেই একাধিক সূত্র পাওয়া যায়। অনেক সংগঠনের গোপন নেটওয়ার্ক আছে মাঠ পর্যায়ে। তবে মিয়ানমারের সরকারী গণমাধ্যম প্রতিটি ঘটনায় তাদের নিজেদের কাহিনি প্রচার করেছে।

মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের তাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে

প্রকৃত সংখ্যা যাচাই করা কঠিন। কারণ লোকজন সেখান থেকে পালাচ্ছে এবং পুরো এলাকার একটা সার্বিক চিত্র তাদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে না। কিন্তু যেসব ভিডিও আমাদের কাছে এসেছে সেগুলোকে সেখানকার ঘটনাবলীর খন্ডচিত্র বলা যেতে পারে। এবং কোন সন্দেহ নেই যে সেখানে ভয়ংকর কিছু ঘটছে।

এসব ঘটনার ব্যাপারে আং সান সুচি এবং তাঁর কর্মকর্তরা যে ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন তা কিন্তু হুবহু ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মিলে যায়। গণমাধ্যম কি বলছে

রোহিঙ্গাদের ওপর যে নির্যাতন নিপীড়নের ব্যাপক তথ্য-প্রমাণ রয়েছে সেটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য তারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের লোকজনের কৌশলই বেছে নিয়েছে। গণমাধ্যমে একবার-দুবার হয়তো ভুল বা মিথ্যে তথ্য প্রচার হয়েছে, সেগুলোকেই তারা ফলাও করে দেখাচ্ছে।

যেমন, মেইল অনলাইন একবার একটি রোহিঙ্গা শিশুর নির্যাতনের খবর দিয়েছিল, কিন্তু পরে দেখা গেল সেই শিশুটি আসলে ক্যাম্বোডিয়ান। যদিও এই ভুলের পরপরই খবরটি তুলে নেয়া হয়। মিয়ানমারের সরকারী পত্রিকাগুলোর সামনের পাতায় এটিকে ফলাও করে প্রচার করা হয় যে বিদেশি গণমাধ্যমে ভুল খবর দেয়া হচ্ছে।

একই ভাবে সুচির এক বক্তৃতার অনুবাদ করতে গিয়ে বলা হয়েছিল, এতে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে তিনি হাসাহাসি করছেন। এ নিয়ে মিয়ানমারে তীব্র হল্লা শুরু হয় এবং এব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেয়া হয়।

আং সান সুচির কর্মকর্তার মাঝে মধ্যে এমন ধরণের প্রচারণা চালান যা আসলেই উদ্ভট।

Facebook post entitled: 'Fabricated News: Video clip described tortures in Rakhine State. Genuine Incident: Plot in Hollywood's Rambo movie'ছবির কপিরাইটSCOIC/FACEBOOK
Image captionরোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের খবরকে ‘ভুয়া প্রচারণা’ বলে বর্ণনা করছে মিয়ানমার সরকার

জানুয়ারীর শুরুতে আং সান সুচির দফতর থেকে হলিউডের তারকা সিলভেস্টার স্ট্যালোনের একটি ছবি পোস্ট করা হয়, যাতে র‍্যাম্বোর বেশে তাকে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে লড়াই করে যেতে দেখা যাচ্ছে। রোহিঙ্গারা যে মিথ্যে প্রচারণা চালাচ্ছে এটিকে তার উদাহারণ হিসেবে দেখানো হয়।

এরকম একটা ছবিকে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ছবি হিসেবে ব্যবহারের মতো নির্বুদ্ধিতা কে করেছে, তা স্পষ্ট নয়। হয়তো কোন একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী এই কাজটা করেছে। কিন্তু একজনের এই ভুলটিকে উদাহারণ হিসেবে সামনে এনে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ব্যাপক তথ্য-প্রমাণকে নাকচ করে দেয়া হচ্ছে।

সিএনএন বা গার্ডিয়ানে যখন বাংলাদেশের পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে, তখন সেটিকে খুবই স্থূল কায়দায় নাকচ করা হচ্ছে। এজন্যে মিয়ানমার সরকারের একটা ধরাবাঁধা ফর্মূলা আছে।

রোহিঙ্গাদের যেসব গ্রাম সম্পর্কে এই প্রতিবেদন বেরুচ্ছে সেখানে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের পাঠানো হচ্ছে। পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের প্রতিবেশী আব পরিবারের সদস্যদের ধরে বেঁধে এনে তাদের একটি বিবৃতিতে সই করতে বাধ্য করা হচ্ছে যেখানে তারা প্রচারিত প্রতিবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

প্রচারণা কি বন্ধ করা সম্ভব

অনেক দেশ, এদের মধ্যে ব্রিটেনও রয়েছে, যারা আং সান সুচিকে এ অবস্থাতেও সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমার যেভাবে একনায়কত্ব থেকে বেরিয়ে আসছে, সেটাকে তারা ইতিবাচক পরিবর্তন হিসেবে দেখছে।

কারণ আং সান সুচি নতুন ক্ষমতায় এসেছেন এবং সেনাবাহিনী এবং পুলিশ তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন না।

যদি তিনি রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযান বন্ধ করার চেষ্টাও করতেন, তা পারতেন না। অনেক ত্রুটি বিচ্যূতি সত্ত্বেও তাঁকেই মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় আশা-ভরসা বলে মনে করেন তারা।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে যে উস্কানিমূলক প্রচারণা চলছে, সেটা অন্তত সুচি বন্ধ করতে পারেন।

সুচি সেসব মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করেন, তার অধীনে কাজ করেন যেসব কর্মকর্তা, তারা রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের খবরকে প্রতিদিন বানোয়াট বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন। আর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যেসব কথা বলছে, সেগুলোকেই সত্য বলে প্রচার করছেন। আর এই সেনাবাহিনীই কিন্তু মিয়ানমারের আরও অনেক জাতিগত সংখ্যালঘুদের গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে, নারীদের ধর্ষণ করেছে।

আন্তর্জাতিক চাপের মুওেখ আং সান সুচি কথিত নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে একটি কমিশন গঠন করেছেন। কয়েক দিনের মধ্যে এই কমিশন রিপোর্ট দেবে বলে কথা রয়েছে। কিন্তু এই কমিশনের প্রধান হচ্ছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মিয়িন্ট সোয়ে, যিনি একজন সাবেক জেনারেল। এই রিপোর্টটি ‘হোয়াইটওয়াশ’ ছাড়া আর কিছু হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

উত্তর রাখাইনে কী ঘটছে, সেই সত্য হয়তো কোন দিনই পুরোপুরি জানা যাবে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নির্যাতন: সত্য, মিথ্যা এবং আং সান সুচি

আপডেট টাইম : ০২:৪০:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আর মিয়ানমারের নেত্রী আং সান সুচিকে এক কাতারে ফেলতে চাইবেন না অনেকেই। কিন্তু রোহিঙ্গা নির্যাতনের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হাওর বার্তাকে জোনাহ ফিশার যে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন, তাতে তার মনে হয়েছে, দুজনের মধ্যে আসলে অনেক মিল। সেই অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন জোনা ফিশার তাঁর এই লেখায়:

আপনি যা ভাবছেন, তার চেয়েও আসলে অনেক বেশি মিল ডোনাল্ড ট্রাম্প আর আং সান সুচির মধ্যে।

দুজনেরই বয়স ৭০-এর বেশি। দুজনের মাথার চুল নিয়েই বেশ আলোচনা হয়। এবং দুজনেই সাংবাদিকদের প্রচন্ড অপছন্দ করেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অশান্ত সম্পর্ক খুবই আলোচিত। কিন্তু আং সান সুচির সঙ্গে গণমাধ্যমের সম্পর্ক যে অনেকটা একই রকম সেটা জানলে অবাক হবেন অনেকে।

আং সান সুচি অনেকের কাছেই পরিচিত ‘দ্য লেডি’ নামে। ১৯৯০ এর দশকে তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পান মানবাধিকার আর গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে।

সুচিকে যখন মিয়ানমারের সামরিক শাসকরা রেঙ্গুনে গৃহবন্দী করে রেখেছিল, তখন তার সঙ্গে কথা বলার জন্য, তার সাহসী প্রতিরোধের কাহিনি তুলে ধরার জন্য অনেক সাংবাদিক জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন।

তবে আং সান সুচি ক্ষমতায় যাওয়ার পর সবকিছু যেন বদলে গেছে।

মিয়ানমারের সরকারে তিনি নিজের জন্য তৈরি করেছেন এক ক্ষমতাধর পদ। প্রেসিডেন্টেরও উর্ধ্বে এই ‘স্টেট কাউন্সেলর’ বা ‘রাষ্ট্রীয় পরামর্শকের’ পদটি। বাস্তবে তিনি আসলে সবার ধরা ছোঁয়ার উপরে। তাঁকে জবাবদিহি করার কেউ নেই।

আং সান সুচি কখনোই মিয়ানমারের গণমাধ্যমে কোন সাক্ষাৎকার দেন না। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় কথা বলেন বেছে বেছে। পার্লামেন্টে এমপি-রা তাঁকে নিয়মিত প্রশ্ন করার কোন সুযোগই পান না। ১৪ মাস আগে নির্বাচনের সময়ের সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনের পর আর কোন সত্যিকারের সংবাদ সম্মেলনে তাঁকে দেখা যায়নি।

আর এর পাশাপাশি সরকারী প্রপাগান্ডা তো রয়েছেই। এই প্রপাগান্ডা মিয়ানমারে সামরিক শাসন আর সেন্সরশীপের কালো দিনগুলোকেই মনে করিয়ে দেয়।

রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে প্রশ্ন:

রোহিঙ্গা মুসলিমরা দাবি করে তারা বহু বছর ধরে রাখাইনে বাস করছেছবির কপিরাইটAFP
Image captionরোহিঙ্গা মুসলিমরা দাবি করে তারা বহু বছর ধরে রাখাইনে বাস করছে

প্রায় প্রতিদিনই মিয়ানমারের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্রে ছাপা হয় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে আক্রমণ করে লেখা নিবন্ধ। রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরার কারণেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এই হামলার লক্ষ্যবস্তু।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের সংখ্যা প্রায় দশ লাখ। দশকের পর দশক ধরে তারা মিয়ানমারে বৈষম্যের শিকার। গত সাড়ে তিন মাস ধরে রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলছে সামরিক বাহিনির নির্মম অভিযান।

সেখানে কী ঘটছে তার উত্তর নির্ভর করছে আপনি কাকে বিশ্বাস করবেন তার ওপর। কারণ কেউ যে স্বাধীনভাবে সেখানে গিয়ে প্রকৃত ঘটনা জানবেন, তার সব পথ বন্ধ রেখেছে মিয়ানমার সরকার।

অনেকে দাবি করছেন মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সেখানে জাতিগত নির্মূল অভিযান চালাচ্ছে। কারও দাবি সেখানে গণহত্যা চলছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং আং সান সুচি অবশ্য এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করছেন। তারা বলছেন, সেখানে পুলিশের ওপর রোহিঙ্গা জঙ্গীরা যে হামলা চালিয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান চলছে।

সাক্ষাৎকারের বিফল চেষ্টা

গত সপ্তাহে বিবিসি-কে যখন রাখাইন রাজ্যের সহিংসতা কবলিত এলাকায় যাওয়ার অনুমতি দেয়া হলো, সেটা ছিল বেশ অবাক করা ব্যাপার। আমরা তাড়াতাড়ি বিমানে উড়ে গেলাম রাখাইনের রাজধানী সিটুয়ে-তে। সেখান থেকে আমরা একটা ফেরিতে চড়ে মায়ু নদী ধরে বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে রওনা হলাম।

চার ঘন্টা পর আমরা বুথিডং এ পৌঁছালাম। সেখান থেকে সংঘাত কবলিত এলাকাগুলি আর মাত্র ৪৫ মিনিটের পথ।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য: সাংবাদিকদের যেখানে প্রবেশ নিষেধ

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ সেখানেও হাজির। আমাদের পথ রোধ করে দাঁড়ালো পুলিশ আর নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের একটি দল। আমাদেরকে স্থানীয় টাউনশীপের’ অফিসে নিয়ে যেতে চায় তারা।

টাউনশীপ অফিসে নিয়ে আমাদের জানানো হলো, রাখাইন রাজ্যে আমাদের সফর বাতিল করা হয়েছে। আমরা যে রাখাইনে যাচ্ছি সেই খবর রাজধানীতে আং সান সুচির সরকারের কানে পৌঁছে গেছে। সেখান থেকে নির্দেশ এসেছে আমাদের থামানোর।

আমরা আবার নৌকায় উঠে ফিরে আসার আগে স্থানীয় এক কর্মকর্তা আমাদের ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে একটা সাক্ষাৎকার দিতে রাজী হলেন।

এটাকেও একটা ছোটখাট বিজয় বলা যেতে পারে। আং সান সুচি আর তাঁর মুখপাত্র এ পর্যন্ত রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলতে ক্রমাগত আমাদের সব আবেদন খারিজ করেছে।

এই কর্মকর্তা থান টুট কিয়া একজন ডাক্তার। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। গত দশ বছর ধরে তিনি উত্তর রাখাইনে আছেন। তার সঙ্গে কথা বলে খুব দ্রুত পরিস্কার হয়ে গেল যে, আরও অনেক বার্মিজ নাগরিকের মতো তিনিও বিশ্বাস করেন রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের খবরকে তিনি বানানো গল্প বলে মনে করেন।

“আমাদের গোপন করার কিছু নেই। আমাদের জাতীয় সরকার এখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে সব সত্য ঘটনা জানাচ্ছে। বার্মিজ বৌদ্ধরা ধর্ষণের শিক্ষা দেয় না। এসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে।”

সত্য জানার চ্যালেঞ্জ

তবে আং সান সুচির সমস্যা হচ্ছে, এসবকে কেবল গুজব বলে উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। সাংবাদিক এবং ত্রাণ কর্মীরা যেহেতু রাখাইনে যেতে পারছেন না, তাই রোহিঙ্গারা নিজেরাই সেখানে অত্যাচার-নির্যাতনের ছবি তুলে ধরছেন। তারা স্মার্টফোনে তাদের কাহিনী বর্ণনা করে বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করে পাঠিয়ে দিচ্ছেন বিদেশে।

আমি গত কয়েক মাসে ভয়াবহ সব ভিডিও দেখেছি। অনেক নারী, যাদের মুখে নির্যাতনের ক্ষতচিহ্ণ, তারা বলেছেন, তাদের ধর্ষন করা হয়েছে। রাস্তায় পড়ে আছে শিশুদের মৃতদেহ। ছাইয়ের গাদার ওপর পড়ে আছে পুড়ে যাওয়া মাথার খুলি।

এসব ঘটনা যাচাই করা হয়তো কষ্টকর। কিন্তু অসম্ভব নয়। অনেক সময় একই এলাকা থেকেই একাধিক সূত্র পাওয়া যায়। অনেক সংগঠনের গোপন নেটওয়ার্ক আছে মাঠ পর্যায়ে। তবে মিয়ানমারের সরকারী গণমাধ্যম প্রতিটি ঘটনায় তাদের নিজেদের কাহিনি প্রচার করেছে।

মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের তাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে

প্রকৃত সংখ্যা যাচাই করা কঠিন। কারণ লোকজন সেখান থেকে পালাচ্ছে এবং পুরো এলাকার একটা সার্বিক চিত্র তাদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে না। কিন্তু যেসব ভিডিও আমাদের কাছে এসেছে সেগুলোকে সেখানকার ঘটনাবলীর খন্ডচিত্র বলা যেতে পারে। এবং কোন সন্দেহ নেই যে সেখানে ভয়ংকর কিছু ঘটছে।

এসব ঘটনার ব্যাপারে আং সান সুচি এবং তাঁর কর্মকর্তরা যে ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন তা কিন্তু হুবহু ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মিলে যায়। গণমাধ্যম কি বলছে

রোহিঙ্গাদের ওপর যে নির্যাতন নিপীড়নের ব্যাপক তথ্য-প্রমাণ রয়েছে সেটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য তারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের লোকজনের কৌশলই বেছে নিয়েছে। গণমাধ্যমে একবার-দুবার হয়তো ভুল বা মিথ্যে তথ্য প্রচার হয়েছে, সেগুলোকেই তারা ফলাও করে দেখাচ্ছে।

যেমন, মেইল অনলাইন একবার একটি রোহিঙ্গা শিশুর নির্যাতনের খবর দিয়েছিল, কিন্তু পরে দেখা গেল সেই শিশুটি আসলে ক্যাম্বোডিয়ান। যদিও এই ভুলের পরপরই খবরটি তুলে নেয়া হয়। মিয়ানমারের সরকারী পত্রিকাগুলোর সামনের পাতায় এটিকে ফলাও করে প্রচার করা হয় যে বিদেশি গণমাধ্যমে ভুল খবর দেয়া হচ্ছে।

একই ভাবে সুচির এক বক্তৃতার অনুবাদ করতে গিয়ে বলা হয়েছিল, এতে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে তিনি হাসাহাসি করছেন। এ নিয়ে মিয়ানমারে তীব্র হল্লা শুরু হয় এবং এব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেয়া হয়।

আং সান সুচির কর্মকর্তার মাঝে মধ্যে এমন ধরণের প্রচারণা চালান যা আসলেই উদ্ভট।

Facebook post entitled: 'Fabricated News: Video clip described tortures in Rakhine State. Genuine Incident: Plot in Hollywood's Rambo movie'ছবির কপিরাইটSCOIC/FACEBOOK
Image captionরোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের খবরকে ‘ভুয়া প্রচারণা’ বলে বর্ণনা করছে মিয়ানমার সরকার

জানুয়ারীর শুরুতে আং সান সুচির দফতর থেকে হলিউডের তারকা সিলভেস্টার স্ট্যালোনের একটি ছবি পোস্ট করা হয়, যাতে র‍্যাম্বোর বেশে তাকে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে লড়াই করে যেতে দেখা যাচ্ছে। রোহিঙ্গারা যে মিথ্যে প্রচারণা চালাচ্ছে এটিকে তার উদাহারণ হিসেবে দেখানো হয়।

এরকম একটা ছবিকে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ছবি হিসেবে ব্যবহারের মতো নির্বুদ্ধিতা কে করেছে, তা স্পষ্ট নয়। হয়তো কোন একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী এই কাজটা করেছে। কিন্তু একজনের এই ভুলটিকে উদাহারণ হিসেবে সামনে এনে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ব্যাপক তথ্য-প্রমাণকে নাকচ করে দেয়া হচ্ছে।

সিএনএন বা গার্ডিয়ানে যখন বাংলাদেশের পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে, তখন সেটিকে খুবই স্থূল কায়দায় নাকচ করা হচ্ছে। এজন্যে মিয়ানমার সরকারের একটা ধরাবাঁধা ফর্মূলা আছে।

রোহিঙ্গাদের যেসব গ্রাম সম্পর্কে এই প্রতিবেদন বেরুচ্ছে সেখানে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের পাঠানো হচ্ছে। পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের প্রতিবেশী আব পরিবারের সদস্যদের ধরে বেঁধে এনে তাদের একটি বিবৃতিতে সই করতে বাধ্য করা হচ্ছে যেখানে তারা প্রচারিত প্রতিবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

প্রচারণা কি বন্ধ করা সম্ভব

অনেক দেশ, এদের মধ্যে ব্রিটেনও রয়েছে, যারা আং সান সুচিকে এ অবস্থাতেও সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমার যেভাবে একনায়কত্ব থেকে বেরিয়ে আসছে, সেটাকে তারা ইতিবাচক পরিবর্তন হিসেবে দেখছে।

কারণ আং সান সুচি নতুন ক্ষমতায় এসেছেন এবং সেনাবাহিনী এবং পুলিশ তিনি নিয়ন্ত্রণ করেন না।

যদি তিনি রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযান বন্ধ করার চেষ্টাও করতেন, তা পারতেন না। অনেক ত্রুটি বিচ্যূতি সত্ত্বেও তাঁকেই মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় আশা-ভরসা বলে মনে করেন তারা।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে যে উস্কানিমূলক প্রচারণা চলছে, সেটা অন্তত সুচি বন্ধ করতে পারেন।

সুচি সেসব মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করেন, তার অধীনে কাজ করেন যেসব কর্মকর্তা, তারা রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের খবরকে প্রতিদিন বানোয়াট বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন। আর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যেসব কথা বলছে, সেগুলোকেই সত্য বলে প্রচার করছেন। আর এই সেনাবাহিনীই কিন্তু মিয়ানমারের আরও অনেক জাতিগত সংখ্যালঘুদের গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে, নারীদের ধর্ষণ করেছে।

আন্তর্জাতিক চাপের মুওেখ আং সান সুচি কথিত নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে একটি কমিশন গঠন করেছেন। কয়েক দিনের মধ্যে এই কমিশন রিপোর্ট দেবে বলে কথা রয়েছে। কিন্তু এই কমিশনের প্রধান হচ্ছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মিয়িন্ট সোয়ে, যিনি একজন সাবেক জেনারেল। এই রিপোর্টটি ‘হোয়াইটওয়াশ’ ছাড়া আর কিছু হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

উত্তর রাখাইনে কী ঘটছে, সেই সত্য হয়তো কোন দিনই পুরোপুরি জানা যাবে না।