হাওর যেন বিশাল জলরাশিতে ভাসমান গ্রাম। সেই জলরাশিতে অসীম আকাশের স্নিগ্ধ প্রতিচ্ছবি। জীববৈচিত্র্য আর অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই হাওর।
আর সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় বিস্তীর্ণ এই জলরাজি হয়ে ওঠে অপার্থিব সৌন্দর্যের আধার।
হাওরে সূর্যোদয়ের সময় মনে হয়, আকাশের বুক থেকে যেন আগুনের রশ্মি বের হয়ে জলধারায় মিলেমিশে একাকার হয়েছে। হাওরের প্রবহমান জলে সেই ছায়া পড়ে ফুটে ওঠে আনিন্দ সুন্দর দৃশ্যপট।
আর হাওরে সূর্যাস্তের সময় যেন মেঘগুলোও লাল হয়ে যায়। তখন আকাশের দিকে তাকালে মনে হবে, মেঘের গায়ে অগ্নিশিখা।
যেন পানির ভেতরে সূর্য উঠে পানিতেই অস্ত যায়।
বর্ষায় থৈ থৈ পানিতে সেই আলো পড়ে আগুনের লাভার মতো দেখায়। এ দৃশ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পিপাসুদের মনে দোলা দিয়ে যাবে।
হাওর এমনিতেই রূপে অপরূপ। হাওরের সূর্যোদয় ও সূর্যা¯Í কোনো সমুদ্র সৈকতের সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের চেয়ে কম মনোমুগ্ধকর নয়।
কিশোরগঞ্জ জেলার হাওর (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম-নিকলী) উপজেলাগুলোর যে কোনো স্থান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অসাধারণ এ রূপ অবলোকন করা যায়।
সম্প্রতি হাওরে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ জলরাশি, চারদিকে পানি আর পানি। বিশাল জলরাশির মাঝে দ্বীপের মতো ‘ভাসমান’ ছোট ছোট গ্রাম। এমন যে কোনো গ্রাম থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় হাওরের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগে অধ্যয়নরত ছাত্র ও অষ্টগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা বিধান দাস এবং সিলেটের শাহজালাল (র.) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য বিবিএ শেষ করা হাওরের বাসিন্দা সৈকত দাস শুভসহ কয়েকজন হাওরবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সৌন্দর্য পিপাসুরা। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার জন্য চলে যায় কুয়াকাটা বা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। কিন্তু কিশোরগঞ্জের হাওরে কেউ সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখতে আসে না।
সঠিকভাবে প্রচার-প্রচারণার অভাবে সেভাবে কেউ হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসে না বলে মনে করেন তারা।
অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মহসীন উদ্দিন বলেন, হাওর উপজেলা অষ্টগ্রাম-দেওঘর রাস্তার ওপর থেকে সূর্যোদয় দেখলে মনে হয়, পানির ভেতর থেকে সূর্য উঠছে। আর সূর্যাস্ত দেখলে মনে হবে যেন পানির ভেতরে সূর্য ডুবে যাচ্ছে। এ দৃশ্য বিনোদন পিপাসুদের হৃদয়ে নাড়া দেবে।
তিনি আরো বলেন, সরকারি উদ্যোগে পর্যটকদের জন্য জায়গা করে দিতে পারলে অবশ্যই হাওর হবে পর্যটন কেন্দ্র।